Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
News Letters

ক্ষুদ্র ছিদ্র রোধ করে বৃহৎ গর্তটি খুলে দিল সরকার!

এই সরকার ঠিক কী করতে চাইছে, ক্ষুদ্র আম-মানুষ তার আন্দাজ পাবেন, এমনটা আশা করা ঈষৎ অনুচিত কাজই হবে। বৃহৎ এক কর্মযজ্ঞ, যে যজ্ঞের আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যাবে কালো টাকা এবং সেই অগ্নিপথ ধরেই নগদে অস্বচ্ছ এক ভারত যাত্রা শুরু করবে ক্যাশলেস স্বচ্ছ এক ভারতের দিকে।

এত ঢাকঢোলের আয়োজন তবে কেন?  এত মানুষের গত মাসাধিক কালের তীব্র বেদনা কেন? ছবি: সংগৃহীত।

এত ঢাকঢোলের আয়োজন তবে কেন? এত মানুষের গত মাসাধিক কালের তীব্র বেদনা কেন? ছবি: সংগৃহীত।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:২১
Share: Save:

এই সরকার ঠিক কী করতে চাইছে, ক্ষুদ্র আম-মানুষ তার আন্দাজ পাবেন, এমনটা আশা করা ঈষৎ অনুচিত কাজই হবে। বৃহৎ এক কর্মযজ্ঞ, যে যজ্ঞের আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যাবে কালো টাকা এবং সন্ত্রাসবাদীদের মদতপুষ্ট জাল টাকা, এবং সেই অগ্নিপথ ধরেই নগদে অস্বচ্ছ এক ভারত যাত্রা শুরু করবে ক্যাশলেস স্বচ্ছ এক ভারতের দিকে। এমনটাই তো অন্তত ঘোষণা। যজ্ঞের ধোঁয়ায় চোখ জ্বলছে যে আম ভারতবাসীর, সে এত বড় কাণ্ড বুঝবে, তাকে শুধু এখন বোঝানোর সময়, আর ক্রোশ দুই পরেই অচ্ছে দিন। গ্রামীণ পথে নবাগত আগন্তুক যে আশ্বাস শুনে ক্রোশের পর ক্রোশ হেঁটেই চলে গন্তব্যের দিকে।

অতএব, এ হেন আম মানুষটি আরও বৃহৎ পদক্ষেপের মর্যাদা বুঝবেন না, এতে আর বিস্ময়ের কী! তাঁর টাকাটি কালো না সাদা, এটি ধরবার জন্য ওত পেতে, জাল ছড়িয়ে, দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি চোখে লাগিয়ে বসে রয়েছেন তাবড় করকর্তারা, ভাল কথা, দেশের বৃহত্তর স্বার্থ সেখানে জড়িত। কিন্তু এই একই পুণ্যকর্মের আওতা থেকে রাজনৈতিক দলগুলি কেন বাদ যাবে, এই কথাটা বোধগম্য হচ্ছে না কিছুতেই। অথচ সরকার ঠিক এই কথাটিই ঘোষণা করলেন। রাজনৈতিক দলগুলি যত খুশি পুরনো নোট জমা করতে পারে, আয়কর বিভাগ মাথাই ঘামাবে না, চোখ তুলে দেখবেও না সে দিকে।

আমার-আপনার জন্য যে ছাড় নেই, থাকাটা সঙ্গতও নয়, রাজনৈতিক দলগুলির জন্য সেই ছাড় কেন, সঙ্গতি-অসঙ্গতির এই ন্যায্য বিতর্কের ঊর্ধ্বেও একটি গূঢ় সত্যকে কেন অনুধাবন করতে পারল না সরকার, বোধগম্য হচ্ছে না সেটিও। কালো টাকার কারবারিরা যদি টাকা সাদা করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে ব্যবহার করে, কী ভাবে তা রোখা সম্ভব হবে? ব্যক্তির কালো টাকা রাজনৈতিক দলের তহবিল মারফত ব্যাঙ্কে গেলেই যদি করকর্তার দৃষ্টির আওতার বাইরে চলে যায়, সাদা হয়ে যায় যদি, তবে পথটির অপব্যবহারের সম্ভাবনা কি খতিয়ে দেখেছে সরকার? বিশেষজ্ঞেরা এই আশঙ্কাটি করতে শুরু করেছেন।

প্রশ্নটি ঘুরেফিরে তাই বেশ প্রাথমিক স্তরেরই থেকে যায়। এত ঢাকঢোলের আয়োজন তবে কেন? এত মানুষের গত মাসাধিক কালের তীব্র বেদনা কেন? কেন এই হাহাকার ধ্বনি? ক্ষুদ্র ছিদ্র রোধ করে বৃহৎ গর্তটিই যখন খুলে দেবে সরকার?

বোঝা যাচ্ছে না কিছু। যজ্ঞ চলছে। আগুনে নাকি পুড়বে কালো। আপাতত ধোঁয়া এবং ধোঁয়াশাই শুধু। চোখ জ্বলছে। আম ভারতবাসীর চোখ দিয়ে জল পড়ছে তো পড়ছেই। এ মাটি শুকোবে তো, সরকার?

অন্য বিষয়গুলি:

Anjan Bandyopadhyay Demonetisation Arun Jaitley
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy