রেলে অবৈধ ভাবে টিকিট কাটা বন্ধ করা হোক। ফাইল চিত্র।
কিছু দিন আগে হায়দরাবাদ ভ্রমণের জন্য সকালে খড়্গপুর জংশন স্টেশন থেকে ফলকনামা এক্সপ্রেস ধরি। আমাদের সংরক্ষিত কামরায় এতটাই ভিড় ছিল যে, মালপত্র নিয়ে উঠতে খুব অসুবিধা হয়। অনেক কষ্ট করে ভিড় ঠেলে যখন সংরক্ষিত আসনের কাছে পৌঁছলাম, তখন দেখি সাধারণ যাত্রীরা তাঁদের মালপত্র নিয়ে উপর-নীচ আসন দখল করে বসে আছেন। অনেক অনুরোধ করার পর তাঁরা আসন ছাড়লেও লোয়ার বার্থ-এর নীচের মালপত্র সরাতে নারাজ ছিলেন। কোনও টিকিট কালেক্টর বা রেল পুলিশকে খুঁজে পেলাম না বিষয়টা জানানোর জন্য। কোনও ক্রমে বসার জায়গা নিয়ে আমাদের আর ওঁদের মালপত্র মিলিয়েমিশিয়ে রাখতে হল। সন্ধ্যার দিকে এক জন টিকিট পরীক্ষক এলে মালপত্র রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করায় বললেন, সব কামরায় ভিড়, কিছু করা যাবে না। তিনি পাঁচ-সাত মিনিট থেকে দু’-এক জনকে রসিদ কেটে চলে গেলেন।
বাথরুমে কোনও রকম স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না। বেসিনগুলো পান, গুটখা, ছেঁড়া প্যাকেট ভরা। একে ব্যবহারের অযোগ্য, তাতে আবার ভিড় ঠেলে বেসিনে যেতে অনেক সময় লাগছিল। রাতে মুখোমুখি দুটো লোয়ার বার্থের মাঝে জোর করে দুই দিকে মাথা করে শুয়ে পড়লেন দুই যুবক। যাওয়া-আসার রাস্তা বলতে কিছুই ছিল না, বাথরুমে যাওয়ার উপায় ছিল না। নিজেদের মালপত্র দেখভাল, যাত্রীদের কথাবার্তা, গান, ফোনের আওয়াজে যারপরনাই কষ্ট করে বিনিদ্র রাত কাটল আমার মতো অনেক যাত্রীরই। পরের দিন সকালে আর এক টিকিট পরীক্ষককে বিষয়টা বলাতে তিনি বললেন, চাকরিতে ঢোকা থেকে এই অবস্থা দেখে আসছেন। এই উত্তর যদি রেল আধিকারিকেরই হয়, তা হলে রেলে পরিষেবার কী উন্নতি ঘটছে? এই অবস্থা আর কত দিন চলবে?
রেল কর্তৃপক্ষকে কয়েকটি বিষয় ভেবে দেখতে অনুরোধ করছি। এক, কনফার্মড টিকিট থাকলে তবেই ট্রেনে উঠতে দেওয়া হোক। দুই, ওয়েটিং লিস্টে থাকা যাত্রীদের জন্য অন্তত বসে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। তিন, সকাল সন্ধ্যায় বাথরুম ও বেসিন পরিষ্কার করুন। চার, যাত্রীরা টিকিট বাতিল করলে যদি জরিমানা দিতে হয়, তবে রেল কর্তৃপক্ষ ট্রেন বাতিল করলেও জরিমানার ব্যবস্থা করা হোক (যে-হেতু এর সঙ্গে হোটেল-সহ অন্য বুকিংও করা থাকে)। পাঁচ, প্যান্ট্রি কার-এর খাবারের গুণগত মান অর্থ অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ হোক। ছয়, অবৈধ ভাবে টিকিট কাটা বন্ধ করা হোক। সর্বোপরি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথ হোক।
সমীর সামন্ত, ভোগপুর, পূর্ব মেদিনীপুর
থার্মোকল নয়
প্রদীপ রঞ্জন রীত-এর ‘থার্মোকল’ (২১-১০) শীর্ষক চিঠিটি একটু সংশোধন করতে চাই। উনি লিখেছেন পুজোর প্রসাদ, ভোগ খাওয়ার জন্য থার্মোকলের থালা-বাটি ব্যবহার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত বলে রাখি, এই ধরনের পাত্র যেগুলি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে থালা-বাটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, সেগুলি থার্মোকলের নয়। এটিকে বলে স্টাইরোফোম। এতে থাকে স্টাইরিন নামক একটি উপাদান, যেটি গরম তরলে দ্রবীভূত হয়ে খাদ্যের সঙ্গে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধির প্রকোপ ঘটাতে পারে। সুতরাং, এই স্টাইরোফোমের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা প্রশাসনের আশু কর্তব্য। জনসাধারণেরও এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
মনোজ ভট্টাচার্য, দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান
দুরভিসন্ধি
জি রাজশেখর-এর ‘সরকারি বাস’-এর (২১-১০) চিঠির প্রেক্ষিতে জানাই, গত এক বছর যাবৎ রাজ্য সরকারের বাস ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে কেমন যেন ঢিলেঢালা ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। নীতিগত ভাবে পরিবহণ দফতর সাধারণ মানুষের উপর কোনও বাড়তি আর্থিক বোঝা চাপাতে চাইছে না, কিন্তু রাজ্য জুড়েই বেসরকারি বাস মালিকরা যে যার মর্জিমতো ভাড়া বাড়িয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছেন। রাজ্য সরকারের ভূমিকা নীরব সমর্থকের!
অন্য দিকে, সরকারি পরিবহণ সংস্থা বাড়তি ভাড়া আদায় করতে পারছে না। বেসরকারি বাস যেখানে ১৫-১৮-২০-২৫ টাকা ভাড়া আদায় করছে, সেখানে সরকারি বাস পুরনো ৯-১০-১২-১৫ টাকায় চলছে! এ ভাবে আর কিছু দিন সরকারি পরিবহণ চললে সরকারি খাতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির সম্ভাবনা। এর ফলে সরকারি পরিবহণ সংস্থাকে অ-লাভজনক ঘোষণা করে পুরো পরিবহণ পরিষেবাই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা থেকে যায়। এমন সম্ভাব্য পরিকল্পনার কথা ভেবেই কি রাজ্য সরকারের যাত্রীদের প্রতি এমন লোকদেখানো প্রীতি?
মিনতি ধর, শিবপুর, হাওড়া
লোকালই থাক
অতিমারি পর্ব থেকে পূর্ব রেলওয়ের প্যাসেঞ্জার-মেমু ট্রেন পরিষেবায় এক চরম অব্যবস্থা চলে আসছে। হাওড়া ডিভিশন হোক বা শিয়ালদহ, শহরতলির ট্রেন পরিষেবার বাইরেও প্রচুর স্টেশন রয়েছে, যেখানে প্যাসেঞ্জার, মেমু ট্রেনগুলোই গণ পরিবহণের একমাত্র ভরসা। যেমন কাটোয়া-আজ়িমগঞ্জ, শিয়ালদহ-রামপুরহাট, শিয়ালদহ-লালগোলা, শিয়ালদহ-জঙ্গিপুর, বর্ধমান-আসানসোল ইত্যাদি। এই শাখাগুলিতে অতিমারির পূর্বেও প্রতি দিন ট্রেন চলত। নাম ছিল প্যাসেঞ্জার অথবা মেমু লোকাল। টিকিটের ভাড়া ছিল লোকাল ট্রেনের মতোই। অতিমারির পরে দেশের সর্বত্র লোকাল ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে গেলেও পূর্ব রেলওয়ের নন-সাবার্বান ট্রেন পরিষেবা এখনও স্বাভাবিক হল না। প্যাসেঞ্জার-মেমু ট্রেনগুলি আগের সময়েই চলছে, প্রতিটি স্টেশনেও থামছে আগের মতোই, কিন্তু তাদের নামের পিছনে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ‘এক্সপ্রেস-স্পেশাল’। ফল, আগে যে দূরত্ব যেতে যাত্রীদের ৫ টাকা ভাড়া লাগত, সেটি এখন সেই ট্রেনেই যেতে লাগছে ৩০ টাকা! মেমু-প্যাসেঞ্জার ট্রেন আর এক্সপ্রেস ট্রেন কী হিসাবে সমার্থক হল, তা কারও বোধগম্য হল না!
দুর্ভোগের শেষ এখানেই নয়। কেউ ভুলবশত লোকাল টিকিট কেটে মেমু ট্রেনে উঠে পড়লে টিকিট চেকার তাঁকে টিকিটবিহীন যাত্রী হিসাবে গণ্য করে ফাইন করছেন, যদিও তিনি আদৌ টিকিটবিহীন যাত্রী নন। শুধুমাত্র অতিরিক্ত ভাড়াটি আদায় ওই যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া যেত। পূর্ব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন, অবিলম্বে এই অব্যবস্থা বন্ধ করা হোক, এবং মেমু-প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলি অতিমারি পূর্বের মতোই লোকাল টিকিটধারীদের জন্য চালানো হোক।
শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, নবদ্বীপ, নদিয়া
পাঁচের গুণিতক
ইদানীং আমাদের গ্রামের ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীই এক অদ্ভুত প্রথার প্রচলন করেছে। কেউ পাঁচ টাকার কম মূল্যের মুদ্রা গ্রহণ করতে রাজি নন। ফলে, ক্রেতারা সব সময় পাঁচের গুণিতকের মূল্যে জিনিস কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। বত্রিশ টাকার কোনও সামগ্রী কিনতে হলে ব্যবসায়ীরা পঁয়ত্রিশ টাকা দাবি করেন। বিনিময়ে অতিরিক্ত তিন টাকার খুচরো অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হয়। এই বিশেষ ব্যবস্থার কারণ কিন্তু খুচরোর অভাব নয়। গত কয়েক বছর ধরে চলে আসা এই ব্যবস্থায় সকলের অসুবিধা হলেও প্রতিকারের উপায় এখনও অজানা।
সুদীপ খাঁ, বেগুনকোদর, পুরুলিয়া
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy