Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ঝাঁপ পড়ল সারদা কমিশনের, ক্ষুব্ধ আমানতকারীরা

আপাতত ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গেল সারদা কমিশনের। কমিশনের দ্বিতীয় দফার মেয়াদের শেষ দিন ছিল বুধবার। মেয়াদ আর বাড়ানো হচ্ছে কি না তা জানতে এ দিন সকাল থেকেই উদগ্রীব ছিলেন কমিশনের কর্মী-অফিসারেরা। অপেক্ষায় ছিলেন রাজ্যের নানা অর্থলগ্নি সংস্থার আমানতকারী-এজেন্টরাও। কিন্তু রাত পর্যন্ত নবান্ন থেকে মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। নবান্নের এক আধিকারিকের কথায়, সরকার মেয়াদ না বাড়ানোয় আপাতত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সারদা কমিশন। তবে কমিশনে থাকা নথিপত্র যাতে সুরক্ষিত থাকে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৪ ২১:৩০
Share: Save:

আপাতত ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গেল সারদা কমিশনের। কমিশনের দ্বিতীয় দফার মেয়াদের শেষ দিন ছিল বুধবার। মেয়াদ আর বাড়ানো হচ্ছে কি না তা জানতে এ দিন সকাল থেকেই উদগ্রীব ছিলেন কমিশনের কর্মী-অফিসারেরা। অপেক্ষায় ছিলেন রাজ্যের নানা অর্থলগ্নি সংস্থার আমানতকারী-এজেন্টরাও। কিন্তু রাত পর্যন্ত নবান্ন থেকে মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। নবান্নের এক আধিকারিকের কথায়, সরকার মেয়াদ না বাড়ানোয় আপাতত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সারদা কমিশন। তবে কমিশনে থাকা নথিপত্র যাতে সুরক্ষিত থাকে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নবান্ন সূত্রের খবর, কমিশনের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগকারী অফিসার তথা আইজি (রেজিস্ট্রার অফ বেঙ্গল) বিশ্বজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন সন্ধ্যায় কমিশনে যান। তিনি জানান, কমিশন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তবে কমিশনে সরকারের যে সমস্ত কর্মী (বিভিন্ন বিভাগ থেকে ডেপুটেশনে আসা) রয়েছেন, তাঁরা সোমবার থেকে ওই অফিসেই বসবেন। সব নথিপত্র সরকারের হাতে না যাওয়া পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই থাকবেন। কমিশনের কাছে সরকারের যে টাকা জমা রয়েছে তা-ও সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ করবেন তাঁরা। পরে কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি।

কমিশন সূত্রের খবর, নতুন করে মেয়াদ না বাড়ার ফলে এ দিন বিকেল থেকে তড়িঘড়ি রিপোর্ট লেখা শুরু করেছেন কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেন। রাত পর্যন্ত সেই কাজ চলে বলে জানানো হয়েছে। তবে রিপোর্ট তৈরি করা হলেও তা আগামী সোমবারের (কালীপুজোর জন্য অফিস বন্ধ) মধ্যে পাঠানো হচ্ছে না।

কমিশন সূত্রের খবর, ২০১৪-র ২৩ এপ্রিল কমিশন চালু হওয়ার পর টাকা ফেরত চেয়ে মোট সাড়ে ১৭ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে সাড়ে ১২ লক্ষ আমানতকারী সারদা গোষ্ঠীতে টাকা রেখেছিলেন। ক্ষতিপূরণ বাবদ তাঁদেরকেই টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। কমিশন জানিয়েছে, রাজ্য সরকার এ বাবদ ২৮৬ কোটি টাকা কমিশনকে দেয়। এর মধ্যে পাঁচ দফায় ৪ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৪৫ জনকে চেকে টাকা পাঠায় কমিশন। মোট টাকার পরিমাণ ২৫১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা।

কমিশনের মেয়াদ আর বাড়ানো হবে কি না তা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই টালবাহানা চলছিল। এর কারণ, সারদা সংস্থায় টাকা রেখে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই এখনও টাকা পাননি। সেই সঙ্গে সারদা ছাড়া অন্য গোষ্ঠীর ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীরা যাতে টাকা ফেরত পান তা নিয়েও শুনানি চলছিল কমিশনে। স্বভাবতই কমিশনের কর্মীরা-সহ আমানতকারীদের একটি বড় অংশই ধরে নিয়েছিলেন কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হবে। কিন্তু তা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এজেন্ট ও আমানতকারীরা।

তবে কমিশন বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এ দিনও বিরোধী দলগুলি সরকারের সমালোচনা চালিয়ে গিয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র মঙ্গলবারই বলেছিলেন, অপরাধীদের আড়াল করতেই রাজ্য সরকার যে এই কমিশন করেছিল, আগেই তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। সেই সুরেই বুধবার কমিশন-প্রশ্নে রাজ্যকে তোপ দেগেছে বিজেপি এবং কংগ্রেস। বিজেপি-র অভিযোগ, সেন কমিশনের মাধ্যমে সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়েও মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। নবান্ন অভিযানে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ দিনই অভিযোগ করেন, মমতা ও তাঁর দলের ‘চৌর্যবৃত্তি ঢাকার আবরণ’ ছিল সেন কমিশন!

অন্য বিষয়গুলি:

saradha scam shyamal sen commission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE