প্রতীকী চিত্র।
আবারও বন্ধ থাকার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হল ‘উৎসশ্রী’ পোর্টালের। গত দু’বছর ধরে শিক্ষকদের বদলির এই পোর্টাল বন্ধ রাখায় সরব হয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। মিউচুয়াল ট্রান্সফার কেন চালু করা হচ্ছে না, প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষক মহল।
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন,“বছরের পর বছর নিয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের নিজের জেলায় বদলির জন্য উৎসশ্রী পোর্টালও দীর্ঘদিন বন্ধ। আমরা শিক্ষা দফতরের কাছে লিখিত ভাবে দাবি জানিয়েছিলাম অন্তত আপস বদলি অর্থাৎ মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালু করা হোক। এতে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার কোনও অসুবিধা হয় না। তবুও সেই দাবি অগ্রাহ্য করা হল। অনির্দিষ্ট কাল ধরে এ জিনিস চলতে পারে না। আমরা দাবি করছি অন্তত মিউচুয়াল ট্রান্সফার অবিলম্বে চালু করা হোক।”
প্রসঙ্গত, শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, যে চলতি বছরে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষক বদলি বন্ধ রাখা হচ্ছে। এর আগে ৩০ জুন পর্যন্ত তা বন্ধ থাকার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল।
এ নিয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “নিয়োগের অজুহাত দিলেও মূল সমস্যা হল আমাদের রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর ব্যর্থতা। ওঁর উন্নাসিক মানসিকতা এবং শিক্ষা দফতর সম্পর্কে অজ্ঞতার সুযোগ নিচ্ছেন আধিকারিকরা। নিয়োগ যদি জেনারেল ট্রান্সফারে বাধা হয়ে থাকে তাহলে মিউচুয়াল ট্রান্সফারে অসুবিধা কোথায়?”
তিনি আরও জানান, যাঁরা গত দু’বছর ধরে পোর্টালে আবেদন করে রেখেছেন, তাঁদের অপরাধ কী? কেন তাঁদের বিষয়গুলির সমাধান হল না?
মূলত, ২০২২ সালে শিক্ষক বদলির পোর্টাল বন্ধ রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তারপর থেকে পোর্টাল খোলার ইচ্ছে পর্যন্ত দেখাচ্ছে না শিক্ষা দফতর, এমনটাই অভিযোগ শিক্ষক মহলের। বদলির পোর্টাল বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় ২২০০-এর বেশি বদলির আবেদন থমকে রয়েছে জেনারেল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে। একই ভাবে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রেও আবেদন জমা পড়ে রয়েছে। শিক্ষক মহলের একাংশের প্রশ্ন, যদি নিয়োগের সমস্যার জন্যই এই বদলির পোর্টাল বন্ধ রাখা হয়, উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে নিয়োগের শূন্য আসন যেহেতু ইতিমধ্যেই স্থির করা হয়ে গিয়েছে, তা হলে ট্রান্সফার চালুর ক্ষেত্রে কী সমস্যা রয়েছে? মিউচুয়াল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে এই ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা নেই। তা হলে কেন চালু করা হচ্ছে না?
যদিও এ বিষয়ে শিক্ষা দফতরের ব্যাখ্যা, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের মাধ্যমে নিয়োগ চলছে। বদলির ফলে যাতে কোনও সমস্যা না তৈরি হয় তাই আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে এই বদলির পোর্টাল।
অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “অবিলম্বে মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালু করা উচিত। সমস্ত রকম তথ্য এখন শিক্ষা দফতরের কাছে রয়েছে। কোনও রকম অসুবিধা হলে খুঁজে বার করা সহজ ব্যাপার। মিউচুয়াল ট্রান্সফারের মাধ্যমে কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা বাড়ির কাছাকাছি বদলি হলে স্কুলে বেশি সময় দিতে পারবেন।”
শিক্ষক মহলের একটি অংশ মনে করছে, এই সমস্যার সমাধানে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ জরুরি। তা না হলে শিক্ষকদের মধ্যে বদলি নিয়ে ক্ষোভ বৃদ্ধি পেতেই থাকবে উত্তরোত্তর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy