প্রতীকী চিত্র।
এ বার বাম আমলে নিয়োগ হওয়া শিক্ষকদের তথ্য ডিজিটাইজ করতে চলেছে শিক্ষা দফতর। সম্প্রতি একটি শিক্ষক নিয়োগ মামলায় হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, রাজ্যে ৩০ বছরেরও বেশি কর্মরত সমস্ত শিক্ষকদের তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে শিক্ষা দফতর। সেই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করার পরে ডিজিটাইজেশনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। এমনটাই শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
স্কুলগুলি কী ভাবে তথ্য পাঠাবে, তার সবিস্তার বিবরণ দিয়ে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) জেলাগুলিতে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। চলতি মাসের ২৭ তারিখের মধ্যে এই সমস্ত তথ্য শিক্ষা দফতরের কাছে জমা দিতে হবে বলে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
অন্য দিকে সংরক্ষণেরও কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম না থাকায় তথ্য মজুত করা হয়েছে কি না, এবং এত বছরের তথ্য স্কুলগুলি কী ভাবে সংগ্রহ করবে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “তৃণমূল সরকারের আমলে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগে চরম জালিয়াতি ও দুর্নীতি ধরা পড়ার পরে এই সরকার উঠে পড়ে লেগেছে বাম আমলে নিযুক্তদের কালিমালিপ্ত করতে। এই নির্দেশে যে সব নথি চাওয়া হয়েছে, তার বেশ কিছু জিনিস সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে তেমন কোনও সরকারি নিয়ম ছিল না। সেই কারণে সে সব নথি হয়তো স্কুলগুলি দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণও করেনি। তা ছাড়া, সে সময়ে যে সব প্রধান শিক্ষক ছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগই অবসর গ্রহণ করেছেন। সে ক্ষেত্রে নতুন প্রধান শিক্ষকরা সে সব নথি পাবেন কোথায়?”
সূত্রের খবর, অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেই স্কুলগুলির তথ্য কী ভাবে সংগ্রহ করা হবে, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। এসএসসি গঠনের আগে শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্বভার ছিল স্কুল ম্যানেজিং কমিটির হাতে। সেই নিয়ম অনুযায়ী, ডিআই নির্দেশ দেওয়ার পরে ম্যানেজিং কমিটি নিয়োগপত্র তুলে দিত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের হাতে। তাই কেন্দ্রীয় ভাবে প্যানেল বা তালিকা তৈরি না হওয়ায় সেই নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণের নির্দিষ্ট কোনও নিয়ম ছিল না। সেই তথ্য কী ভাবে স্কুলগুলি দেবে, সে নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “সমস্যা কিছু রয়েছে। তবে আদালতের নির্দেশে শিক্ষকদের তথ্য ডিজিটাইজ করার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, আমরা তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। এতে কোনও দুর্নীতি হলে খুব সহজে তার তথ্য সামনে চলে আসবে।”
প্রসঙ্গত, শুধু এসএসসি-ই নয়, ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে নিযুক্ত শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহ করে আদালতে পেশ করতে হবে। অর্থাৎ স্কুল সার্ভিস কমিশন গঠিত হওয়ার আগে স্কুল পরিচালন সমিতির মাধ্যমে নিযুক্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে বর্তমান পোস্টের অ্যাপ্রুভাল মেমো পেশ করতে হবে এবং ওই তথ্য অনলাইনেও আপলোড করতে হবে। প্রধান শিক্ষকদের আইওএসএমএস পোর্টালে এই তথ্য জমা দিতে হবে। ২০ জুনের মধ্যে শিক্ষা দফতরকে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে হাইকোর্টের কাছে জমা দিতে হবে। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের সমস্ত তথ্য শিক্ষা দফতরে থাকা সত্ত্বেও নতুন করে ডিআইদের নির্দেশ দেওয়ার কি যৌক্তিকতা? নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন থাকলে, সেই মতো তদন্ত হোক। কিন্তু এর জন্য সব শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীকে কাঠগোড়ায় তুলতে গিয়ে দুর্নীতির গোড়ার কথাটাই বাদ পড়ে যাচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy