বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের দফতরে শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটগণনার আগে বিজেপির এজেন্টদের গ্রেফতার করা হতে পারে। তার ছক কষা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর আরও অভিযোগ, ষষ্ঠ দফায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে বিজেপি। তাঁদের অন্তত ৫০ জন কর্মীকে পরোয়ানা বা বৈধ নোটিস ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই পরিস্থিতি যাতে শেষ দফাতেও তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হন বৃহস্পতিবার। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাবের সঙ্গে কথা বলেছেন শুভেন্দুরা। জানিয়েছেন একগুচ্ছ অভিযোগের কথা।
সিইও-র সঙ্গে কথা বলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘ষষ্ঠ দফায় কোনও পরোয়ানা ছাড়া বিজেপির কর্মীদের আটক এবং গ্রেফতার করা হয়েছে। কাউকে কাউকে ভুয়ো মামলাতেও ফাঁসানো হয়েছে। নন্দীগ্রামের ধনঞ্জয় মণ্ডলের মতো একাধিক কর্মীর নাম তো এফআইআরেও নেই। আমাদের অনেক পোলিং এজেন্টকে আটক করে রাখা হয়েছিল। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর তাঁদের ছাড়া হয়েছে। শেষ দফায় নির্বাচন কমিশনকে এই বিষয়টি দেখতে হবে।’’
কয়েকটি কেন্দ্রে রিটার্নিং অফিসারদের (আরও) বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু। তাঁর অভিযোগ, ওই আধিকারিকেরা তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন। নদিয়া, বর্ধমানের মতো কয়েকটি কেন্দ্রের নামও উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর দাবি, আগামী ৪ জুন ভোটগণনার আগে বিজেপি প্রার্থীদের কাউন্টিং এজেন্টদের গ্রেফতার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই কারণে আগেভাগে তাঁদের নামের তালিকা চাইছেন একাধিক রিটার্নিং অফিসার। শুভেন্দু বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, গণনার ৭২ ঘণ্টা আগে কাউন্টিং এজেন্টের নাম দিতে হয়। কিন্তু কিছু রিটার্নিং অফিসার ৩০তারিখের মধ্যে এজেন্টদের নামের তালিকা চাইছেন। এত তাড়াহুড়ো কিসের? এজেন্টদের তালিকা নিয়ে আসলে ওরা গ্রেফতার করতে চায়। কাউকে কাউকে টাকা দিয়ে কিনেও নিতে পারে। আমরা বিষয়টি কমিশনে জানিয়েছি। সিইও আমাদের বলেছেন, ১ তারিখের আগে এজেন্টের নামের তালিকা কাউকে দেওয়ার দরকার নেই। গোপনীয়তা বজায় রাখার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, কোনও এজেন্টের নাম বাইরে আসবে না।’’
শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘‘২০২১ সালের ভোটে আইপ্যাকের লোকজন রিটার্নিং অফিসারের টেবিলে বসে ভুয়ো গণনা করছিলেন। করোনার বিধিনিষেধকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা লোকের চোখে ধুলো দিয়েছিলেন। অন্তত ৪০ থেকে ৫০টি আসন তৃণমূলকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ বার তা হবে না। সকলের কাছে পরিচয়পত্র থাকবে। কেউ তা দেখতে চাইলে পরিচয়পত্র দেখাতে হবে রিটার্নিং অফিসারদের।’’
এ বারের ভোটে ওয়েবকাস্টিংয়ের বন্দোবস্ত করেছে কমিশন। বাংলার সব বুথেই ক্যামেরা বসানো রয়েছে। এই পদ্ধতিতে ভোট চলাকালীন কোন বুথে কী ঘটছে, কলকাতার দফতরে বসেই কমিশনের তা দেখতে পাওয়ার কথা। কিন্তু এই পদ্ধতিতেও প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দুরা। তাঁদের অভিযোগ, বেশ কিছু বুথে ষষ্ঠ দফায় ক্যামেরা বন্ধ ছিল। ফলে অবাধে ছাপ্পা দেওয়া হয়েছে সেখানে। শুভেন্দু বলেন, ‘‘ষষ্ঠ দফায় অন্তত ৪৭৪টি বুথে ক্যামেরা বন্ধ ছিল। আমরা কমিশনকে চিঠি দেওয়ার পর তারা হস্তক্ষেপ করে। কিন্তু তার পরেও শেষ পর্যন্ত ১৫০ বুথে সন্ধ্যা ৬টা অবধি ক্যামেরা ছিল না। এই ধরনের বুথের সংখ্যা বেশি ছিল ঘাটালে। আমাদের দাবি, ক্যামেরা বন্ধ থাকলে ভোটও বন্ধ রাখতে হবে।’’ সুন্দরবনের দিকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিছু বুথে ক্যামেরা থাকবে না বলে শুভেন্দুদের জানিয়েছেন সিইও। সেই সব বুথের তালিকা চেয়েছে বিজেপির প্রতিনিধি দল। শুভেন্দু জানিয়েছেন, ৪০টির মতো বুথে ক্যামেরা রাখা যাবে না। সেই বুথে বিজেপি বিশেষ নজর রাখবে ভোটের দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy