অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
কলকাতায় নরেন্দ্র মোদীর রোড-শোর দিন তাঁকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ডায়মন্ড হারবার লোকসভার বিষ্ণুপুরে প্রচারসভা ছিল অভিষেকের। সেই সভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ শানান অভিষেক। পাশাপাশি তৃণমূলের সেনাপতির দাবি, ৪ জুনের পর ‘ইন্ডিয়া’ ক্ষমতায় আসবে। তখন দেশের সব মহিলা ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ পাবেন।
সপ্তম দফায় ভোট ডায়মন্ড হারবারে। তার আগে বিগত দফা নিয়ে নিজের মত ব্যক্ত করলেন অভিষেক। বিজেপিকে তুমুল আক্রমণ করে ডায়মন্ড হারবারের বিদায়ী সাংসদ বলেন, ‘‘আমি গণতান্ত্রিক ভাবে জবাব দিতে জানি। ছ’দফায় ভোট বাংলায় হয়ে গিয়েছে। এদের ঘাড়, মাথা, মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে এসেছি। ১ তারিখ শেষ পেরেকটা ডায়মন্ডের মাটিতে আপনারা পুঁতবেন।’’ মঙ্গলবার অভিষেক সভা করেন বিষ্ণুপুরে। সেখানে স্থানীয় বিধায়ক দিলীপ মণ্ডলের দাবি উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবারে প্রতি বার আমার ব্যবধান বৃদ্ধি হয়েছে। এ বার আমি দেখতে চাই, বিষ্ণুপুর আমাকে সর্বাধিক লি়ড দিয়েছে।’’ অভিষেকই জানান, স্থানীয় বিধায়ক দিলীপ মানুষের কাছে ওই বিধানসভা আসনে তাঁকে ৭০ হাজার ‘লিড’ দেওয়ার আবেদন রেখেছেন। এর পরেই অভিষেক সরাসরি ঢুকে পড়েন বিজেপি প্রসঙ্গে।
মঙ্গলবার মোদীর রোড-শো কলকাতা উত্তরে। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে রোড-শো করে তাঁর যাওয়ার কথা সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি পর্যন্ত। বাগবাজারে সারদাদেবীর মূর্তিতেও প্রণাম করার কথা আছে মোদীর। বিষ্ণুপুরের সভা থেকে অভিষেক তা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দেন বিজেপির দিকে। এই প্রসঙ্গে অভিষেক তুলে আনেন ২০১৯ সালের মে মাসে অমিত শাহের রোড-শো চলাকালীন বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রসঙ্গ। তৃণমূলের সেনাপতি বলেন, ‘‘মোদী আজ বিবেকানন্দের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মূর্তিতে প্রণাম করবেন। কলকাতাবাসীকে অনুরোধ করব, স্বামী বিবেকানন্দের বাসভবনে স্বামীজির মূর্তিকে বুক দিয়ে আগলে রাখবেন।’’
বিগত দিনে বিজেপির একটি সমাজমাধ্যম বিজ্ঞাপন নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেখানে এক মহিলার ছবি দিয়ে তাতে নিজেদের রাজনৈতিক ভাষ্য লিখেছিল বিজেপি। তৃণমূল আপত্তি তুলেছিল সেই বিজ্ঞাপন নিয়ে। রাজ্যের শাসকদলের দাবি ছিল, বিজ্ঞাপনে যে মহিলাকে চিত্রিত করা হয়েছে, তা সারদাদেবীর আদলে আঁকা। চাপের মুখে সেই বিজ্ঞাপন নিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হয়েছিল বঙ্গ বিজেপির নেতাদের। সরিয়েও নেওয়া হয়েছিল সেই বিজ্ঞাপন। কলকাতায় মোদীর রোড-শোয়ের দিন সেই প্রসঙ্গই তুলে আনলেন অভিষেক। গলায় বিস্ময় ঢেলে তিনি বলেন, ‘‘আজ (মঙ্গলবার) সারদা মায়েরও বাড়িতে যাবেন মোদী। যে বিজেপির লোকেরা সারদা মাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছে, ভোটের সময় সেই সারদা মায়েরই শরণাপন্ন হতে হচ্ছে!’’ প্রসঙ্গত, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারেও নেমে পড়েছে তৃণমূলের আইটি সেল। এই আবহে আবার নতুন করে ভাইরাল হচ্ছে বিজেপির সেই বিতর্কিত বিজ্ঞাপন।
অভিষেকের দাবি, ৪ জুনই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেষ দিন মোদীর। তার পর ‘ইন্ডিয়া’ ক্ষমতায় আসছে। দলীয় সঙ্কল্পপত্রের কথা মনে করিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘বাংলায় যেমন মা, বোনেরা লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছেন। তেমনই, ৪ জুনের পর ইন্ডিয়ার সরকার গোটা ভারতের মা, বোনেদের জন্য লক্ষ্মীর ভান্ডার চালু করবে। দেশের ৫৫ কোটি মহিলাকে লক্ষ্মীর ভান্ডার দেব।’’ অভিষেকের দাবি, ইন্ডিয়া ক্ষমতায় এলেই তাঁদের প্রথম কাজ হবে, ‘রাজনৈতিক স্বার্থে’ মোদী সরকার বাংলার মানুষের হকের যে টাকা আটকে রেখেছে, সেই টাকা মানুষের হাতে তুলে দেওয়া। অভিষেক বলেন, ‘‘৪ তারিখ কেন্দ্রে পরিবর্তন হচ্ছেই। কারও ক্ষমতা নেই আটকানোর। আমাদের প্রথম প্রায়োরিটি, ইন্ডিয়া জোটের সরকার টাকা ছাড়বে। সেই টাকা আমরা মানুষের হাতে তুলে দেব।’’
ডায়মন্ড হারবারে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থীকেও কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘একটা প্রার্থী খুঁজতে এক মাস সময় লাগে! আমাকে সারা দিন গালিগালাজ করেন সিপিএম, বিজেপির নেতারা। আমি বুঝতে পারি না, এতই যদি রাগ তা হলে আমার বিরুদ্ধে কেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব দাঁড়ালেন না? আপনারা খবরের কাগজে যেমন বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন, তেমন প্রার্থী চেয়েও বিজ্ঞাপন দিলে পারতেন। আমি নিশ্চিত, ভাল প্রার্থী পেতেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy