‘রাফাল’ শব্দ উচ্চারণ না করেও কংগ্রেসকে তোপ মোদীর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
গোটা দেশ তার মুখের দিকে চেয়ে ছিল। তিনি কী বলেন, শোনার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল। অবশেষে তিনি মুখ খুললেন। কিন্তু এ তিনি কী বললেন! যা শোনার অপেক্ষায় ছিলেন দেশবাসী, সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না।
রাহুল গাঁধী ক্রমশ শানিত করে তুলছেন হাতিয়ারটা, ধার বাড়ছে আক্রমণের। রাহুলের রাজনৈতিক জীবনে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য সাফল্যের সংখ্যা বেশি নয় এখনও পর্যন্ত। কিন্তু পর পর অনেকগুলি ব্যর্থতার পরে রাহুল গাঁধী এ বার কিন্তু একটা বড় সাফল্যে উপনীত। রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে দুর্নীতির ঘ্রাণ আছে— রাহুল গাঁধী এ কথা অনেক দিন ধরেই বলছেন। গোড়ায় খুব বেশি গুরুত্ব পাচ্ছিল না বিষয়টা। কিন্তু বার বার অভিযোগটা নিয়ে সরব হয়েছেন রাহুল। ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের কথাতেও দুর্নীতির ইঙ্গিত রয়েছে। ফলে রাফাল কেনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে গোটা দেশের জিজ্ঞাসু দৃষ্টি এখন নরেন্দ্র মোদীর দিকে।
নরেন্দ্র মোদী অবশেষে রাহুল গাঁধীদের আক্রমণের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন। কংগ্রেস ক্ষমতা হারিয়ে খুইয়েছে ভারসাম্যও— নরেন্দ্র মোদী এমনই মন্তব্য করলেন। কিন্তু রাফাল দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গটি তাঁর মুখে একবারের জন্যও এল না। রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে কোনও দুর্নীতি হয়নি— এই কথাটিও নরেন্দ্র মোদী বললেন না।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
রামরাজ্যের স্বপ্ন দেখিয়ে নরেন্দ্র মোদীরা ক্ষমতায় এসেছিলেন। হিন্দু পুরাণের সেই রামচন্দ্র কিন্তু প্রজানুরঞ্জনের বিষয়ে এত উদাসীন ছিলেন না। রাজা রাম জানতেন, শুধু ভাল হলেই রাজার চলে না, ভাল হিসেবে প্রতিভাতও হতে হয়। প্রজার মনে সীতাকে নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল বলে অগ্নিপরীক্ষা আয়োজনের মতো বিতর্কিত তথা আধুনিক যুগে নিন্দিত পদক্ষেপও রামচন্দ্রকে নিতে হয়েছিল। কারণ রামচন্দ্র জানতেন যে, তিনি রাজা। তাই শুধু মর্যাদা পুরষোত্তম হলেই তাঁর চলবে না, মর্যাদা পুরষোত্তম হিসেবে নিজেকে প্রতিভাতও করতে হবে প্রজাকুলের সামনে।
আরও পড়ুন: সবে তো শুরু, তির রাহুলের
নরেন্দ্র মোদীরা রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার কথা বললেও রামায়ণের অনুসারি বোধহয় এখনও পুরোপুরি হয়ে উঠতে পারেননি। যদি তা পারতেন, তা হলে এত বড় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে গোটা দেশে হইচই শুরু হওয়ার পরে নরেন্দ্র মোদীরা নিশ্চয়ই এতটা চুপচাপ থাকতে পারতেন না। চুপচাপ থাকাটা কিন্তু ক্ষতিকর হচ্ছে। দেশের প্রধানমন্ত্রীকে সে কথা বুঝতে হবে। আর সত্যিই যদি রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা তাঁদের লক্ষ্য হয়, তা হলে নরেন্দ্র মোদীও নিশ্চয়ই অগ্নিপরীক্ষার আয়োজন করবেন। দেশবাসী আপাতত সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছেন। তাই নরেন্দ্র মোদীর উচিত, এ বার মুখটা খোলা। উচিত অগ্নিপরীক্ষার আয়োজন করা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy