সংগৃহীত চিত্র।
২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের একাধিক বিষয়ের পাঠ্যক্রম (সিলেবাস) পরিমার্জিত হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস এবং ‘সায়েন্স অফ ওয়েলবিয়িং’-সহ বেশ কিছু বিষয়ের পাঠ্যক্রম পুনর্বিবেচনার জন্য সিলেবাস কমিটির কাছে পাঠিয়েছে শিক্ষা সংসদ।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি বিষয়ের সিলেবাস ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে কঠিন হয়ে গিয়েছে। তা পরিমার্জন করা হবে। সিলেবাস কমিটি আমাদের রিপোর্ট দিলে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’’
ইতিমধ্যেই পাঠ্যক্রমে থাকা একাধিক বিষয়বস্তু নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে শিক্ষকদের একটি বড় অংশ। তাঁদের বক্তব্য, পাঠ্য বইতে এমন কিছু বিষয় বাছা হয়েছে, প্রথম সারির ছাত্রছাত্রীরাও যা পড়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ হারাচ্ছেন। অনেক বিষয়বস্তু আবার প্রাসঙ্গিক না হওয়ায় ক্লাসে পড়াতে সমস্যা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে কয়েকটি সংগঠনের তরফে বেশকিছু বিষয়ের একাধিক টপিক কঠিন বলে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘উচ্চমাধ্যমিকের বিভিন্ন বিষয়ে সিমেস্টার ভিত্তিক যে নতুন সিলেবাস করা হয়েছিল, তাতে বহু অসঙ্গতি রয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছে পরিমার্জনের দাবি জানিয়েছিলাম। সিলেবাস কমিটি তা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। সেই দাবি মেনে সিলেবাস পরিমার্জিত হতে চলেছে। বাস্তবসম্মত ভাবে সিলেবাস তৈরি হলে ছাত্র-শিক্ষক এবং অভিভাবকরা খুশি হবেন।’’
শিক্ষক মহলের একাংশের বক্তব্য, সিলেবাস বেশির ভাগই শহরমুখী এবং কলকাতা কেন্দ্রিক। ইংরেজি সিলেবাসের ক্ষেত্রে বহু বিষয় রয়েছে যা কঠিন, নিরস এবং অপ্রাসঙ্গিক। কবিতাও যথেষ্ট কঠিন। বহু প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া রয়েছেন যাঁরা এই সমস্ত বিষয় পড়তে আগ্রহী নন। উল্টে তাঁরা ইংরেজি বিষয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
পুরনো সিলেবাসে একাদশের ইংরেজির পাঠ্যক্রমে পাঁচটি গদ্য ছিল। নতুন সিলেবাসে একাদশের দু’টি সিমেস্টার মিলিয়ে মোট সাতটি গদ্য রাখা হয়েছে। রয়েছে ‘দ্য স্বামী অ্যান্ড মাদার ওয়ার্কশিপ’ বাই সিস্টার নিবেদিতার মতো ভাবগম্ভীর আধ্যাত্মিক বিষয়ের প্রবন্ধ, যা ছাত্রছাত্রীদের বোঝা বা বোঝানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট কঠিন হয়ে পড়ছে। ইংরেজিতে ক্যাথরিন মেন্স ফিল্ডের ছোটগল্প ‘দ্য গার্ডেন পার্টি’ উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট কঠিন বলে জানাচ্ছে শিক্ষক মহলের একাংশ। একই ভাবে বাংলা সিলেবাসের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, তৃতীয় এবং চতুর্থ সিমেস্টারের গল্প পাঠ্যাংশ অনেক বেশি রয়েছে। যা এই স্বল্প সময়ের মধ্যে শেষ করা অসম্ভব।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “বর্তমান শিক্ষাবর্ষে একাদশে নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ের সিলেবাস নিয়ে শিক্ষা মহল থেকে অভিযোগ আসছিল। আমরাও কাউন্সিলকে আপত্তির কথা জানিয়েছিলাম। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষে তারা কিছু পরিমার্জন করবে শোনা যাচ্ছে। আমাদের দাবি, প্রতিটি স্বীকৃত শিক্ষক সংগঠনের সাথে কথা বলে তার পর সিদ্ধান্ত নিক সংসদ। তা হলে সিলেবাস নিয়ে ভবিষতে আর বিতর্ক হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy