পুরবোর্ড দখলের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হলে তৃণমূলের চাই ভিন দলের অন্তত সাত জন কাউন্সিলরের সমর্থন। তবুও শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র ও চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করল তৃণমূল। শনিবার দুপুরে তৃণমূলের তরফে দুই কাউন্সিলর নান্টু পাল ও রঞ্জন সরকার যথাক্রমে মেয়র ও চেয়ারম্যান পদের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। সোমবার মেয়র ও চেয়ারম্যান পদের জন্য ভোটাভুটি হবে। ৪৭ আসনের পুরসভায় মাত্র ১৭টি আসন পেয়ে তৃণমূল বোর্ড গড়ার স্বপ্ন দেখছে কী ভাবে সেই প্রসঙ্গে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’র চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে নানা মহলে। তৃণমূল নেতা নান্টুবাবুর দাবি, ‘‘গোপন ব্যালটে ভোট হবে। ভোটাভুটির পরেই সব কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’
তবে বাম শিবির কিন্তু দাবি করেছে, তারা যে ২৪ জন মিলে (এক জন নির্দল কাউন্সিলর অরবিন্দ ঘোষ বামেদের সমর্থন করেছেন) বোর্ড গড়তে চলেছে তাঁরা সকলে এককাট্টা রয়েছেন। তৃণমূলের তরফে মেয়র পদের মনোনয়ন দাখিলের পরে সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার ও মেয়র পদের দাবিদার অশোক ভট্টাচার্য হিলকার্ট রোডের দলীয় অফিসে বৈঠকে বসেন। সেখানে কাউন্সিলরদের কয়েক জন ছিলেন। ওই বৈঠকের পরে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকবাবু বলেন, ‘‘আমরা ২৪ জন মিলে বোর্ড গঠনের জন্য দাবি জানিয়েছি। আমরাই বোর্ড গড়ব।’’ সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার জানান, তাঁরা সামগ্রিক পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন। তিনি বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি শহরের যে মেজাজ দেখা যাচ্ছে তাতে ঘোড়া কেনাবেচার জন্য জবরদস্তি কোনও চেষ্টা হলে মানুষ একেবারেই মেনে নেবেন না। শিলিগুড়ি কী চাইছে, শহরের মেজাজটা কেমন সেটা মাথায় রাখতে হবে সকলকেই।’’
এই অবস্থায়, কংগ্রেস এবং বিজেপি-ও অতিমাত্রায় তৎপর। শিলিগুড়িতে কংগ্রেস পেয়েছে চারটি ও বিজেপি দু’টি আসন। কংগ্রেসের অন্দরের খবর, কোনও অবস্থাতেই তৃণমূলকে সমর্থন করা হবে না বলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দলের কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছেন। পুরসভায় বিরোধী আসনেই কংগ্রেসকে বসে গঠনমূলক ভূমিকা নেওয়ার পক্ষপাতী অধীরবাবু। কংগ্রেসের কাউন্সিলর তথা শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু, কেউ লিখিত ভাবে সমর্থন চাওয়ার অনুরোধ করেনি। তা ছাড়া আমরা নীতিগত ভাবে বামেদের সঙ্গেও যেমন থাকতে পারব না, তেমনই তৃণমূলের সঙ্গেও আমাদের লড়াই রয়েছে। কিন্তু, রাজনীতিতে অনেক সময়েই অঘটন ঘটে থাকে।’’
বিজেপি-র হাতে রয়েছে মাত্র দু’টি আসন। বিজেপি-র একটি সূত্রের দাবি, তাদের কাউন্সিলরদের কাছেও বিবেক ভোটের আর্জি নিয়ে পৌঁছেছেন তৃণমূল শিবিরের এক নেতা। কিন্তু, বিজেপি-র তরফে বাম ও তৃণমূল, উভয় শিবির থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখা হবে বলে আপাতত ঠিক রয়েছে। বিজেপি-র দার্জিলিঙের সাংসদ সুরিন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া জানিয়ে দিয়েছেন, জনতার রায় মেনে তাঁদের কাউন্সিলররা বিরোধী আসনে বসে উন্নয়নের ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy