সংগৃহীত চিত্র।
স্রেফ মুখস্থ বিদ্যা নয়, তার বাইরে কোনও বিষয় প্রকৃত অর্থে কতটা শিখছে পড়ুয়ারা? তা বোঝার লক্ষ্যে পরীক্ষার খাতায় এ বার মেধার উৎকর্ষও যাচাই করবে দ্য কাউন্সিল ফর দি ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশন (সিআইএসসিই)। সেই প্রক্রিয়া শুরু করে দিল কাউন্সিল।
ইতিমধ্যেই আইসিএসই এবং আইএসসি স্কুলগুলিতে বিষয় ভিত্তিক ‘কমপিটেন্সি ফোকাসড’ কোয়েশ্চেন বুকলেট পাঠানো শুরু হয়েছে। তাতে রয়েছে মেধা-ভিত্তিক প্রশ্নের নির্দেশিকা। উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৫ সাল থেকে পরীক্ষায় মোট নম্বরের ২৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে কাউন্সিলের নিয়মমাফিক এই প্রশ্নগুলির জন্য।
এই নতুন ব্যবস্থায় পড়ুয়াদের মেধার উৎকর্ষ যেমন বৃদ্ধি পাবে, পাশাপাশি শিক্ষকরাও এই ‘কমপিটেন্সি ফোকাসড’ কোশ্চেন বুকলেটের মাধ্যমে নয়া পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। এই প্রশ্ন ব্যাঙ্ক তৈরি করা হয়েছে বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে। এখানে এক দিকে যেমন কী ভাবে প্রশ্ন করা হবে, তা বলা আছে, তেমনই শিক্ষকরা ক্লাসে পড়ুয়াদের কী ভাবে বিষয়টি শেখাবেন, তারও একটি গাইডলাইন দেওয়া আছে।
বিষয়ভিত্তিক ‘কমপিটেন্সি ফোকাসড’ কোয়েশ্চেন-আইটেম ব্যাঙ্ক তৈরির লক্ষ্য হল-- শিক্ষকরা যখন প্রশ্নপত্র তৈরি করবেন, তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়। মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন, সংক্ষিপ্ত মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন, ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নের গঠন কী ভাবে হবে, তা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। মেধার নিরিখে এই মূল্যায়নের জন্য বিষয়ভিত্তিক ২৫ শতাংশ নম্বর ধার্য করেছে কাউন্সিল।
এ প্রসঙ্গে রামমোহন মিশন স্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, “মুখস্থ করে লেখার দিন শেষ। পড়াশোনাকে অনেকটা বেশি বাস্তবমুখী করে তুলতে হবে। তার জন্য যা পড়ানো হচ্ছে, সেটা ভাল করে বুঝতে হবে। এবং তার বাস্তব প্রয়োগ বা প্রতিফলন সম্পর্কে শিখতে ও জানতে হবে পড়ুয়াদের।”
জাতীয় শিক্ষানীতিতে পুঁথিগত বিদ্যা থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে পড়ুয়ারা কতটা জানল এবং তার থেকে কী নির্যাস তারা গ্রহণ করল, তার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যাতে পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি বাস্তব জীবনের সঙ্গে তার একটা মেলবন্ধন তৈরি হয়। তাই এই ধরনের মূল্যায়নের উপর জোর দিতে চলেছে সিআইএসসিই।
ইতিমধ্যে চারটি বিষয়ে এই ‘কমপিটেন্সি ফোকাসড’ কোয়েশ্চেন বুকলেট পৌঁছে গিয়েছে সিআইএসসিই অনুমোদিত স্কুলগুলিতে। সেগুলি হল ভৌতবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং ইতিহাস। স্কুলগুলি মনে করছে আগামী এক মাসের মধ্যে সমস্ত বিষয়ে এই ধরনের আইটেম ব্যাঙ্ক প্রশ্নপত্র চলে আসবে। শুধু তা-ই নয়, পড়ুয়ারাও সরাসরি তা কাউন্সিলের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে দেখতে বা পড়তে পারবে।
এ প্রসঙ্গে দ্য বিবিএস স্কুলের অধ্যক্ষ সুনিতা সেন বলেন, “কাউন্সিল অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের এই নয়া বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করছেন। যাতে পরীক্ষার সময়ে পড়ুয়াদের প্রশ্নের উত্তর লিখতে কোনও ধরনের অসুবিধা না হয় এবং তাদের জ্ঞান শুধু মুখস্থ বৃত্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে না যায়। যা শিখছে, তা যেন তারা বাস্তব পরিস্থিতিতে ব্যবহার করতে পারে, সেটাই মূল উদ্দেশ্য।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy