Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Editorial News

যন্ত্রণার এই আর্তনাদ সরকারের কানে পৌঁছচ্ছে না?

কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাড়ির পর বাড়িতে যে হাহাকার ধ্বনি উঠছে তাকেও বা অস্বীকার করা যায় কী ভাবে? হাসপাতালগুলোতে উপচে পড়া ভিড়, ক্রমাগত রেফার হতে-থাকা, মেঝেয় পড়ে থাকা রোগীগুলো কেন অন্য কিছুর আতঙ্কের ইঙ্গিত দিচ্ছে?

বাবা সফিক আলিকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মেয়ে। ফাইল চিত্র।

বাবা সফিক আলিকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মেয়ে। ফাইল চিত্র।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৭ ০০:২২
Share: Save:

আতঙ্ক ছড়ানো কখনওই উচিত নয়। অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানো তো আরওই নয়। কিন্তু আতঙ্কের যদি কোনও হেতু থাকে তা হলে কী করণীয় হয়? আপাতত এই ফাঁপড়ে এ রাজ্যের আপামর মানুষ। দ্বিধা-দোলাচল নেই একমাত্র সরকারের। কারণ তাঁরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ডেঙ্গি নিয়ে যাবতীয় চর্চা মূলত বিরোধীদের চক্রান্ত। অস্যার্থ, হে নাগরিক, আপনি নিশ্চিন্তে পাশ ফিরে ঘুমোতে পারেন।

আরও পড়ুন: অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে ডেঙ্গি নিয়ে : মমতা

মুশকিলটা হল এই মাভৈ বাণী নাগরিকের কর্ণকুহরে ঠিক মতো প্রবেশ করছে না যেন। না হলে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এমন আশ্বাসের পরেও কানে মশারই গুনগুন ধ্বনিত হয় কেন? এমনকী দিন বা রাতে কোনও মশাকে দেখেও বোঝা যাচ্ছে না কেন এ মশা নিজেদের নাকি বিরোধী শিবিরের? কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাড়ির পর বাড়িতে যে হাহাকার ধ্বনি উঠছে তাকেও বা অস্বীকার করা যায় কী ভাবে? হাসপাতালগুলোতে উপচে পড়া ভিড়, ক্রমাগত রেফার হতে-থাকা মেঝেয় পড়ে থাকা রোগীগুলো কেন অন্য কিছুর আতঙ্কের ইঙ্গিত দিচ্ছে?

রোগে মৃত্যু বা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সরকারের কাছে যদি শুধুই পরিসংখ্যান হয়, এবং ১৩ বা ২৭-এর কাটাকুটি চলতে থাকে, যদি রোগ যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা আপামর মানুষ যদি সংখ্যা হয়ে যান তা হলে ঠিক এই ঘটনাটাই ঘটে। রোগের প্রাদুর্ভাব বা তার ছড়িয়ে পড়ায় সরকারের দায় কতটা তার চুলচেরা বিশ্লেষণের বদলে এই রোগমুক্তির পথটাই যে কাঙ্ক্ষিত ছিল, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে পশ্চিমবঙ্গের মা-মাটি-মানুষের সরকার সে কথাটা বুঝতে অক্ষম হয়ে গেল। তার ফলে যা ঘটার তাই ঘটছে। রোগ এবং রোগীকে ক্রমাগত ঢেকে ফেলা হচ্ছে কার্পেটের তলায়, উপসর্গগুলোকে গুম করে ফেলা হচ্ছে। যন্ত্রণার স্বরকে ক্রমাগত চাপা দেওয়া চেষ্টা চলছে। আর তথ্য এবং পরিসংখ্যানের মাঝে হারিয়ে যাওয়া মানুষ, তাঁরা তবু বেঁচে থাকার লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন এখনও, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন নিজের মতো করে। রাষ্ট্রকে পাশে পাওয়ার ন্যূনতম চাহিদাটুকু পাশে সরিয়ে রেখে আপাতত চলছে খড়কুটো ধরে লড়াই। প্রতিটি ব্যক্তির একান্ত ব্যক্তিগত নিজস্ব লড়াই।

যন্ত্রণার এই আর্তনাদ সরকারের কানে পৌঁছচ্ছে না?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy