Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

সুরক্ষার মূল্য

কর্মীর স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সকলের স্বার্থই সুরক্ষিত করে।

ছবি এপি।

ছবি এপি।

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

কর্মজীবন চালু করিবার সহিত মহামারি মোকাবিলার সংঘাত বাধিতেছে পদে পদে। বাজার হইতে ব্যাঙ্ক, খুলিবার কিছু দিন পরেই পুনরায় সংক্রমণের ভয়ে বন্ধ করিতে হইতেছে। এক দিকে কর্মজীবন স্বাভাবিক করিবার তাগিদ, অপর দিকে রোগ হইতে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, এই দুই দিক রক্ষা করিতে ব্যর্থ হইতেছে বহু প্রতিষ্ঠান। সময় আসিয়াছে এই সমস্যাটি বুঝিবার এবং তাহার প্রতিকার করিবার। বিদেশে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রের উপযোগী আলাদা নিরাপত্তা বিধি জারি করা হইয়াছে। রেস্তরাঁ, বস্ত্রবিপণি, ব্যাঙ্ক, সজ্জাগৃহ, দফতর, বিভিন্ন সংস্থার জন্য নির্দিষ্ট পালনীয় বিধি প্রস্তুত করিয়াছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টারা, তথা বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠন। পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি সেগুলি যেমন পালন করিতেছে, তেমনই ক্রেতা-উপভোক্তাদের উদ্দেশে প্রচারও করিতেছে। ভারতে বা এই রাজ্যে চিত্রটি ভিন্ন। কাজের প্রকৃতি অনুসারে কী ধরনের সুরক্ষার ব্যবস্থা প্রয়োজন, তাহার বিশদ বিধিব্যবস্থা তৈরি হয় নাই। সকল নাগরিকের জন্য পালনীয় কিছু সাধারণ বিধিই সব প্রতিষ্ঠান, সকল কর্মী পালন করিতেছেন। বিধি পালনে কোথায় ফাঁক থাকিতেছে, তাহার নিয়মিত নজরদারিও নাই। ফলে সংক্রমণ রুখিতে কোনও সংস্থা কয়েক ধরনের পরিষেবা বন্ধ করিতেছে, কেহ বা কিছু শাখা বন্ধ রাখিতেছে, কেহ কাজের সময় কমাইতেছে। কোনটি কার্যকর হইবে, কেহ নিশ্চিত নহে।

কর্মক্ষেত্র ও কাজের ধরন অনুসারে নির্দিষ্ট নিরাপত্তাবিধি তৈরি করিবার, তাহা পালন করিবার মতো যথাযথ প্রশিক্ষণ দিবার, এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করিবার সময় আসিয়াছে। বিশেষ করিয়া ভাবিতে হইবে সেই সকল কর্মীর কথা, যাঁহারা সরাসরি মানুষের সহিত কাজ করিতেছেন। তাঁহাদের মধ্যে প্রথম সারিতে অবশ্যই রহিয়াছেন তৃণমূল স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীরা। গ্রামে আশাকর্মী, এবং শহরে পুরসভার মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনাভাইরাস-সংক্রমণ প্রতিরোধের সকল প্রকার সরঞ্জাম বহু দিন পর্যন্ত সরবরাহ করা হয় নাই। এখনও তাঁহাদের নিয়মিত পরীক্ষা, নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিচ্ছিন্ন রাখিয়া নিরীক্ষার কোনও বিধি বলবৎ হয় নাই। সাফাইকর্মীদের জন্যও সুরক্ষা ও পরীক্ষার বিশেষ বিধি বলবৎ করা প্রয়োজন। যাত্রী পরিবহণে সুরক্ষা-সচেতনতা কিছু থাকিলেও, পণ্য পরিবহণে তাহা উপেক্ষিত। সরকারি ও বেসরকারি দফতরের অভ্যন্তরে দূরত্ব রাখিবার এবং মাস্ক পরিবার বিধি চালু হইয়াছে। কিন্তু ব্যাঙ্ক, বিমা অথবা সমবায় সমিতির যে সকল কর্মীরা সরাসরি জনপদে গিয়া গ্রাহকদের সহিত লেনদেন করিয়া থাকেন, তাঁহাদের কী ধরনের সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রয়োজন, কেমন সাবধানতা লইতে হইবে, সে বিষয়ে ব্যাঙ্ক বা সমবায় সমিতির স্পষ্ট নির্দেশ নাই।

কর্মীর স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সকলের স্বার্থই সুরক্ষিত করে। ভারতে সকল সুবিধাই শ্রেণি-বিভাজিত, তাই কোভিড-নিরাপত্তাতেও তৃণমূল স্তরের কর্মীরা অধিক উপেক্ষিত। কিন্তু বড় দফতর, বড় বিপণিও যে নিরাপদ নহে, তাহারও যথেষ্ট দৃষ্টান্ত মিলিয়াছে। অতএব প্রতিটি পেশাদার সংগঠন নিজ নিজ ক্ষেত্রের উপযুক্ত আচরণবিধি নির্মাণ করিবে, এবং সর্ব স্তরের কর্মীর সুরক্ষার ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করিবে, ইহাই প্রত্যাশিত। তাহাতে কিছু খরচ হইবে, কিন্তু বার বার কাজ বন্ধ করিবার মূল্যও কম নহে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy