—প্রতীকী ছবি।
কিছু দিন আগেই ট্রাই স্প্যাম কল অপ্রয়োজনীয় মেসেজ ও ফ্ল্যাশ মেসেজ বন্ধের বিষয়ে আরও কড়া হওয়ার কথা বলেছে (ফোনে অবাঞ্ছিত বার্তা আটকাতে আরও কড়া ট্রাই, ২৬-৫)। এমন পদক্ষেপ যথাযথ। সারা দিন স্প্যাম কল ধরতে গিয়ে বিরক্ত হয়ে উঠতে হয়। বুড়ো হয়েছি, কিন্তু এখনও শুনতে হচ্ছে ‘হোম লোন’ লাগবে কি না। অন্য কোনও ঋণ লাগবে কি না, তা-ও জিজ্ঞাসা করছেন ‘কলার’-রা। অনাবশ্যক মেসেজ প্রায় সব ধরনের পণ্যের জন্য আসতেই থাকে। যে সব ব্যাঙ্ক বা বিমা কোম্পানি থেকে কখনও পরিষেবা নিইনি, যে বাড়ি বিক্রেতার সঙ্গে জীবনে যোগাযোগ করিনি, তাঁদেরও এসএমএস ও মোবাইল কল ধরতে হচ্ছে মাঝেমধ্যেই। সরকারি ব্যাঙ্ক ও বিমা কোম্পানি প্রয়োজনের বাইরে কোনও ফোন কল বা মেসেজ করে না। অথচ, প্রতিনিয়ত আরবিআই-এর লোগো দেওয়া সতর্কবার্তা আসছে যে, কোনও ওটিপি অন্যকে না দিতে বা কোনও লিঙ্ক দেওয়া মেসেজে ক্লিক না করতে।
কিন্তু, নিয়ম তো মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থারাই ভাঙছে। প্রতি দিন প্রচুর অপ্রয়োজনীয় মেসেজ আসছে। একটা লিঙ্ক দিচ্ছে আর বলছে স্প্যাম কল, মেসেজ, ফ্ল্যাশ মেসেজ বন্ধ করার জন্য ওই লিঙ্ক ব্যবহার করতে। কিন্তু আমরা ওই লিঙ্কে ক্লিক করব কোন সাহসে? ব্যালান্স জানার জন্যও লিঙ্কে ক্লিক করতে বলছে। এত দিন আমরা একটা নম্বর ডায়াল করেই ব্যালান্স ও এক্সপায়ারি ডেট জানতে পারতাম, এবং সেই অনুযায়ী রিচার্জ করতাম। ইমেল-এ অভিযোগ করা যায় না, সবই অ্যাপ-নির্ভর হয়ে গিয়েছে। নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে ভাল করে শুনে, বিভিন্ন নম্বরে বোতাম টিপে অভিযোগ করতে হয়, যা বয়স্ক লোকেদের পক্ষে অসম্ভব।
‘ডু নট ডিস্টার্ব’ (ডিএনডি) লিস্টে ফোনের নম্বর থাকলেও কোনও লাভ হয় না। তাই, এমন ব্যবস্থা চাই যেখানে শুধু প্রয়োজনীয়, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু এবং আমার অ্যাকাউন্ট আছে এমন ব্যাঙ্ক ও বিমা কোম্পানির কলই আসবে।
আরও একটি জিনিস বন্ধ করা দরকার। কোনও বড় ব্র্যান্ডের দোকান বা মল-এ কিছু কিনতে গেলে ওরা মোবাইল নম্বর চায়। তার পরেই মেসেজ করতে থাকে অবিরত। এটাও খুবই যন্ত্রণাদায়ক।
প্রদীপকুমার চক্রবর্তী, কলকাতা-১০৮
পুরনো ওষুধ
কিছু দিন আগে বেহালায় কাজের সূত্রে গিয়ে সেখানকার একটি ওষুধের দোকান থেকে হার্টের ওষুধ কিনেছিলাম। ওষুধটা খাওয়ার পর আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং বাসে চেপে বাটানগরে ফিরে আসি। বাটানগরে এক জন চিকিৎসককে ওষুধটা দেখালে তিনি বলেন, ওষুধটা ব্যবহার করার সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। আমি বলেছিলাম, স্ট্রিপে তো তারিখ ঠিক আছে। তাতে উনি বলেন, তারিখটা পাল্টে দেওয়া হয়েছে। আপনি কনজ়িউমার ফোরামে অভিযোগ করুন। আমি সাধারণ মানুষ। ও সব কী ভাবে কোথায় গিয়ে করতে হয়, জানি না। যদিও বা জানতে পারি, তা হলেও তো রিপোর্ট করে কিছু লাভ হবে বলে মনে হয় না। তা-ও অন্য গ্রাহকদের অনুরোধ করছি, ওষুধ কেনার সময় অবশ্যই ওষুধ ব্যবহারের তারিখটা খুঁটিয়ে দেখে নেবেন।
কমল চৌধুরী, কলকাতা-১৪০
প্রবেশাধিকার
‘হাই কোর্টের সুরক্ষায় স্মার্ট কার্ড চালু হচ্ছে’ (১২-৬) খবরটির পরিপ্রেক্ষিতে জানাই, এটি একটি সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। যাঁদের জন্য হাই কোর্ট ও তার বিশাল কর্মকাণ্ড, বিভিন্ন মামলায় সেই সব বাদী ও বিবাদীর অধিকার আছে শুনানির সময় আদালত কক্ষে উপস্থিত থাকার। তাঁদের আইনজীবীরাই তাঁদের প্রতিনিধি, এই অজুহাতে শুনানির সময় বাদী ও বিবাদীদের আদালত কক্ষে উপস্থিত থাকতে না দিলে তা অন্যায্য হবে। তা ছাড়া অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি শুনানির সময় অবধারিত ভাবে এমন কিছু সূক্ষ্ম প্রশ্ন ওঠে, যার উত্তর সংশ্লিষ্ট দু’-পক্ষের আইনজীবীরই জানা থাকে না। তখন উপস্থিত বাদী বা বিবাদীর সরবরাহ করা তথ্য মামলার নিষ্পত্তিতে সাহায্য করে।
এমতাবস্থায় কোনও মামলার শুনানির দিন সংশ্লিষ্ট বাদী ও বিবাদী যাতে আদালত ভবনে প্রবেশ করতে পারেন, তারও ব্যবস্থা রাখা হোক। আইনজীবীরা আদালতের আধিকারিকও। তাঁদের ক্ষমতা দেওয়া হোক যাতে তাঁরা শুনানির দিন আপন আপন মক্কেলদের হাই কোর্ট ভবনে প্রবেশ করার জন্য এক দিনের বৈধ প্রবেশপত্র দিতে পারেন।
ভবানীপ্রসাদ দে, কলকাতা-৪২
বন্ধ অফিস
চুঁচুড়ায় হুগলি জেলার মুখ্য ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন অফিসটি অতিমারির সময় থেকে বন্ধ। ফলে বহু মানুষ সরকার নির্ধারিত কম খরচে ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না। গত বছর সেপ্টেম্বরে পুনরায় ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন অফিস চালু করার অনুরোধ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে আমি ইমেল করেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে আমার আবেদন গৃহীত হয়েছে এই মর্মে আমাকে এসএমএস করা হয়। এসএমএস প্রাপ্তির কিছু দিন পর ওই দফতর থেকে সরাসরি ফোন করে আমার আবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত খবরও নেওয়া হয় এবং বলা হয়, আগামী দু’-তিন মাসের মধ্যে যদি অফিসটি চালু না হয়, তবে আবার মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ইমেল করতে।
কিছু দিন আগে চুঁচুড়ায় গিয়ে জানতে পারি যে, অফিসটি এখনও চালু হয়নি। আমি পুনরায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ইমেল পাঠাই। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে আজও তা বন্ধই রয়েছে।
সিদ্ধার্থ দত্তচৌধুরী, ভদ্রেশ্বর, হুগলি
প্রবীণদের যন্ত্রণা
সম্পাদকীয় ‘জীবন সায়াহ্নে’ (১০-৬) একটি নির্মম বাস্তব সমস্যার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেছে। আমাদের মেনে নিতেই হবে বর্তমান আর্থ-সামাজিক কাঠামোয়, অণু পরিবারের একমাত্র সন্তানদের পক্ষে ক্রমশ কঠিন হয়ে যাওয়া জীবনধারণের পরিস্থিতিতে অথবা সাফল্যের ইঁদুর দৌড়ে শামিল হওয়ার পরে, পরিবারের প্রবীণদের দেওয়ার মতো সময় বা সদিচ্ছা কিছুই থাকে না। এর জন্য কাউকে দোষারোপ করাও অনুচিত। কারণ, শৈশব থেকে সাফল্য উদ্যাপন করতেই শিখিয়েছি আমরা, সাফল্য ভাগ করে নিতে নয়।
সমস্যা বিচার করলে প্রবীণদের মূল সমস্যা তিনটি। প্রথমত শারীরিক, দ্বিতীয়ত আর্থিক এবং তৃতীয়ত নিঃসঙ্গতা বোধ। এই তিন সমস্যার সমাধানে রাষ্ট্র ও সমাজের সক্রিয় ভূমিকা পালনের যথেষ্ট প্রয়োজন আছে। বেশি বয়সে যখন চিকিৎসা ও ওষুধের অধিক দরকার পড়ে, তখনই ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায় চিকিৎসা বিমা। যাঁদের আর্থিক সচ্ছলতা আছে, সন্তান দেশে-বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত, তাঁরা ভোগেন নিঃসঙ্গতায়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রবীণদের মধ্যে পঁয়ষট্টি শতাংশই দিনযাপনের জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের এগিয়ে আসা ছাড়া আর কোনও পথ নেই।
উন্নত দেশগুলোতে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য যথেষ্ট সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা থাকে। আমাদের দেশ ততটা না পারলেও কিছু ব্যবস্থা থাকা উচিত। যেমন, সরকারি উদ্যোগে আরও বৃদ্ধাশ্রম বানানো উচিত যেখানে আর্থিক ভাবে দুর্বল প্রবীণরা কম খরচে, একটু নিশ্চিন্তে জীবনের শেষ ক’টা দিন কাটাতে পারেন। যে সময়ে রাষ্ট্রের উচিত প্রবীণদের দায়ভার আরও বেশি বহন করা, সেই সময়ে রেলে প্রবীণদের টিকিটের দামে ছাড় তুলে নেওয়া সরকারের অবিবেচক মনোভাবই প্রকাশ করে। প্রবীণ নাগরিকের শারীরিক ও মানসিক দুর্ভোগ কম করতে আরও একটু মানবিক এবং সমব্যথী হতে হবে সমাজ ও রাষ্ট্রকে।
সুরজিত কুন্ডু, উত্তরপাড়া, হুগলি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy