প্রতীকী চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিকে তৎকাল স্ক্রুটিনি এবং রিভিউয়ের ফল প্রকাশ হতেই মেধাতালিকায় স্থান পেলেন আরও ১২ জন। প্রথম ১০-এর তালিকায় রয়েছেন ৭০ জন। মেধাতালিকায় স্থান পরিবর্তন হয়েছে তিন পড়ুয়ার। স্ক্রুটিনিতে এত পড়ুয়ার ফলাফলে পরিবর্তন কী ভাবে? তা হলে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কোনও ত্রুটি রয়েছে? প্রশ্ন উঠছে শিক্ষক মহলে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদও।
মে মাসের ৮ তারিখ উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম ১০-এর যে মেধাতালিকা শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে প্রকাশ করা হয়েছিল তাতে ৫৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। ছাত্রীর সংখ্যা ২৩ এবং ৩৫ জন ছাত্রের নাম ছিল সেখানে। কিন্তু সপ্তাহান্তেই স্ক্রুটিনি ও রিভিউয়ের ফলপ্রকাশ হতেই মেধাতালিকায় ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে বাড়ছে সংশয়।
বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহি হাইস্কুলের অঙ্কিত পাল প্রথম মেধাতালিকা অনুযায়ী, পঞ্চম স্থানাধিকারী হয়েছিলেন ৪৯২ নম্বর পেয়ে। অথচ দ্বিতীয় বার প্রকাশিত মেধাতালিকায় দেখা যাচ্ছে তাঁর স্থান পরিবর্তন হয়েছে। অঙ্কিত জায়গা করে নিয়েছেন তৃতীয় স্থানে হয়েছে ৪৯৪ পেয়ে। হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের অভ্রকিশোর ভট্টাচার্য ষষ্ঠ (৪৯১) স্থান থেকে পঞ্চম স্থানে (৪৯২) এবং চুঁচুড়া বালিকা বাণীমন্দিরের বৃষ্টি পাল নবম থেকে সপ্তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
এ ছাড়াও নতুন মেধাতালিকায় প্রবেশ করেছেন আরও ১২ জন কৃতী পড়ুয়া। অষ্টম স্থানে একজন, নবম স্থানে তিনজন এবং দশম স্থানাধিকারী হয়েছেন মোট আট জন পড়ুয়া।
এ প্রসঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “প্রথম ১০-এ স্থান পাওয়া একটা বড় বিষয়। কিন্তু এই বিষয়টা প্রথমেই কেন হল না, কেন আগে নম্বর দেওয়া হল না, এই বিষয়গুলি আমরা খাতা পর্যালোচনা করে খতিয়ে দেখব। যাতে এই ধরনের ত্রুটি পরবর্তীকালে না হয়।” শিক্ষা সংসদ সূত্রের খবর, যে ১২ জন মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন, তাঁদের অনেকের চার থেকে পাঁচ নম্বর বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সেই সমস্ত খাতা আলাদা করে খতিয়ে দেখা হবে, এবং কোথায় ভুল বা ত্রুটি রয়েছে সেটাও দ্রুত খুঁজে বের করা হবে।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “কোনও কোনও শিক্ষককে একই সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দু’টি পরীক্ষারই পরীক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। বহু শিক্ষকের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কোনও পরীক্ষার খাতাই দেখতে দেওয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ পর্ষদ ও সংসদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট। ‘টিচার ডেটা সিট’ অনুযায়ী কাজের দায়িত্ব বন্টন করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের খাতা জমা দেওয়ার সময়সীমা একই সময়ে ধার্য করায়, পরীক্ষকদের চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সর্বোপরি যে সব শিক্ষকের খাতা দেখার ক্ষেত্রে খামতির চিহ্ন স্পষ্ট, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।”
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, এ বার তৎকাল পরিষেবায় ২২ হাজার ৮৩৬টি বিষয় স্ক্রুটিনি ও রিভিউ-এর জন্য আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ৫,৪৫৯ জনের ফল পরিবর্তন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “মেধাতালিকায় এত পরিবর্তন হয়েছে মানে ভুলভ্রান্তির সমস্যা তো রয়েইছে, যা কখনই কাম্য নয়। এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সমস্ত নম্বর অনলাইনে গ্রহণ করেছে এবং সেখানে তা দ্বিতীয়বারের জন্য মূল্যায়নও করতে হয়েছে। ফলত, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কোথাও ঘাটতির কারণেই মেধাতালিকায় এত পরিবর্তন হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, তৎকাল স্ক্রুটিনি ও রিভিউ বাদে সাধারণ ভাবে যে স্ক্রুটিনি ও রিভিউ করা হয়, তার ফলাফল এখনও ঘোষণা হওয়া বাকি রয়েছে। সেখানেও মেধাতালিকায় রদবদলের সম্ভাবনা দেখছে শিক্ষক মহলের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy