২০১৯ সালে আমি আইআইটি খড়্গপুরের কলা বিভাগে রিসার্চ স্কলার হিসেবে ভর্তি হই। পড়ার খরচের জন্য গত বছর জুলাইয়ের গোড়ায় ব্যারাকপুরের পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক-এর নোনাচন্দনপুকুর শাখায় স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে দশ লক্ষ টাকার ঋণের জন্য আবেদন করি। দুর্ভাগ্যবশত, সেই আবেদন এ বছর এপ্রিলের শেষের দিকে ব্যাঙ্ক থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ দেখানো হয়, ঋণ চাওয়ার পরিমাণ অত্যধিক বেশি। দীর্ঘ ন’মাস অতিবাহিত হওয়ার পর এই ধরনের মন্তব্য-সহ আবেদন ফেরত পাঠানোর বিষয়টি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এই ন’মাসে এক বারও নোনাচন্দনপুকুর শাখা থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হয়নি কেন এত টাকার ঋণের জন্য আবেদন করেছি। যত দূর জানি, প্রতিটি ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ও আবেদনকারী আলোচনার মাধ্যমে ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করে থাকেন। অথচ, আমার আবেদন ছিল পিএইচ ডি ও পোস্ট ডক্টরেট করার আশা নিয়ে।
আইআইটি-তে পিএইচ ডি-র বার্ষিক দু’টি করে সিমেস্টারের প্রতিটির জন্য চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা ফি জমা দিতে হয়। এই কোর্স সম্পন্ন করতে পাঁচ থেকে দশ বছর লেগে যেতে পারে। এর সঙ্গে রিসার্চ সার্ভের জন্যও আছে বিভিন্ন আনুষঙ্গিক খরচ। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা দশ লক্ষ টাকা শিক্ষাঋণের জন্য আবেদন করেছিলেন, তাঁদের সকলের একই হাল হয়েছে। প্রশ্ন হল, তবে কাদের ক্রেডিট কার্ডে ওই দশ লক্ষ টাকা পাওয়ার যোগ্যতা রয়েছে? আমাদের মতো শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার উচ্চাশা পূরণের জন্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ক্রেডিট কার্ডে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা করেন। রাজ্য সরকার নিজেই এর গ্যারান্টি দিচ্ছে। কিন্তু ব্যাঙ্কগুলো ঋণ না দেওয়ার অদ্ভুত অজুহাত খাড়া করছে।
দশ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত হলে কত লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে, সেই বিষয়েও সে ভাবে কিছু জানা যাচ্ছে না। সরকারের সদিচ্ছা সত্ত্বেও ব্যাঙ্কগুলির অনীহা ও ঋণদান এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতার ফলে বলি হতে হচ্ছে হাজার হাজার নিরীহ ছাত্রছাত্রীকে, যারা উচ্চশিক্ষা করতে আগ্রহী। এই বিষয়ে তাই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
অভিনন্দন দাস , কলকাতা-১২২
বেহাল রাস্তা
হাবরা শহরের উপর দিয়ে যাওয়া যশোর রোডের দু’পাশ এতটাই অসমান ও এবড়োখেবড়ো যে, পায়ে হেঁটে চলা রীতিমতো আতঙ্কের। কোথাও কোথাও রাস্তার দু’পাশ ঘেঁষে ছোট বড় ইট-পাথরের আলগা টুকরো ছড়ানো থাকে এমন ভাবে যে, পথচারীরা পা ফেলতেও সাহস পান না। দ্রুত গতির বড় যানবাহনকে জায়গা দিতে রাস্তার পাশে এই ভয়ঙ্কর জায়গায় নেমে যেতে হয়। তাতে খুবই অসুবিধায় পড়েন পথচারী থেকে শুরু করে সাইকেল ও বাইক চালকরা। নামার থেকেও আরও বেশি খারাপ দশা হয় রাস্তায় আবার উঠতে গিয়ে। ঠিক এ কারণেই কয়েক দিন আগে হাবরার যশোর রোডের পাশে চোংদা মোড়ে একটি মর্মান্তিক বাইক দুর্ঘটনায় এক তরুণী প্রাণ হারান। তরুণী তাঁর স্কুটি নিয়ে রাস্তায় উঠতে গিয়ে পাশে পড়ে থাকা ইট-পাথরের আলগা টুকরোয় রাস্তায় ছিটকে পড়েন। এর আগেও ঠিক একই কারণে ওই রাস্তায় চলন্ত গাড়িকে জায়গা দিতে গিয়ে বহু প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে। অবস্থার পরিবর্তন না হলে ভবিষ্যতে হয়তো আরও বহু মানুষের এমন ভাবেই প্রাণ যাবে।
যশোর রোডের দু’পাশের এই চূড়ান্ত বেহাল দশা নিয়ে বার বার লেখালিখি করেও প্রশাসনের টনক নড়ানো যায়নি। সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির কোনও একটির আওতায় কি যশোর রোডের বেহাল দশার সংস্কারের বিষয়টি পড়তে পারে না?
বিভূতি ভূষণ রায়, হাবরা, উত্তর ২৪ পরগনা
ট্রেনে প্রতারণা
কিছু দিন আগে হাবরা স্টেশন থেকে ডাউন বনগাঁ লোকাল ধরেছিলাম। সম্ভবত বিরাটি স্টেশন আসার পর, ট্রেনের কামরায় ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তির মৃদু কণ্ঠস্বর কানে এল। লোকটির পরনে ছিল হলুদ রঙের শার্ট এবং ধূসর রঙের ফুল প্যান্ট। ওষুধ কেনার জন্য তিনি আর্থিক সাহায্য চাইছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে দেখা গেল লোকটির সারা শরীর অদ্ভুত ভাবে কাঁপতে শুরু করেছে এবং হাতে থাকা কিছু খুচরো পয়সা ছিটকে কামরার মেঝেতে পড়ে গেল। কয়েক জন যাত্রীর সহায়তায় লোকটিকে বসিয়ে জল খেতে দিয়ে খুচরো পয়সাগুলো কুড়িয়ে তাঁর হাতে দিয়ে দেওয়া হয়। দেখা যায়, তাঁর ইনহেলার পাম্পের ওষুধের পাত্রটি ফাঁকা। উপস্থিত যাত্রীরা তখন যে-যার সাধ্যমতো অর্থ দিয়ে তাঁকে সাহায্য করেন। পরে আমি আমার গন্তব্য দমদম জংশনে নেমে গিয়েছিলাম।
বিকেলে ফেরার পথে সহযাত্রীদের ঘটনাটির বিবরণ দিচ্ছিলাম। পরিচিত এক সহযাত্রী পুরো ঘটনাটি শোনার পর জানান যে, দুপুরের ডাউন গোবরডাঙা লোকালে ওই একই জায়গায়, একই পোশাক পরিহিত, একই বয়সি একটি লোক, হুবহু একই পদ্ধতিতে ৫০০ টাকার বেশি আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন। সহযাত্রীটি সেই ঘটনাটি দেখেছেন। তখন সবাই বুঝতে পারলাম নিখুঁত অভিনয়ের মাধ্যমে লোকটি আমাদের প্রতারণা করেছিল। শিয়ালদহ বিভাগের নিত্যযাত্রীদের বিষয়টি জানিয়ে রাখার জন্য এই চিঠির অবতারণা। এ ধরনের প্রতারক ও প্রতারণার বিষয়ে যাত্রীরা সাবধান হলে ভাল।
অরিন্দম দাস, হরিপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
অবৈধ স্ট্যান্ড
শ্রীরামপুর স্টেশন চত্বরে যানজট রুখতে এবং টোটো চালকদের যেখান-সেখান থেকে যাত্রী তোলা বন্ধ করতে যে রুট বাঁধার পরিকল্পনা পুর-কর্তৃপক্ষ নিয়েছেন তা প্রশংসনীয়, সন্দেহ নেই। এটা করতে পারলে যানজট কম হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের হাঁটার পরিসর ও স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে। কিন্তু এই উদ্যোগের বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ কোনও স্থায়ী সুরাহা না করেই স্টেশনের অদূরে মানসী বাজারের সামনে সমস্ত দোকান আড়াল করে বছরের পর বছর ধরে মূল রাস্তাকেই অটো স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে এক দিকে যেমন রাস্তার পরিসর কমে যাচ্ছে, তেমনই বাড়ছে যানজট। অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ী সমেত নিত্য পথযাত্রী।
তাই পুর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ, মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যের স্বার্থে এই বেআইনি অটো স্ট্যান্ডের ব্যাপারে তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।
অশোক দাশ, রিষড়া, হুগলি
জীবন বিপন্ন
গত চার বছরেরও বেশি সময় ধরে হাওড়া পুর নিগমে কোনও নির্বাচিত বোর্ড নেই। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চলছে অবৈধ নির্মাণের রমরমা। আমার বাড়ির ঠিক পিছনে অবৈধ, বিপজ্জনক ছ’তলা বাড়ি নির্মিত হয়েছে। এলাকা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এবং সামনে রাস্তা বলতে চার ফুটের একটি সরু গলি। আশ্চর্যের বিষয়, আমার বাড়ি এবং নির্মিত বাড়িটির মাঝে কোনও জায়গা নেই। কোনও দুর্ঘটনা বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলে উদ্ধারকাজ চালানোর কোনও উপায় থাকবে না। বৃষ্টি হলে সব জল চলে আসছে আমার বাড়িতে। অসাধু প্রোমোটার ও দুষ্কৃতী-চক্রের যোগসাজশই এর একমাত্র কারণ। বহু অভিযোগ জানানো হয়েছে হাওড়া পুর নিগমে। পুর প্রশাসন লজ্জাজনক ভাবে নিশ্চুপ। প্রতি দিন আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে ভয়ঙ্কর পরিণতির। আমরা প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা করছি। প্রাত্যহিক জীবন বিপন্ন। তাই প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে তাড়াতাড়ি আমরা এই দুর্বিষহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারি।
অসীমা মিত্র, সালকিয়া, হাওড়া
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy