Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
London Diary

প্লাক বসল আনা তড়খড়ের সমাধিতে

স্কটল্যান্ডের এডিনবরা শহরের মর্নিংসাইড সমাধিক্ষেত্রে শতবর্ষেরও বেশি সময় ধরে অপরিচয়ের আড়ালেই ছিল তাঁর সমাধি। সেই সমাধির কাছেই সম্প্রতি বসল একটি প্লাক।

london diary.

লন্ডন ডায়েরি। —ফাইল চিত্র।

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৩ ০৬:৫২
Share: Save:

কিশোর রবীন্দ্রনাথকে প্রথম ইংরেজি শিখিয়েছিলেন তিনি। এক সময়ে পড়েছিলেন কবির প্রেমেও। কবি তাঁর নাম দিয়েছিলেন ‘নলিনী’। কবিতাও লিখেছেন তাঁকে নিয়ে। ভারতের সেই কন্যা অন্নপূর্ণা তড়খড় পশ্চিমি বিশ্বের কাছে এত দিন অপরিচিতই ছিলেন। স্কটল্যান্ডের এডিনবরা শহরের মর্নিংসাইড সমাধিক্ষেত্রে শতবর্ষেরও বেশি সময় ধরে অপরিচয়ের আড়ালেই ছিল তাঁর সমাধি। সেই সমাধির কাছেই সম্প্রতি বসল একটি প্লাক। অন্নপূর্ণার জন্ম ১৮৫৮ সালের ৩১ জানুয়ারি। পরিবারের কাছে পরিচিত ছিলেন আনা নামে। ১৮৯১ সালের ২ জুলাই প্রসবজনিত জটিলতায় এডিনবরায় মৃত্যু হয় তাঁর। গত ২ জুলাই, তাঁর প্রয়াণবার্ষিকীতে ওই প্লাকটির উন্মোচন করেন বাঙালি লেখিকা ও শিক্ষাবিদ বাসবী ফ্রেজ়ার। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে আনা তড়খড়ের মৃত্যু বাসবীকে প্রভাবিত করেছিল। সহকর্মীদের সহায়তায় আনার সমাধিক্ষেত্রটি চিহ্নিত করেন বাসবী। প্লাকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাজানো হয় ব্যাগপাইপার। রবীন্দ্রনাথের লেখা কবিতা ‘ওগো নলিনী’ পড়ে শোনানো হয়। পড়া হয় আনাকে নিয়ে বাসবীর লেখা আর একটি কবিতাও।

ফের এক বাঙালি

রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের চিকিৎসক হিসাবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন সত্যজিৎ ভট্টাচার্য। এ বার নাকি তিনি নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। ‘সার্জন্ট সার্জন’ সত্যজিৎ ১৬ বছর ধরে রাজপরিবারের চিকিৎসক হিসাবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন। শুধু রানিরই নয়, তাঁর স্বামী ফিলিপেরও ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে ফিলিপের পেটে একটি বড়সড় অস্ত্রোপচারও করেন। সত্যজিৎ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রানির মৃত্যুর পরে তাঁর দায়িত্ব ফুরিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। নাইটহুড-সহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। জুনে রাজা তৃতীয় চার্লসের জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে তাঁকে ‘কমান্ডার অব দ্য রয়্যাল ভিক্টোরিয়া অর্ডার’ সম্মানে ভূষিত করা হয়। নিজের দায়িত্ব তিনি তুলে দিচ্ছেন আর এক বাঙালি চিকিৎসকের হাতে! প্রিন্স অব ওয়েলস থাকাকালীন চার্লসের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতেন লন্ডনের সেন্ট মেরিজ় হাসপাতালের চিকিৎসক রণন দাশগুপ্ত। রাজপরিবারের পরবর্তী ‘সার্জন্ট সার্জন’ হচ্ছেন তিনিই, দেখভাল করবেন রাজা তৃতীয় চার্লসের।

মৃত্যুঞ্জয়ী: তারুণ্যে আনা তড়খড় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (ডান দিকে)

মৃত্যুঞ্জয়ী: তারুণ্যে আনা তড়খড় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।

নাট্যকারের ক্রিকেটপ্রেম

স্যামুয়েল বেকেট এবং হ্যারল্ড পিন্টার— দুই নোবেল বিজয়ী নাট্যকারের মধ্যে মিল ছিল আরও একটি বিষয়ে। দু’জনেই ক্রিকেট খেলতে দারুণ ভালবাসতেন। ওয়েটিং ফর গোডো-র লেখক বেকেট হলেন একমাত্র নোবেলজয়ী যাঁর নাম প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার হিসাবে ‘উইজ়ডেন’-এর পাতায় ছিল। অন্য দিকে, দ্য বার্থডে পার্টি-র লেখক পিন্টার ছিলেন খ্যাতনামা ক্রিকেট ক্লাব গেইটিজ়-এর সদস্য। ব্রিটেনের এক বাঙালি শিক্ষক, নাট্যকার তথা ক্রিকেটার শমিত দত্ত এই দুই নাট্যকারের ক্রিকেট প্রেমকে এক সূত্রে গেঁথে, স্টাম্পড নামে নতুন নাটক তৈরি করেছেন। হ্যামস্টেড থিয়েটারে রমরমিয়ে চলছে সেটি। অ্যারিস্টোফ্যানিসের দ্য ফ্রগস নাটকের কাহিনির আদলে নিজের নাটকের গল্প সাজিয়েছেন শমিত। দ্য ফ্রগস-এ নিজের দুই প্রিয় নাট্যকার ইসকাইলাস এবং ইউরিপিডিসকে জীবনে ফিরিয়েছিলেন অ্যারিস্টোফ্যানিস। শমিতের কাহিনিতে দুই নাট্যকার ব্যাট করতে যাওয়ার আগে প্যাভিলিয়নে বসে গল্প জুড়েছেন। প্রেক্ষাগৃহে তিলধারণের স্থান নেই। একেবারে ছক্কা হাঁকিয়েছেন শমিত।

শিল্প: স্টাম্পড নাটকের দৃশ্য।

শিল্প: স্টাম্পড নাটকের দৃশ্য।

ফিরে দেখা

সালটা ১৯৭৬। লন্ডনের হ্যামারস্মিথ অ্যাপোলো-তে বাজনা বাজিয়েছিলেন চার শিল্পী। কর্নাটকি সঙ্গীত ও পশ্চিমি জ্যাজ়-এর মেলবন্ধনে তৈরি নিজেদের ব্যান্ডের নাম তাঁরা দিয়েছিলেন ‘শক্তি’। তবলায় জ়াকির হুসেন, বেহালায় এল সুব্রহ্মণ্যম, ঘটমে ভিক্কু বিনায়করাম এবং গিটারে ছিলেন জন ম্যাকলাফলিন। আইরিশ বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক জন ছিলেন পণ্ডিত রবিশঙ্করের সঙ্গীত দ্বারা প্রভাবিত। বিশ্বের দরবারে প্রথম বার ঘটমকে প্রবল জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন ভিক্কু। হ্যামারস্মিথ অ্যাপোলো-তে উদ্‌যাপিত হল ‘শক্তি’-র সুবর্ণজয়ন্তী। ৫০ বছর পরে ফের জ়াকির হুসেন এবং জন ম্যাকলাফলিনের বাজনার সঙ্গে সুর মেলালেন গায়ক শঙ্কর মহাদেবন। বেহালায় ছিলেন গণেশ রাজাগোপালন। ভিক্কুর ছেলে, সেলভা গণেশ বিনায়করাম বাজালেন ঘটম। ব্যান্ডের নতুন অ্যালবাম দিস মোমেন্ট-এর কিছু অংশও শোনা গেল অনুষ্ঠানে।

অন্য বিষয়গুলি:

London Diary queen elizabeth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE