(বাঁ দিকে) জলপাইগুড়িতে ঝড়ে বিপর্যস্ত মানুষজনের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । দিলীপ ঘোষ (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ অংশে ঝড়ের প্রভাব নিয়ে ‘হালকা চালে’ মন্তব্য করতে গিয়ে বিতর্ক জড়িয়েছেন। কিন্তু দিলীপ ঘোষ আছেন দিলীপ ঘোষেই। ভোটের মুখে আলগা মন্তব্যের জন্য নির্বাচন কমিশনের শো-কজ় বা তাঁর দলের হুইপ, কোনও কিছুই ‘প্রভাবিত’ করে না বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার প্রার্থীকে। ও সবের ধার ধারেন না তিনি। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় ঝড় নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে নিশানা করে দিলীপের মন্তব্য, ‘‘টিএমসির পোয়াবারো। যা মাল আসবে ঝেড়ে ফাঁক করে দেবে।’’ স্বাভাবিক ভাবেই, বিজেপি প্রার্থীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা আক্রমণ করেছে তৃণমূল।
মঙ্গলবার সকালে বর্ধমানের টাউন স্কুল মাঠে প্রার্তভ্রমণে যান দিলীপ। তার পর তিনি বাদামতলার একটি চায়ের দোকানে চা চক্রে মিলিত হন। তৃণমূলের প্রার্থী প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজ়াদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সেখানেও ‘স্ট্রেট ব্যাট’-এ। বলেন, ‘‘বন্যা হোক। ঝড় হোক— ওরা এটাই চায়। তাতে কামাই হবে।’’ নাম-না করেও মুখ্যমন্ত্রীর তড়িঘড়ি ঝড়বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়াকে কটাক্ষ করে দিলীপ বলেন, ‘‘সরকারে যাঁরা আছেন, দায়িত্ব তাঁদের। ওখানকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মনোবল বাড়ানোর এবং ক্ষতিপূরণ দিয়ে নিজের জীবনে ফিরিয়ে আনা। আর আমরা তো বিরোধী দল। আমরা লোকের সঙ্গে আছি।’’ দিলীপ তার পর সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথায় কথায় এত টাকার ফিরিস্তি শোনান। কিন্তু, মানুষের কাছে (টাকা) পৌঁছয় না। আয়লা, আমপানের (ঘূর্ণিঝড়)-র পর (ত্রাণের) টাকা এল, অথচ গেল তৃণমূলের নেতা এবং আত্মীয়দের পকেটে। যাঁর বাড়ি ভেঙেছে, তিনি কিছু পেলেন না। এ বার যেন তা না হয়।’’
এর আগে উত্তরবঙ্গে টর্নেডো বিপর্যয়কে রাজনীতির মোড়ক দিয়ে দিলীপ দাবি করেছেন, উত্তরবঙ্গে বিজেপির ঝড়েই সব লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ঝড় তো উত্তরবঙ্গে শুরু হচ্ছে। ভোট ওই দিক থেকেই শুরু হচ্ছে। বিজেপির ঝড় শুরু হচ্ছে। তাতেই লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে।’’ এ নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ এবং সমালোচনার মধ্যে আবারও ঝড় নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তির্যক মন্তব্য করলেন দিলীপ। এই প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘উনি অমানবিক। তাই ঝড়-বৃষ্টি নিয়ে এ রকম মন্তব্য করছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যিনি মানবিক, তিনি কাজ করছেন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দিলীপ ঘোষের শেখা উচিত।’’
অন্য দিকে, তাঁর পাশে থাকা বেশ কয়েক জন মানুষকে দেখিয়ে দিলীপ দাবি করেছেন, তাঁরা আগে অন্য রাজনৈতিক দলে ছিলেন। কিন্তু তাঁর ‘লড়াই’ দেখে বিজেপিতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে তো আমিই লড়াই করেছি। পশ্চিমবঙ্গে কে লড়াই করেছে? সিপিএম, কংগ্রেস ছিল। এখন ‘সেটিং’ বলছে। চিরদিন ওরা ‘সেটিং’ করেছে বলে দোকান উঠে গিয়েছে।’’ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জনকে দেখিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘যাঁদের দেখছেন, তাঁরা বিজেপিতে ছিলেন না। এঁরা টিএমসিকে হারাতে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে এসেছে। আজ আমাদের লক্ষ লক্ষ কর্মী দেখছেন। এরা কেউ সিপিএম করেছেন, কংগ্রেস করেছেন। মার খেয়ে, দুর্নীতি দেখে বিজেপির ঝান্ডার তলায় এসেছেন পরিবর্তনের জন্য। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে আমরা পরিবর্তন করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy