সারদা-কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ তাঁর বক্তব্য জানাতে চাইলে তাঁকে লিখিত আবেদন করতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার কুণালবাবুর আইনজীবী শাম্ব নন্দী সর্বোচ্চ আদালতে বলেন, তাঁর মক্কেলকে গোপন জবানবন্দি দিতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর বক্তব্য আগেও শোনা হয়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দেয়। এরই পাশাপাশি রাজ্য সরকার এ দিন হলফনামায় জানিয়েছে, গোটা ঘটনার অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রী কুণাল ঘোষ। এ ছাড়া আরও কয়েক জন রাজনীতিকের ভূমিকাও তদন্তের আওতায় রয়েছে। তবে, ওই রাজনীতিকদের নাম হলফনামায় নেই। এ দিন রাজ্য সরকার একটি মুখবন্ধ খামে সুপ্রিম কোর্টে এই ঘটনার তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে যে যে তথ্য দিয়েছে, সেখানেই ওই রাজনীতিকদের নাম আছে। বিচারপতি টি এস ঠাকুর এবং বিচারপতি সি এস নাগাপ্পনের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কারা, এঁদের ভূমিকা কী বা এঁদের বিরুদ্ধে কী পাওয়া গিয়েছে তা আদালতে জানাতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ এপ্রিল।
এর আগে গত ২৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছিল, সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারির পিছনে যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে সে ব্যাপারে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানাতে হবে। ওই দিন সরকার জানিয়েছিল, বিধাননগরে একটি নির্দিষ্ট এফআইআর-এর ভিত্তিতে যে চার্জশিট পেশ করা হবে, সেখানেই এই ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে বলা হবে। বুধবার হলফনামা পেশ করে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বিধাননগর (উত্তর) থানায় জনৈকা মল্লিকা চট্টোপাধ্যায়ের দায়ের করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে যে তদন্ত হচ্ছে সেখানে এ ব্যাপারে সব কিছুই বলা থাকবে।
এ দিনের হলফনামায় রাজ্য জানিয়েছে, গোটা ষড়যন্ত্রে কয়েক জন রাজনীতিক ও সরকারি উচ্চপদে আসীন কয়েক জন ব্যক্তির ভূমিকার তদন্ত হয়েছে। এ ছাড়াও রাজ্য জানিয়েছে, কুণাল ঘোষকে সারদা গোষ্ঠী থেকে প্রতি মাসে চেকে বেতন দেওয়া হত ১৫ লক্ষ টাকা করে। কিন্তু সারদা গোষ্ঠীর কোনও পে-রোলে তাঁর নাম ছিল না। কুণালবাবুর প্রয়োজন অনুযায়ী সুদীপ্ত সেন টাকার জোগান দিতেন। সুদীপ্ত সেন কী ভাবে টাকাপয়সা সংগ্রহ করতেন এবং কী ভাবে তা লোকসানে চলা সংস্থায় লাগানো হত তা কুণাল জানতেন। হলফনামায় বলা হয়েছে, সুদীপ্তবাবুর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে সারদায় টাকা খাটানোর জন্য বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিতেন কুণাল।
হলফনামায় রাজ্য সরকার আরও জানিয়েছে, দুই প্রাক্তন মন্ত্রীর দুই আপ্ত-সহায়ক গণেশ দে ও অঞ্জন ভট্টাচার্যের ভূমিকাও তদন্তের আওতায় রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এই ব্যক্তিদের ব্যাপারে সবিস্তার জানতে চায়। সরকার এর উত্তর দেওয়ার জন্য দশ দিন সময় চায়। এই সময় অন্যতম আবেদনকারী আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে বলেন, এর জন্য কেন দশ দিন লাগবে? আদালত তখন বলে, এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক সপ্তাহের মধ্যে এ ব্যাপারে জানাতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy