জনমানসে নেতাদের প্রতি বিদ্বেষ ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
প্রতি বছর ঠিক সময়ে রাজ্য সরকারি অফিসারদের সম্পত্তির হিসাব দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। এই নির্দেশিকা সময়োপযোগী। এতে অফিসারদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি জনসাধারণের কাছে স্পষ্ট হবে। বাম আমলে এ বিষয়ে সরকার কড়া মনোভাব দেখাত। তৃণমূল সরকার প্রথম দিকে এই নিয়ম মানলেও, পরবর্তী সময়ে নরম মনোভাবের ফলে আর সে ভাবে আমলারা সম্পত্তির হিসাব দিচ্ছেন না বলে প্রকাশ। অন্য দিকে, সম্পত্তির হিসাব চাওয়ায় আমলারা অনেকেই অন্য এক সঙ্কেত দেখতে পাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই এই রাজ্যের বেশ কয়েক জন আইপিএস-এর নাম উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ও ইডির তালিকায়। এ ছাড়াও ইডি এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতিতে বেশ কয়েক জন আইএএস এবং ডব্লিউবিসিএস অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাতে বহু তথ্য মিলেছে বলেও জানা গিয়েছে। তাই তৎপরতার সঙ্গে ইডি বেশ কয়েক জন আমলাকে ধরে মূল চক্রান্তকারীর সকলকেই ধরার চেষ্টা করছে।
ইডি ও সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এসএসসি-সহ অন্যান্য আর্থিক দুর্নীতিতে সঠিক তদন্ত করে জনসাধারণের মনে নিজেদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করছে। আর সেই দিকে তাকিয়েই সম্ভবত নবান্ন থেকে অফিসারদের নিয়মিত সম্পত্তির হিসাব দাখিল করার উদ্যোগ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। অবশ্য, সম্পত্তির হিসাব শুধু অফিসারদেরই নয়, জনগণ চাইছেন— গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি থেকে প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও সভাপতি, পদে থাকা বিভিন্ন কর্মাধ্যক্ষের প্রতিও এই নির্দেশিকা জারি হোক। শুধু পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি নয়, জেলা পরিষদের সদস্য, জেলা পরিষদের সভাপতি, সহ সভাধিপতি ও বিভিন্ন পদাধিকারী কর্মাধ্যক্ষ এবং পুরসভার কাউন্সিলর থেকে মেয়র, এমনকি বিধায়ক, সাংসদদেরও প্রতি বছর সঠিক সময়ে সম্পত্তির হিসাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হোক। আমরা দেখতে পাচ্ছি, এঁদের মধ্যে অনেকে কিছু দিনের মধ্যেই জীবনযাপনের মান বদলে ফেলছেন। যে জনপ্রতিনিধির বাড়ি-গাড়ি ছিল না, হঠাৎ কয়েক বছরের মধ্যে বাড়ি, গাড়ি ও বিলাসবহুল জীবনযাপনে তিনি মত্ত হয়ে উঠছেন। জনসেবার ব্রত নিয়ে কাজে নেমে নিজেদের আখের গুছিয়ে নেওয়া এবং এ-হেন প্রতিপত্তি বৃদ্ধি কেউ মেনে নিতে পারছেন না। সেই কারণেই জনমানসে নেতাদের প্রতি বিদ্বেষ ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
প্রকৃত জননেতা তৈরি হতে গেলে জনপ্রতিনিধিদেরও দৃঢ় সঙ্কল্পবদ্ধ হয়ে মানবসেবায় নিয়োজিত হতে হবে। নবান্নের আধিকারিকদের সঙ্গে সমস্ত স্তরের জনপ্রতিনিধিদেরও সম্পত্তির হিসাব নেওয়ার নির্দেশ জারি করা একান্ত প্রয়োজন।
শ্রীমন্ত পাঁজা, গঙ্গাধরপুর, হাওড়া
বৈষম্য, আজও
‘কটূক্তি ভারতীয়কে, গ্রেফতার’ (২৭-৮) সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লিখিত ঘটনাটি স্মরণ করিয়ে দিল প্রাচীন কাল থেকে চলে আসা আমেরিকার বর্ণবিদ্বেষের কথা। কৃষ্ণাঙ্গ মানুষকে জোর করে ধরে এনে তাদের দাসে পরিণত করার ঘটনা কারও অজানা নয়। ১৫২৫ সাল থেকে ১৮৬৬ সালের মধ্যে প্রায় সাড়ে বারো মিলিয়ন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষকে আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন উপকূল থেকে জোর করে ধরে শিকলবন্দি করে পাঠানো হয় আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে। “এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে/ নখ যাদের তীক্ষ্ণ তোমার নেকড়ের চেয়ে”— কবিগুরুর ‘আফ্রিকা’ কবিতাতেও আমরা এই ঘটনাগুলির উল্লেখ পেয়েছি। আর শুধু অতীতে নয়, বর্তমানেও এই ঘটনাগুলি ঘটছে যা একেবারেই কাম্য নয়। উন্নত দেশগুলির প্রথম সারিতে রয়েছে আমেরিকা। অথচ, সেই দেশেই এমন ঘটনা তাদের শ্রেষ্ঠত্বের উপর প্রশ্নচিহ্ন তুলে দেয়।
প্রসঙ্গত, টেক্সাসে চার জন ভারতীয় বংশোদ্ভূতের উপর চড়াও হন এক জন মেক্সিকান-আমেরিকান মহিলা। শুধু তা-ই নয়, ভারতীয় মহিলাদের প্রতি ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও তোলেন তিনি। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের পাশাপাশি চলতে থাকে গুলি করে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও। এই ধরনের বিদ্বেষমূলক ঘটনা আমাদের লজ্জিত করে। ভারতীয় মেধা সমগ্র বিশ্বে প্রতিনিয়ত তার যোগ্যতা প্রমাণ করে চলছে। যেমন— গুগল-এর বর্তমান সিইও সুন্দর পিচাই, মাইক্রোসফটস-এর সিইও সত্য নাদেল্লা, আমেরিকার বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, নিউ জ়িল্যান্ডের প্রাক্তন গভর্নর জেনারেল আনন্দ সত্যানন্দ, আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানী অশ্বিন ভাসাভাদা, কিছু দিন আগে পর্যন্ত ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে এগিয়ে থাকা ঋষি সুনক প্রমুখ। এ ছাড়া আরও অনেক ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী, খেলোয়াড়, রাজনীতিবিদ নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন।
আধুনিকতার সঙ্গে সমগ্র পৃথিবীর বুক থেকে মুছে যাক বর্ণবৈষম্য নামক ঘৃণা। ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’— এই ভারতীয় আদর্শই পথ দেখাক সমগ্র বিশ্বকে।
দিগন্ত চক্রবর্তী, জাঙ্গিপাড়া, হুগলি
নার্সিং কলেজ
অনেকেই এ রাজ্যে জয়েন্ট-এর মাধ্যমে নার্সিং পড়ার সুযোগ না পেয়ে, কিংবা বেসরকারি কলেজগুলোর খরচের বহর দেখে অপেক্ষাকৃত কম খরচে কোথায় পড়া যেতে পারে, তার তালিকা খুঁজতে শুরু করে দেন। আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগান কিছু অসৎ শিক্ষা ব্যবসায়ী। এমন ভাবে প্রচার করা হয় যে, ছাত্রছাত্রী বা অভিভাবক— কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় কলেজটি সত্যিই ইন্ডিয়ান নার্সিং কাউন্সিল বা ওয়েস্ট বেঙ্গল নার্সিং কাউন্সিল দ্বারা স্বীকৃত কি না। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে এই রকম ২৪১টি কলেজকে ইন্ডিয়ান নার্সিং কাউন্সিল বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাতিল বলে উল্লেখ করেছে। অতএব, সাবধান থাকাই বাঞ্ছনীয়।
সুজিত কুমার মাহাতো, গোলবেড়া, পুরুলিয়া
আনন্দমঠ
সম্প্রতি জানা গেল, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দমঠ উপন্যাস অবলম্বনে ১৭৭০ নামক সিনেমা তৈরি হচ্ছে দক্ষিণ ভারতে। এ প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমে প্রশ্ন উঠতে দেখছি, কোনও বাঙালি পরিচালক আনন্দমঠ নিয়ে কেন ছবি বানালেন না? এ প্রসঙ্গে বলি, আনন্দমঠ উপন্যাস নিয়ে প্রথম সিনেমা তৈরি হয়েছিল এই বাংলাতেই, ১৯৫১ সালে। আনন্দমঠ নামে সেই ছবিটি করেছিলেন পরিচালক সতীশ দাশগুপ্ত। অভিনয় করেছিলেন সুনন্দা দেবী, অনুভা গুপ্ত, স্বাগত চক্রবর্তী, অহীন্দ্র চৌধুরি, কমল মিত্র, বিপিন গুপ্ত, জহর রায়, তুলসী চক্রবর্তী, গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রমুখ। ছবিটিতে সুরারোপ করেছিলেন সুবল দাশগুপ্ত। তাঁর সুরে ছবিতে শোনা যায় ‘বন্দে মাতরম্’, ‘দড়বড়ি ঘোড়া চড়ি কোথা তুমি যাও রে’ প্রভৃতি গান। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতী, অরুণা, রূপবাণী প্রেক্ষাগৃহে।
এর পর ১৯৫২ সালে হিন্দিতে হয়েছিল আনন্দমঠ। ফিল্মিস্তান ব্যানারের ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন হেমেন গুপ্ত। অভিনয় করেছিলেন প্রদীপ কুমার, ভরত ভূষণ, পৃথ্বীরাজ কপূর, অজিত প্রমুখ তারকা। সুরকার ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। আনন্দমঠ-ই তাঁর সুরারোপিত প্রথম হিন্দি ছবি। ছবিটি ৩০ জুন ১৯৫২ সালে মুক্তি পায়। তামিল ভাষাতেও ডাবিং হয়।
বিশ্বনাথ বিশ্বাস, কলকাতা-১০৫
অন্ধ্রপ্রদেশ নয়
‘চক্ষুরুন্মীলিতং যেন’ (৪-৯) সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে ‘... অন্ধ্রপ্রদেশের ব্যপম কেলেঙ্কারির কথা...’। ব্যপম কেলেঙ্কারি অন্ধ্রপ্রদেশে নয়, মধ্যপ্রদেশে হয়েছিল।
নিশানাথ ভট্টাচার্য , আনগুনা, পূর্ব বর্ধমান
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy