সম্পাদকীয় ‘কলঙ্ক’ (৫-৭) পড়ে মনে জোর পেলাম। এক অত্যন্ত অপ্রীতিকর ঘটনার প্রতিবাদটি ঠিক ভাষায়, ঠিকমতো করা হয়েছে। দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়া আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথি হয়ে এসে এক ব্যক্তি ফতোয়া জারি করেন যে, সামনের কয়েকটা সারিতে বসা ভদ্রমহিলাদের পিছনের দিকে চলে যেতে হবে। কেননা তিনি নারীদের মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলবেন না। যাঁদের উদ্দেশে বলেছেন, তাঁরা ভারতের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা ‘সিএ’-তে সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন। দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের কাছে সবিনয়ে জিজ্ঞাসা, এমন একটি মহতী সভায় কেন এমন ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো হল? উদ্যোক্তারা কি তাঁর সম্পর্কে কিছুই জানতেন না? আর যদি জেনেই থাকেন, তা হলে এখনও পর্যন্ত কেন জোরালো প্রতিবাদ করা হল না? শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর উদ্বেগ প্রকাশ করেই কর্তব্য সারা হল। আর এমন ঘটনা ঘটল খাস কলকাতাতেই।
অন্য দিকে, যে সব উচ্চশিক্ষিত নারী ওই ব্যক্তির কথায় পিছনের সারিতে চলে গেলেন, তাঁদের উদ্দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলা দরকার। দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষায় যাঁরা সফল হয়েছেন, তাঁদের বিচার-বিবেচনা বোধ নিয়ে কোনও সংশয় থাকতে পারে না। কিন্তু তাঁরা কি করে এমন একটি ফতোয়া মেনে নিলেন? অবশ্য এটাও ঠিক, পরিস্থিতি তাঁদের বাধ্য করেছিল। কোনও রাজনৈতিক দল এর প্রতিবাদ করেছে বলে শোনা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে ভাবতে বাধ্য হচ্ছি, আমরা এগোচ্ছি না পিছিয়ে যাচ্ছি?
বিকাশ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-৫০
অপ্রীতিকর
সম্পাদকীয় ‘কলঙ্ক’-র পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি। সম্প্রতি কলকাতায় অনুষ্ঠিত সেই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যা হয়েছিল, তাকে ঘটনা না বলে ‘দুর্ঘটনা’ বলা উচিত। দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়া (আইসিএআই)-র বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন যিনি, তাঁর অযৌক্তিক আবদারমতো তাঁর বক্তৃতার সময়ে মহিলা শ্রোতাদের সামনের আসন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, তিনি নারীদর্শনে অনিচ্ছুক। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে মেয়েদের প্রতি এই চরম অপমানকর ঘটনা ঘটল এই মহানগরেই।
বক্তা নিজে সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ভুক্ত। সন্ন্যাসী বলতে আমরা বুঝি স্বামী বিবেকানন্দকে, যিনি নারীজাতিকে মায়ের আসনে বসিয়েছিলেন। স্বামীজির পরে বহু কাল অতিক্রান্ত। দেশও এগিয়েছে বলে শোনা যায়। কিন্তু এই সন্ন্যাসীর আচরণে প্রশ্ন জাগে, সার্বিক অগ্রগতি কি সত্যিই হয়েছে আমাদের? শোনা যায়, অনুষ্ঠানের এই প্রধান অতিথি ভাষণ দিয়েছেন ‘বিকশিত ভারত’-এর উপরে। নারী ছাড়া বিকশিত ভারত কি আদৌ সম্ভব? ভারতের সংসদে যেখানে নারীদের এক-তৃতীয়াংশ অংশগ্রহণের বিল পাশ হয়ে গিয়েছে, দেশের রাষ্ট্রপতি মহিলা, অর্থমন্ত্রী মহিলা, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও মহিলা, সেখানে এ রকম অপ্রীতিকর ঘটনা সত্যি দুর্ভাগ্যজনক। আরও অবাক লাগে উদ্যোক্তাদের আচরণে। তাঁরা এই অন্যায় আবদার মেনে নিলেন কেন?
অনুষ্ঠানে উপস্থিত মহিলা-পুরুষদের এক জনেরও এর প্রতিবাদ করার সাহস হল না? হয়তো প্রতিবাদ করলে পরে কেরিয়ারের ক্ষতি হতে পারে, এই ভাবনাতেই কেউ আর এগোননি। কিন্তু নিজেদের বিবেকের কাছে তাঁরা কী জবাব দেবেন? যে শিক্ষা মানুষকে সৎ করে, নির্ভীক করে, মানুষকে সম্মান দিতে শেখায়, সর্বোপরি ‘মানুষ’ বানায়— সেই শিক্ষারই যেন আজ বড্ড অভাব অনুভূত হচ্ছে।
সুনীত কুমার চট্টোপাধ্যায়, আনুলিয়া, নদিয়া
জবরদখল
অবৈধ নির্মাণ ও জবরদখল নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয়দের প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক উষ্মা ও সতর্কবার্তা গোটা রাজ্যের জন্যই প্রাসঙ্গিক। কলকাতা বা হাওড়ার যে সব অঞ্চল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বাস্তবে সেগুলি ছাড়া আরও বহু জায়গাই এই অরাজকতায় আক্রান্ত।
বড় বড় অবৈধ নির্মাণ বা জবরদখলগুলি সহজেই চোখে পড়লেও ছোট ছোট অনিয়মগুলিও কিছু কম নয়। এই প্রসঙ্গে ই এম বাইপাস সংলগ্ন অজয়নগর-মুকুন্দপুর অঞ্চলের কিছু জায়গার উল্লেখ করা দরকার। মুকুন্দপুর এখন একটি উচ্চমানের চিকিৎসা হাব। অনেকগুলি নামী হাসপাতাল রয়েছে এখানে। বাইপাস থেকে একটি নামকরা সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পর্যন্ত প্রায় চার-পাঁচশো মিটার রাস্তার দু’দিকের ফুটপাতের পুরোটাতেই ওই বেসরকারি হাসপাতালটি তাদের বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং দিয়ে ঘিরে রেখেছে। এক দিকের ঘিরে রাখা ফুটপাত জুড়ে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন চারাগাছ, ফলে সেখানে ওঠার কোনও উপায় নেই। আর অন্য দিকের ঘেরা ফুটপাত লাগোয়া রাস্তার উপর একটা লেনের পুরোটাই হয়ে উঠেছে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা। অবশিষ্ট রাস্তাটুকুর মাঝখান দিয়েই চলেছে দু’দিকের গাড়ি আর তার মাঝেই প্রাণ হাতে করে চলতে হয় পথচারীদের, যাঁদের মধ্যে বহু অসুস্থ ও বয়স্ক মানুষও রয়েছেন।
সত্যজিৎ রায় মেট্রো স্টেশনের কাছে মেট্রোপলিস মল থেকে বাঘাযতীন লেভেল ক্রসিং পর্যন্ত যেখানে আগে চায়ের দোকান, খাওয়ার দোকানে ভরা ছিল, সেখানে এখন হারানো ফুটপাত কিছুটা হলেও খুঁজে পেয়েছেন মানুষ। তবে আবার এখানে সামনের দিকে পসরা বসছে দেখে আশঙ্কা হয়, এই সুখ হয়তো ক্ষণস্থায়ী। আবার কোথাও কোথাও ফুটপাত জুড়ে গড়ে উঠেছে বা উঠছে বেশ কিছু মন্দিরও।
তা ছাড়া, মেট্রোপলিস মল থেকে অজয়নগর পর্যন্ত বাইপাসের সার্ভিস লেন সামান্য বৃষ্টিতেই অনেক জায়গায় ডুবে যায়। সেখানে চলাচলের জন্য ফুটপাতই ভরসা। প্রথমে জলনিকাশির নয়ানজুলি বন্ধ করে হল দোকানপাট, তার পর এখন সেখানেই তৈরি হয়েছে ফুটপাত। নগরায়নে সরকারি পরিকল্পনার উদাসীনতা ও ভ্রান্তিই শহরবাসীর দুঃখের কারণ হয়ে উঠেছে। আশা রাখা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় পুর-প্রতিনিধিরা এই বিষয়ে তাঁদের নিজেদের কর্তব্য পালন করবেন।
তুষারকান্তি নন্দ, কলকাতা-৯৪
স্কুলের পোশাক
প্রথম প্রথম বিদ্যালয় থেকে ছাত্রছাত্রীদের পোশাকের মাপ নিয়ে যাওয়া হত। তার পর নাম, শ্রেণি, রোল নম্বর কাগজে সেঁটে সেই প্যাকেট নির্দিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রীকে দেওয়া হত। এতে ছাত্রছাত্রীদের পোশাকের মাপে সমস্যা হত না। পোশাক দিতেও সুবিধা হত। কিন্তু বর্তমানে তা আর করা হয় না। শ্রেণি অনুযায়ী একটা গড় মাপের পোশাক এনে দেওয়া হচ্ছে। প্রতি শ্রেণিতেই হরেক চেহারার ছাত্রছাত্রী থাকে। এর ফলে সবার পোশাক ঠিক মাপমতো হচ্ছে না। এ বছরও মাপ ছাড়াই পোশাক দেওয়া হয়। তা ছাড়া, পোশাকগুলি কোনও প্যাকেটেও দেওয়া হয়নি। প্রতি বছর যাতে ছাত্রছাত্রীদের সঠিক মাপ নিয়ে গিয়ে সব কিছু লিখে প্যাকেটে সেঁটে পোশাকটা দেওয়া হয়, সেই দিকে নজর দিক প্রশাসন।
মঞ্জুশ্রী মণ্ডল, রামনগর, হুগলি
আন্ডারপাস চাই
নিউ টাউনে টাটা মেডিক্যাল ক্যানসার হসপিটালের সামনের রাস্তায় একটা আন্ডারপাস একান্তই দরকার উল্টো দিকে যাওয়ার জন্য। কলকাতার দিকে যাওয়ার জন্য নিউ টাউন থানার সামনের বাসস্ট্যান্ডে যেতেই হবে, অন্য কোনও পথ নেই। কিন্তু ভদ্র ভাবে নিরাপত্তার সঙ্গে রাস্তা পার হওয়ার মতো পরিস্থিতিই নেই ওখানে।
অজয় চৌধুরী, রাজারহাট, উত্তর ২৪ পরগনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy