—প্রতীকী ছবি।
তূর্য বাইন ‘এও এক সামাজিক অপরাধ’ (১৮-১২) প্রবন্ধে এক অত্যন্ত সময়োচিত ও প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। অল্পবয়সি ছেলেদের মধ্যে অশ্লীল শব্দ ব্যবহারের প্রবণতা অতীতেও অল্পবিস্তর ছিল। কিন্তু বর্তমানে এই প্রবণতা যেন বয়সের গণ্ডি ছাড়িয়ে ক্রমবর্ধমান। রাস্তাঘাটে, ট্রেনে, বাসে, হাটে, বাজারে সর্বত্র স্কুল-কলেজের ছেলে (কোনও ক্ষেত্রে মেয়েদের মধ্যেও) থেকে মাঝবয়সি, এমনকি প্রৌঢ়দের মধ্যেও অশালীন শব্দের ব্যবহার স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। শুধু যে ক্রোধ প্রকাশের জন্য অপশব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে তা নয়, অত্যন্ত স্বাভাবিক কথাবার্তা, গল্প করার সময়, বা সাধারণ আলোচনার ক্ষেত্রেও অশ্লীল শব্দ ব্যবহার হচ্ছে কথার মাত্রা বা অলঙ্কার হিসাবে।
মনে হয়, সাধারণ ভাবে মানুষের সার্বিক রুচির অবনমনের ফলেই এ রকম ঘটনা ঘটছে। আমাদের চার পাশের শিক্ষিত, অশিক্ষিত সমস্ত মানুষের জীবনের নীতি নৈতিকতার, সংস্কৃতির এবং দৈনন্দিন জীবনশৈলীর সামগ্রিক মানের অধঃপতনের কারণেই তাঁরা নিম্ন রুচি ও সংস্কৃতির শিকার হয়ে পড়ছেন। এখন অনেক আধুনিক সিনেমাতেও অশ্লীল ভাষা প্রয়োগের ঝোঁক ক্রমবর্ধমান। ওটিটি সিরিজ়গুলো তো আরও এককাঠি উপরে। হিংস্রতা, ক্রূরতা আর অপশব্দ প্রয়োগে কে কাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে, তার প্রতিযোগিতা চলে। যাঁরা সমাজমাধ্যমে সক্রিয়, তাঁরা জানেন কী পরিমাণ ভাষাসন্ত্রাস চলে সেখানে। যদিও এ সব কোনও কিছুই অপশব্দ ব্যবহারকে যৌক্তিকতা দেয় না। কিন্তু সমাজের সামগ্রিক রুচির নিম্নগামিতার জন্য যে এগুলো কিয়দংশে দায়ী, তা অস্বীকার করা যায় না।
প্রবন্ধকার যথার্থই বলেছেন, অশ্লীল ভাষা ও মন্তব্য হল ক্রোধ বা হতাশার বহিঃপ্রকাশ, এবং এর থেকে উত্তরণ হল প্রকৃত শিক্ষা। কিন্তু প্রকৃত শিক্ষা আজ কোথায়! কে দেবে সেই শিক্ষা? যেখানে পুরো সমাজটাতেই ঘুণ ধরে গিয়েছে, যেখানে অনুকরণযোগ্য কোনও আদর্শবান মানুষ নেই, নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা চরম দুর্নীতিবাজ ও সুবিধাবাদী, সেখানে সাধারণ মানুষ প্রকৃত শিক্ষা পাবেন কী করে! তাই রুচি, সংস্কৃতির অবনমন ও সমাজের সার্বিক অধঃপতন দেখে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।
সুরজিৎ কুন্ডু, উত্তরপাড়া, হুগলি
গুরুত্বহীন
তূর্য বাইনের প্রবন্ধটি নিয়ে কিছু বলার তাগিদ অনুভব করলাম। কোনও এক বিশেষ জাতিকে মনুষ্যেতর জীবের সমগোত্রীয় প্রতিপন্ন করা কি সামাজিক অপরাধ নয়? ট্রেনে, বাসে মানুষজনের কথাবার্তা, অঙ্গভঙ্গিকে যেমন সামাজিক অপরাধের তকমা লাগানো হচ্ছে, তেমন অফিসকাছারিতে বিভিন্ন কাজে আগত মানুষদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করাও সামাজিক অপরাধের মধ্যেই পড়ে। তবে কোনও বিষয়কে সামাজিক অপরাধ রূপে গণ্য করার কোনও মাপকাঠি আদৌ আছে কি? অপশব্দ প্রয়োগ না করেও কারও মর্যাদায় বা নিরাপত্তা বোধে আঘাত করা যায়। কথোপকথন বা ভাষার প্রয়োগ নিয়ে বিস্তর লেখালিখি হয়েছে। অনেক উপন্যাসের ক্ষেত্রে শব্দচয়ন যথেষ্ট বিতর্কিত। তা বলে সেই সব শব্দের ব্যবহারকে সামাজিক অপরাধরূপে দাগিয়ে দেওয়া সঙ্গত কারণেই হয়নি। সুতরাং, ট্রেনে, বাসের তাৎক্ষণিক সময় অতিবাহিত করার ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
সুবীর ভদ্র, নরেন্দ্রপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
যন্ত্রণার রেল
দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের উপর নির্ভর করে যাঁরা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন, তাঁদের কাছে রেলযাত্রা এখন যন্ত্রণাময় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন-তখন ট্রেন বাতিলের কথা ঘোষণা এখন নিত্যদিনের ব্যাপার। লোকাল ট্রেন এক থেকে দু’ঘণ্টা দেরিতে চলা প্রতি দিনের ঘটনা। এক জন যাত্রী কখন তাঁর গন্তব্যে পৌঁছবেন, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। যাত্রীরা বিনা টিকিটে, অনিবার্য কারণে যাত্রা বাতিল করলে, প্ল্যাটফর্ম টিকিট না কাটলে তাঁর কাছ থেকে জরিমানা আদায় করে রেল। রেল কেন নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে না পারলে যাত্রীদের জরিমানা দেবে না? লক্ষ লক্ষ শ্রমদিবস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রেলের দায়িত্বজ্ঞানহীনতায়। একটা ট্রেন বাতিল করলে বাধ্য হয়ে ফিরতি পথের যাত্রাও বাতিল করেন যাত্রীরা, সেখানেও তাঁদের টিকিট বাতিলের জন্য অতিরিক্ত টাকা গচ্চা দিতে হয়। রেলের অপদার্থতার জন্য যাত্রীদের থেকে কেন জরিমানা আদায় করা হবে? যাঁদের গাফিলতিতে রেলের সময়ানুবর্তিতা নষ্ট হয়েছে, তাঁদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা এবং রেলের সময়ানুবর্তিতা ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।
অজয় দাস, উলুবেড়িয়া, হাওড়া
বঞ্চনা
সর্বশিক্ষা অভিযানকে সফল করার লক্ষ্যে ২০০৪ সালে মেধার ভিত্তিতে স্থানীয় ভাবে পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। বর্তমানে পার্শ্বশিক্ষকরা প্রাথমিক স্কুলে ১০,৬০৯ টাকা, এবং উচ্চ প্রাথমিকে ১৩,৭৯২ টাকা ভাতা পান। স্থায়ী শিক্ষকেরা পার্শ্বশিক্ষকদের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পান। একই জায়গায়, একই যোগ্যতায়, একই কাজ করা সত্ত্বেও পার্শ্বশিক্ষকরা বঞ্চিত। বিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের কাজের পাশাপাশি পার্শ্বশিক্ষকরা বিদ্যালয় বহির্ভূত নানা কাজ, যেমন চাইল্ড রেজিস্টারের কাজ, ভোটার তালিকা সংশোধন-সহ বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। অথচ, দীর্ঘ পাঁচ বছর (২০১৮ সাল থেকে) পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন বাড়েনি। এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে তাঁদের পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। এই দীর্ঘ আর্থিক বঞ্চনা দূর হোক।
সিনথল ঘোষ, রানাঘাট, নদিয়া
ভক্তের দুর্ভোগ
বছরের প্রথম দিন কালীঘাটের মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে ফের হয়রানির মুখে পড়লেন ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। পান্ডা আর সেবায়তদের একাংশের জন্য নানা অনিয়মের বলি হতে হচ্ছে তাঁদের। দেশের অধিকাংশ বড় মন্দিরে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু কালীঘাটের মন্দিরে সে সবের বালাই নেই। সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়, রাজনৈতিক নেতা-সহ ভিআইপি-রা গেলে তাঁদের সহায়তার জন্য অনেক পান্ডা, সেবায়তরা ভিড় জমান। যাতে দ্রুত দর্শন হয়, তার ব্যবস্থা করা হয়। সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁদের সেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে দেখা যায় না কেন? মন্দিরের স্থাপত্যের সংস্কার করার জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একটি কর্পোরেট সংস্থাকে নিয়োজিত করা হয়েছে, কিন্তু যাঁদের জন্য মন্দির, সেই ভক্তদের জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা হবে কবে?
অচিন্ত্য মালাকার, কলকাতা-২৬
রুচিহীন
‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’ (২৩-১২) সম্পাদকীয়ের পরিপ্রেক্ষিতে এই পত্র। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এক জন আইনজীবী। তাই মুখে তিনি ‘মিমিক্রি’ বা অনুকরণকে ‘শিল্প’ বলতে চাইলেও এটি যে আইনত শাস্তিযোগ্য গণ্য হবে, তা বিলক্ষণ জানেন। আরও খারাপ লাগল রাহুল গান্ধীর আচরণ। এই ধরনের নিম্ন মানের আচরণ শুধুমাত্র ওই দুই দলের নয়, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের মর্যাদাও ক্ষুণ্ণ করতে বাধ্য। জগদীপ ধনখড় যদি ভুল করেও থাকেন, তা হলেও উপরাষ্ট্রপতির প্রতি এমন আক্রমণ রুচিহীনতার পরিচয়। দেশে নিন্দার ঝড় উঠেছে, কেবল তৃণমূল নীরব। তবে কি ধরে নিতে হবে, এমন কুরুচিপূর্ণ অনুকরণ তৃণমূলের সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ?
অশোক বসু, বারুইপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy