সংগৃহীত ছবি।
এক দিকে উচ্চমাধ্যমিকে সিমেস্টার পদ্ধতিতে ইংরেজির সিলেবাস নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষক মহলের একাংশ। তারই মাঝে মাধ্যমিকের মতো উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রমেও যুক্ত হতে চলেছে মনীষীর লেখা বই। স্বামী বিবেকানন্দের ‘কল টু দ্য নেশন’।
স্বামী বিবেকানন্দের এই বইটি বিনামূল্যে দেওয়া হবে একাদশের পড়ুয়াদের। বই সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল টেক্সটবুক কর্পোরেশন লিমিটেড। বইটি সম্পূর্ণরূপে ‘নন ইভ্যালুয়েটিভ সাপ্লিমেন্টারি রিডিং বুক।’ এখান থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের কোনও প্রশ্ন আসবে না পরীক্ষায়।
শিক্ষকমহলের একাংশের বক্তব্য, একাদশ শ্রেণিতে সিমেস্টার পদ্ধতিতে যে ইংরেজি সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে, তা এক দিকে যেমন দীর্ঘমেয়াদী, অপর দিকে যে গদ্য উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়ানোর জন্য পাঠ্যক্রমে যুক্ত করা হয়েছে, তা আসলে পিএইচডি পড়ুয়াদের জন্য।
পশ্চিম মেদিনীপুরের পশম হাইস্কুলের ইংরেজি শিক্ষক রতিকান্ত অধিকারী বলেন, “একাদশের প্রথম সিমেস্টারের সিলেবাসে তিনটি গদ্যের মধ্যে দু’টি সিস্টার নিবেদিতার লেখা। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বাচ্চাদের জন্য সেগুলো যথেষ্ট কঠিন। এ ছাড়াও তৃতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টারের সিলেবাস যথেষ্ট দীর্ঘমেয়াদী। তার মধ্যে আবার স্বামী বিবেকানন্দের লেখা বই ইংরেজি সিলেবাসের রাখা হয়েছে। যদিও তার মূল্যায়ন হবে না। পড়ুয়ারা তবে পড়বে কখন?”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছায় পাঠ্যক্রমে এই বইটি জায়গা পেয়েছে। এমনটাই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সূত্রের খবর। ইংরেজি বিষয়ের অধীনে সাপ্লিমেন্টারি অর্থাৎ সহায়ক পাঠ্য হিসেবে এই বইটি পড়ানো হবে পড়ুয়াদের। কিন্তু এই বিষয়ে কোনও মূল্যায়ন হবে না।
এ প্রসঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “ইংরেজি পাঠ্যক্রম নিয়ে বিচ্ছিন্ন মতামত আমাদের কাছে এসেছে। আমরা প্রথম সিমেস্টার দেখব। তারপর ভাবনা-চিন্তা শুরু করব। তবে স্বামী বিবেকানন্দের এই বইটি অবসর সময় পড়লে যুব সমাজের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি পাবে।”
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “এমনিতেই একাদশ শ্রেণির, বিশেষত বাংলা এবং ইংরেজির বিরাট সিলেবাস নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠছে। তার মধ্যে এই ধরনের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অবাস্তব। বাস্তবসম্মত ভাবে সময়ের মধ্যে সিলেবাস শেষ করার মতো পাঠ্যসূচি নির্ধারণ করা হোক, যা ছাত্রছাত্রীরা আগ্রহের সঙ্গে শিখবে।”
শিক্ষকদের আর একটি অংশের বক্তব্য, একাদশ শ্রেণির পাঠ্য বই এখনও পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যা অনুযায়ী স্কুলে শিক্ষা সংসদ পাঠাতে পারেনি। শারীরশিক্ষা বিষয়ের বইটি কাউন্সিল থেকে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই বই বেশ কিছু বিদ্যালয়ে এসে পৌঁছয়নি। আর কয়েক দিন পরে সিমেস্টার পরীক্ষা। এই অব্যবস্থাগুলো তার আগে ঠিক করা হোক।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, "এমনিতেই একাদশে ইংরেজি সিলেবাসে ভগিনী নিবেদিতার দু'টি লেখা নিয়ে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকেরা কেউ সন্তুষ্ট নয়। তার উপরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে অনুসরণ করে আবার স্বামী বিবেকানন্দের একটা লেখা চাপিয়ে দেওয়া হল। তারও আবার মূল্যায়ন হবে না। এটি সঠিক সিদ্ধান্ত নয় বলেই আমরা মনে করি।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy