সংগৃহীত চিত্র।
ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের ভারসাম্য আনতে উদ্যোগী শিক্ষা দফতর। উৎসবের মরসুম শেষ হলেই জেলাভিত্তিক ট্রান্সফারের প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে সরকার। সিআইআই-এর আয়োজিত এডুকেশন সামিটে এসে জানালেন শিক্ষাসচিব বিনোদ কুমার।
বিনোদ বলেন, “সম্প্রতি আমরা শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। বহু জেলায় ছাত্র ও শিক্ষকদের অনুপাতে তারতম্য লক্ষ্য করা গিয়েছে। সেই সংখ্যার ভারসাম্য বজায় রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।”
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বদলির ফলে বহু জায়গায় দেখা গিয়েছে, ছাত্র-শিক্ষক আনুপাতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। বেশ কিছু জেলার একাধিক স্কুলে শিক্ষক বেশি, ছাত্র কম। আবার কোনও জেলায় ছাত্র রয়েছে, শিক্ষক নেই। এর ফলে সরকারি স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠনের মানের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তাই দ্রুত ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের ভারসাম্য ঠিক করতে সারপ্লাস ট্রান্সফার করা হবে, তার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “আমরা চাই স্কুলগুলিতে দ্রুত ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ঠিক করা হোক। যেখানে শিক্ষক সারপ্লাস রয়েছে তা পরিবর্তন করা হোক। আবার যেখানে ছাত্র বেশি রয়েছে শিক্ষক নেই, সেখানেও শিক্ষক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। বিষয়টি যেন প্রতিহিংসামূলক বদলি না হয়।”
পূজো মিটতেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ হাতে আসার পরই সিঁদুরে মেঘ দেখছিল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। আর শিক্ষা সচিবের বক্তব্যে সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে। সম্প্রতি, মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বদলির ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশকে বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট।
গত বছর অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী নির্দেশে বলেছিল, রাজ্য ২০১৭-র আগে নিযুক্ত স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আপাতত দূরের জেলায় বদলি করতে পারবে না। চলতি বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের মামলা খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে কে মহেশ্বরী ও বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের বেঞ্চ রাজ্য সরকারের হাতে যত্রতত্র বদলির ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে প্রায় ১৩০০ মতো শিক্ষক রয়েছেন, যাঁদের সারপ্লাস হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কী ভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় এই ছাত্র শিক্ষক অনুপাতের ভারসাম্য আনা হবে, তা নিয়েও বিস্তর আলোচনা হয়েছে আধিকারিকদের মধ্যে। উৎসশ্রী পোর্টাল বা অন্য কোনও পদ্ধতিতে হবে কি না তা এখনও স্থির হয়নি। ২০২১ সালে উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করা হয়। জেনারেল ট্রান্সফার নিয়ে বিস্তর অভিযোগ এবং প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে সিট আপগ্রেডেশন সমস্যা তৈরি হওয়ায় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে পোর্টাল বন্ধ রাখা সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকে শিক্ষক ছাত্র অনুপাত সঠিক করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। স্কুল সার্ভিস কমিশন আইনের ১০-সি ধারা যোগ করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এক জেলা থেকে আরেক জেলায় বদলির প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু সেখানে অভিযোগ ওঠে, ২০১৭ আগে যাঁরা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন তাঁদেরও বদলি করা হচ্ছে। প্রথমে হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত মামলা গড়ায়। তবে শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায়কে বহাল রেখে সরকারের ট্রান্সফারের পক্ষে রায় দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy