Advertisement
Back to
Election Commission of India

‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আগ্রাসন হচ্ছে’! ভোটের হার প্রকাশ নিয়ে মন্তব্যের জন্য খড়্গকে সতর্ক করল কমিশন

ভোটপর্ব শেষের বেশ কয়েক দিন পরে ভোটের হার বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে-সহ বিরোধী জোটের নেতানেত্রীরা। কমিশন এ সংক্রান্ত অভিযোগ খারিজ করেছে।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২৪ ১৮:১১
Share: Save:

নির্বাচন শেষের বেশ কয়েক দিন পরে হঠাৎ ভোটের হার বৃদ্ধি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনের নিশানা হলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। কমিশনের তরফে শুক্রবার খড়্গেকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘কংগ্রেস সভাপতির বিবৃতি নির্বাচন সংক্রান্ত ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার উপর আগ্রাসন।’’

ভোটপর্ব শেষের বেশ কয়েক দিন পরে প্রথম দু’ফার ভোটের হার বৃদ্ধি নিয়ে দেশ জুড়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যেই। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিভিন্ন বিরোধী দল কমিশনের এই কাজ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। প্রশ্ন তুলেছে নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে খড়্গে-সহ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সহযোগী দলগুলির নেতারা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। কমিশনে চিঠি লিখে হঠাৎ ভোটের হার বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তারই জেরে কমিশনের এই পাল্টা চিঠি।

২১ পাতার চিঠিতে ১৯ দফা যুক্তি এবং আনুষঙ্গিক ‘তথ্য-পরিসংখ্যান’ দিয়ে খড়্গের অভিযোগ খণ্ডন করার চেষ্টা করেছে কমিশন। কংগ্রেস সভাপতি সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করা খোলা চিঠিতে ‘নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা এখন সবচেয়ে কম’ বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তার সমালোচনাও করেছে।

কিন্তু চূড়ান্ত হার প্রকাশ করতে কেন ভোটগ্রহণের পর ১১ দিন সময় লেগে গেল, তার কোনও বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেনি বলে বিরোধীদের দাবি। যদিও কমিশনের দাবি, ‘‘বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতিতে ভোটের হারের শতাংশের গরমিল করার কোনও সুযোগ নেই।’’ সেই সঙ্গে স্বীকৃত জাতীয় দল কংগ্রেসের সভাপতি হিসাবে খড়্গেকে ‘আরও দায়িত্বশীল বিবৃতি’ দেওয়ার কথাও বলেছে কমিশন।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল প্রথম দফা এবং ২৬ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় লোকসভার ভোটগ্রহণ পর্ব ছিল। প্রথম এবং দ্বিতীয় দফায় সারা দেশে কত শতাংশ ভোট পড়েছে, গত ৩০ এপ্রিল তার চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। প্রথম দফার ভোট হয়ে যাওয়ার প্রায় ১১ দিন পর এই চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছিল। কমিশন সূত্রে ২০ তারিখ জানা গিয়েছিল, প্রাথমিক হিসাবে প্রথম দফায় দেশে ভোট পড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ।

দ্বিতীয় দফার ভোটের পর কমিশনের তরফে জানানো হয়, দেশে গড়ে ভোট পড়েছে ৬০.৯৬ শতাংশ। কিন্তু ৩০ এপ্রিল কমিশনের তরফে নতুন বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, প্রথম দফায় দেশে ৬৬.১৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দফায় ৬৬.৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে। অর্থাৎ, আগে যা জানা গিয়েছিল, তার চেয়ে প্রায় ছয় শতাংশ বেড়ে গিয়েছে কমিশনের হিসাব। এই ভোট বৃদ্ধি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বিষয়টি নিয়ে কমিশনকে চিঠিও পাঠিয়েছেন। তৃতীয় পর্বে দেশের ৯৩টি লোকসভা কেন্দ্রে গড়ে ৬৪.৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে কমিশন জানিয়েছে। চূড়ান্ত পরিসংখ্যানে কোথায় যাবে তা তিন দিন পরেও স্পষ্ট নয়।

গত বছর ডিসেম্বরে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের পদ্ধতি এবং কর্তব্যের শর্তাবলি সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় পাল্টে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সংসদে বিল পাশ করিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার পর থেকেই বারে বারে কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম-সহ গোটা বিরোধী শিবির।

‘চিফ ইলেকশন কমিশনার অ্যান্ড আদার ইলেকশন কমিশনারস’ (অ্যাপয়েন্টমেন্ট, কন্ডিশনস অফ সার্ভিসেস অ্যান্ড টার্মস অফ অফিস) বিল ২০২৩’ নামের ওই বিতর্কিত বিলে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটি থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে বলা হয়েছে, দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী দ্বারা মনোনীত এক জন মন্ত্রী। পক্ষপাতদুষ্ট এবং বশংবদ আমলাদের নির্বাচন কমিশনে ‘অনুপ্রবেশের’ সুযোগ করে দিতেই বিজেপি সরকারের এই পদক্ষেপ বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy