—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বেকারত্বের পাশাপাশি সেনায় স্বল্প মেয়াদের জন্য নিয়োগের ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্প লোকসভা ভোটে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে বিজেপিকে বিপাকে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্প নিয়ে তরুণ ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে বুঝতে পেরে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসও নিয়মিত সেই ক্ষোভ উস্কে দিচ্ছে। বাধ্য হয়ে তাই এখন অমিত শাহ থেকে রাজনাথ সিংহকে অগ্নিবীর প্রকল্পের হয়ে সওয়াল করতে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, বিজেপির এই সাফাই থেকেই বোঝা যাচ্ছে অগ্নিবীর নিয়ে প্রশ্ন বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলেছে।
রাহুল গান্ধী আগেই ঘোষণা করেছেন, ইন্ডিয়া জোট সরকারে এলে অগ্নিবীর প্রকল্প আবর্জনার ঝুড়িতে ফেলে দেওয়া হবে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে অভিযোগ তুলেছেন, কম সংখ্যায়, অল্প প্রশিক্ষণ দিয়ে, স্বল্প মেয়াদের জন্য জওয়ান নিয়োগ করে মোদী সরকার দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করছে। পাল্টা জবাবে অমিত শাহ বলেছেন, ‘রাহুল বাবা’ অপপ্রচার করছেন। কিন্তু অগ্নিবীর নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে বুঝতে পেরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ইতিমধ্যেই বলেছেন, প্রয়োজনে অগ্নিবীর প্রকল্পে দরকার মতো রদবদল করা হবে।
২০২২-এর জুন মাসে মোদী সরকার অগ্নিবীর নিয়োগ প্রকল্প চালু করেছিল। সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছরের মধ্যে বয়সিদের চার বছরের জন্য সেনায় নিয়োগ করে এই প্রকল্প। এর মধ্যে ২৫ শতাংশকে আরও ১৫ বছরের জন্য সেনাবাহিনীতে রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। মোদী সরকারের দাবি ছিল, সেনায় চার বছর চাকরি করার পরে তরুণরা রাজ্যের পুলিশ বাহিনী বা অন্য কোথাও কাজ করতে পারেন।
লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে বিরোধী নেতারা টের পেয়েছেন, এ নিয়ে গোটা দেশেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিশেষত রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মতো রাজ্যে, যেখান থেকে বহু শিক্ষিত তরুণ সেনায় চাকরির প্রস্তুতি নেন। কিন্তু অগ্নিবীর প্রকল্পের পরে তাঁরা সেনায় চাকরির প্রস্তুতি নেওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। সেনায় থাকাকালীন চার বছরের মধ্যে মৃত্যু হলে স্থায়ী চাকরির মতো পারিবারিক পেনশন, ক্ষতিপূরণ মিলবে না বলেও আশঙ্কা রয়েছে।
রাহুল গান্ধী এই ক্ষোভ টের পেয়েই ঘোষণা করেছেন, ইন্ডিয়া জোট সরকারে এলে আগের মতোই স্থায়ী নিয়োগ হবে। সেনা নিয়ে আবেগ উস্কে দিতে রাহুল বলছেন, মোদী সরকার দু’রকম সেনা-শহিদ তৈরি করতে চায়। এক শহিদের পরিবারের পেনশন মিলবে, আর এক শহিদের পেনশন মিলবে না। আজ কংগ্রেস সভাপতি খড়্গে অভিযোগ তুলেছেন, অগ্নিবীর প্রকল্পের ধাক্কায় সেনায় প্রতি বছর নিয়োগ ৭৫ হাজার থেকে কমে ৪৬ হাজার হয়ে গিয়েছে। সেই জন্যই প্রতিরক্ষামন্ত্রী বারবার বলছেন, অগ্নিবীর প্রকল্পে রদবদল করা হবে। কংগ্রেসের অভিযোগ, মাত্র ছয় মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে অগ্নিবীরদের সীমান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। চিনের আগ্রাসী অবস্থানের মোকাবিলায় পূর্ব লাদাখে বিপুল সেনা মোতায়েন করা প্রয়োজন। কিন্তু সেনায় কম নিয়োগ হলে ভবিষ্যতে নিরাপত্তায় ফাঁক তৈরি হতে পারে।
কংগ্রেসের এই আক্রমণের মোকাবিলায় রাজনাথের জবাব, প্রয়োজনে অগ্গিবীর প্রকল্পে রদবদল করা হবে। সেনায় তরুণ রক্ত জোগাতেই অগ্নিবীর প্রকল্প চালু হয়েছিল। তা ছাড়া সমাজে এমন একটি শ্রেণি দরকার, যাদের প্রয়োজনে সেনার কাজে নিয়োগ করা যাবে। অমিত শাহের জবাব, অগ্নিবীর প্রকল্পে চার বছর পরে চাকরিহারাদের কোনও ভবিষ্যৎ থাকবে নাবলে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। বাস্তব হল, ২৫ শতাংশ সেনাতেই নিয়োগ হবে। বাকিদের জন্য বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে পুলিশ বাহিনীতে ১০ থেকে ২০ শতাংশ পদ সংরক্ষিত থাকছে। আধাসেনাতেও ১০ শতাংশ পদ সংরক্ষিত থাকবে। বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থাগুলিতেও এঁরাপ্রাধান্য পাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy