Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Superstitions

সম্পাদক সমীপেষু: অন্ধকারের পথে

বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলা তথা ভারত জুড়ে কুসংস্কার বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। নেতা-মন্ত্রী থেকে সাধারণ মানুষ, জ্ঞানত বা অজ্ঞানত শামিল হয়ে পড়ছেন।

A Photograph indicating Superstitions

গত বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলা তথা ভারত জুড়ে কুসংস্কার বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রতীকী ছবি।

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ ০৪:৪৪
Share: Save:

সোহিনী দত্তের চিঠি ‘কুসংস্কার বৃদ্ধি’ (৩০-১)-র পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করি। গত বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলা তথা ভারত জুড়ে কুসংস্কার বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বিভিন্ন ভাবে শিক্ষার অঙ্গনে এবং সামাজিক ক্ষেত্রে অবিজ্ঞান ও কুযুক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া এবং অপবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান হিসেবে তুলে নিয়ে আসার ধারাবাহিক প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই প্রচেষ্টায় নামকরা নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও জ্ঞানত বা অজ্ঞানত শামিল হয়ে পড়ছেন। এবং এর উত্তরোত্তর বৃদ্ধিই আমাদের মতো মানুষের মনে ভয়ের সঞ্চার করে।

এই প্রসঙ্গে বেশ কয়েক বছর আগে পদার্থ বিজ্ঞানে ডক্টরেট করা তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুরলী মনোহর জোশীর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে জ্যোতিষ শাস্ত্র অন্তর্ভুক্তির চেষ্টাকে স্মরণ করা যায়। কোনও কোনও রাজনৈতিক নেতা গোমূত্রকে ক্যানসারের ওষুধ এবং করোনার প্রতিষেধক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। কেউ গরুর দুধে সোনা খুঁজে পাচ্ছেন, আবার কেউ পৌরাণিক কাহিনিতে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাল্পনিক প্রমাণ দেখতে পাচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে গণেশের মাথায় হাতির মাথা বসানোকে প্লাস্টিক সার্জারির প্রমাণ হিসাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টাও হয়েছে। এমন সব উক্তি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যুক্তি-বুদ্ধি সম্পর্কে নিঃসন্দেহে প্রশ্নচিহ্ন তুলে দেয়।

বিজ্ঞান শিক্ষা (শুধু ডিগ্রি পাওয়া নয়) এবং তার ফলস্বরূপ যে যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনা এক সময় বাংলা তথা ভারতীয় শিক্ষিত সমাজকে এক উন্নত দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী করে তুলেছিল, সেই অবস্থা বর্তমানে অতি ক্ষীণ, বা বলা যায় প্রায় বিলুপ্ত। অতি সুকৌশলে অপবিজ্ঞানকে ছাত্রসমাজের কাছে শিক্ষার পরিধির মধ্যে এবং সাধারণ মানুষের কাছে টেলিভিশন সিরিয়াল বা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বার বার তুলে ধরা হচ্ছে। একটু লক্ষ করলেই দেখা যাবে, গত কয়েক বছর ধরে সারা দেশ জুড়েই ধর্মীয় উন্মাদনা এবং ধর্মের হাত ধরে কুসংস্কার জাঁকিয়ে বসেছে। যার ফলে পৌরাণিক কাহিনিতে বা লোকায়ত ব্রত কথার মধ্যে যে কুসংস্কার রয়েছে তারও স্ফুরণ ঘটেছে। এর আগে সাধারণ শিক্ষিত বাঙালি তার দৈনন্দিন জীবনচর্যার মধ্যে কখনওই ধর্মকে মনুষ্যত্বের উপর স্থান দেয়নি, এবং গুরুগম্ভীর ভাবে ধর্মচর্চা করেনি। ধর্ম ও ধর্মীয় প্রথাকে হালকা চালে নেওয়াই আমাদের ঐতিহ্য। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বা রাজশেখর বসুর অনেক লেখাই উদাহরণ হিসাবে স্মরণ করা যেতে পারে। দেবতাদের ঘরের ছেলে করে নিজের মতো সাজিয়ে নিতেই আমরা যেন অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি।

যে গতিতে এবং যে পরিমাণে আমাদের দেশে বর্তমানে কুসংস্কারের বৃদ্ধি লাভ হচ্ছে এবং দেশ ক্রমশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে, মনে হয় খুব শীঘ্রই আমরা সবুজ বিপ্লব ও শ্বেত বিপ্লবের পরে কৃষ্ণ বিপ্লবেরও সাক্ষী থাকব।

সুরজিত কুন্ডু, উত্তরপাড়া, হুগলি

জলের অপচয়

বর্তমানে প্রায় প্রত্যেকটি গ্রামে পানীয় জল সরবরাহ করা হয় সজলধারা প্রকল্পের মাধ্যমে। এই প্রকল্পের সুপ্রভাব যেমন আছে, তেমন কুপ্রভাবও কম নেই। উক্ত প্রকল্পে অনেক জায়গায় রাস্তার পাশে সব ক্ষেত্রে কল থাকে না, আবার ২৪ ঘণ্টা জল সরবরাহ করাও হয় না। তাই দুর্ভোগে পড়ছেন পথযাত্রীরা। শহরে বোতল ভর্তি জল কিনতে পাওয়া গেলেও গ্রামের দিকে পাওয়া যায় না। সুতরাং, সজলধারা প্রকল্পে ট‍্যাঙ্ক ও পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ না করে প্রত্যেক পাড়ায় টিউবওয়েলের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করলে কম খরচে বেশি ফল পাওয়া যাবে। বিশেষ করে গ্রামের দিকে এই প্রকল্পের নানা অসুবিধা রয়ে যাচ্ছে। পাইপ লাইন বসানো-সহ বিভিন্ন কাজ করার সময় সুষ্ঠু ভাবে কাজ না করায় পাইপ লাইনের জয়েন্টে ফাটল ধরেছে এবং ফেটে যাওয়া পাইপের অংশ থেকে জল বার হচ্ছে অধিক পরিমাণে। মাটির নীচে অবস্থিত পাইপের ফাটা অংশগুলো সকলের চোখের আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। সরকারি দফতর থেকে এগুলো দেখাশোনার জন্য কোনও লোক রাখা হচ্ছে না। রাস্তার অনেক কলে কারণ ছাড়াই জল নষ্ট হচ্ছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা অকারণে কল খুলে রেখে যাচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়া কলগুলোর জল অপচয় বেশি হতে দেখা যাচ্ছে। সরকারি দফতর থেকে যতই প্রচার করা হোক না কেন যে, ‘জল অপচয় করবেন না’, সেই কথা কেউ আমল দিচ্ছেন না। তবে জলের অপচয় কমানোর জন্য সরকারেরও সে রকম উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে না। তাই ব্যয়বহুল সজলধারা প্রকল্পের সাফল্য নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েই যায়। সবার আগে পরবর্তী প্রজন্মকে জলসঙ্কট থেকে রক্ষা করা বর্তমান মানুষের প্রধান কর্তব্য— এ কথা ভুলে গেলে চলবে না।

রবীন্দ্রনাথ দাস, কুমিরতড়া, বীরভূম

অসহযোগী

ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের ডায়মন্ড হারবার শাখার গ্রাহক পরিষেবাটি চূড়ান্ত হতাশাজনক। আমি গত এক মাসের মধ্যে তিন বার কেওয়াইসি জমা করেছি। প্রথম বার কেওয়াইসি জমা নিয়েও কিছু দিনের মধ্যে আমার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন নতুন করে কেওয়াইসি জমা করার জন্য বলা হয়। সেটা জমা করার পরও পরিষেবা চালু করা হয়নি। কিছু দিন পর ব্যাঙ্কে গিয়ে পুনরায় কেওয়াইসি জমা করার পর অ্যাকাউন্ট চালু হয়। এখন সমস্যা হল, কেওয়াইসি জমা করার পর তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। ন্যূনতম পাসবইতে লেখা পর্যন্ত হয় না। কোনও রকম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা থাকে না, অথচ কোনও কাজ করার কথা বললেই নির্দিষ্ট দিন কিংবা সময় বলে দেওয়া হয়। নমিনি নথিভুক্ত করার জন্য নির্দিষ্ট সময় আছে। এমনকি কোনও গ্রাহকের মৃত্যুর পরে তাঁর প্রাপ্য টাকা নমিনিকে পেতে গেলে বা আবেদন করতে হলে সপ্তাহের বিশেষ দিন আছে। সাধারণ মানুষের নাজেহাল অবস্থা। এক টেবিল থেকে আর এক টেবিলে ঘুরতেই দিন শেষ হয়ে যায়। কোনও কিছু জমা করলে তখনই সমাধান মেলে না। গত কয়েক মাসে একাধিক বার ব্যাঙ্কে গিয়ে মনে হয়েছে, কাজের জন্য যেন আন্তরিকতার অভাব রয়েছে কর্মীদের। তাই এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে সমস্যার সমাধান হয়।

সৈয়দ সাদিক, ইকবালসিমলা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

সুষ্ঠু চিকিৎসা

সংবাদ থেকে জানলাম, আমাদের রাজ্য সরকার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডধারীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে আরও টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। ভাল খবর। তবে অন্য একটা দিকের কথাও এই প্রসঙ্গে প্রশাসনকে অবহিত করতে চাই।

কিছু দিন আগে এনআরএস হাসপাতালে গিয়েছিলাম অর্থোপেডিক-এর বহির্বিভাগে আমার হাঁটু দেখাতে। সেখানে দেখানোর সময় মনে একটাই প্রশ্ন জাগে, সাধারণ মানুষের কি কোনও অধিকার নেই একটু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায় লাইনে দাঁড়িয়ে বহির্বিভাগের টিকিট কাটার? আমি যে কোনও সরকারি আধিকারিককে অনুরোধ করব যে, কোনও দিন এক বার ওখানে গিয়ে দেখুন মানুষেরা কেমন করে দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট কাটেন। মাথার উপরে কোনও শেড নেই, রোদে পুড়ে, জলে ভিজে তাঁরা দাঁড়িয়ে আছেন। এখানে কি একটা শেড তৈরি করা যায় না? আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা? হাসপাতাল চত্বর কি এমনটাই থাকা উচিত? প্রশাসনের কাজ নয় কি প্রয়োজনে মানুষের পাশে থাকার, মানুষের ছোটখাটো জিনিসগুলোর দিকে একটু নজর দেওয়ার? দরকার পড়লে সাধারণ মানুষকেও সরকারের এই প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। হলফ করে বলতে পারি, এমন পদক্ষেপের ক্ষেত্রে অনেকেই পিছপা হবেন না, বরং বাড়িয়ে দেবেন সাহায্যের হাত।

দেবব্রত নন্দী, মধ্যমগ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা

অন্য বিষয়গুলি:

Superstitions Strange Superstitions
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy