Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Road

সম্পাদক সমীপেষু: জনগণের স্বার্থে

রাষ্ট্রপতির সফরে যাতে চড়াই-উতরাই ভাঙতে না হয়, সে জন্য অথবা নিরাপত্তাজনিত কারণে হয়তো রাস্তার বাম্প সরানোর ব্যবস্থা করা হয়।

—ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:২০
Share: Save:

গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে খড়্গপুর আইআইটি পরিদর্শনে এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু। তাঁর আগমন উপলক্ষে আইআইটি ফ্লাইওভার থেকে রেলওয়ে ওয়ার্কশপের পাশ দিয়ে মথুরাকাটি হয়ে বম্বে রোড যাওয়ার রাস্তায় যাবতীয় রোড-বাম্পগুলো প্রশাসন থেকে ভেঙে বা কেটে দেওয়া হয়েছিল। তিন মাস অতিক্রান্ত, জায়গাগুলো আজও মেরামত করতে পারেনি প্রশাসন। পরিণামে ভাঙা অংশের পর থেকে যথারীতি রাস্তা ভাঙতে শুরু করেছে। রাষ্ট্রপতির আগমনের মাত্র কিছু দিন আগে রাস্তাটা সম্পূর্ণ ভাবে সারাই করেছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। বাম্প না থাকার ফলে এখন ওই রাস্তায় গাড়ির গতি প্রচণ্ড ভাবে বেড়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে মাঝেমধ্যে। প্রসঙ্গত, ওই রাস্তার উপরে বেশ কয়েকটা স্কুলও রয়েছে।

রাষ্ট্রপতির সফরে যাতে চড়াই-উতরাই ভাঙতে না হয়, সে জন্য অথবা নিরাপত্তাজনিত কারণে হয়তো রাস্তার বাম্প সরানোর ব্যবস্থা করা হয়। বেশ কয়েক বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের তদানীন্তন রাজ্যপাল শ্যামল সেনের যাওয়ার রাস্তার সমস্ত বাম্প কাটা হয়েছিল এই শহরে একই রকম তৎপরতায়। এবং পরে যথারীতি এ ভাবেই ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রশ্ন হল, দেশের ‘প্রথম নাগরিক’-এর কিছু সুরাহা করতে গিয়ে বাকি নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করা কী ধরনের নীতি? বিষয়টা জেনেও প্রশাসন কী ভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকে, সচেতন নাগরিকদের তা ভাবায়।

আরও একটা কথা এই প্রসঙ্গে বলা দরকার। গণতান্ত্রিক এই দেশে কেউই রাজা-মহারাজা নন, তা তিনি যতই উচ্চপদে থাকুন। কী ভাবে জনসাধারণ দৈনন্দিন জীবনযন্ত্রণা ভোগ করেন, তা পদাধিকারীদেরও জানা দরকার। তবেই না গণতন্ত্রের সার্থকতা। সে ক্ষেত্রে নিরাপত্তাজনিত কারণে একটা চার-ছ’ইঞ্চির বাম্প কাটতে হলে বিষয়টি সত্যিই হাস্যকর ঠেকে। রাষ্ট্রপতির প্রতি যথোচিত সম্মান রেখেই বলতে চাই, পদাধিকারীর কষ্ট লাঘব করতে এ ধরনের চটজলদি সমাধানের রাস্তা খোঁজেন প্রশাসনের যাঁরা, বাদবাকি জনগণের অসুবিধার কথাটাও ভাবা তাঁদেরই দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিকূলতার সম্মুখীন যেন না হতে হয় তাঁদেরও। এ বিষয়ে রাজ্য প্রশাসন এবং রেল-কর্তৃপক্ষের তৎপরতা কামনা করি।

অমিতাভ ঘোষ, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

সুরক্ষার খাতিরে

কোনও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটলে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ঢল নামে হাসপাতালে। তাঁরা যে পরিচ্ছদ পরে থাকেন সেই পোশাকেই হাসপাতালে যান। যাঁরা হেলিকপ্টারে আসেন, তাঁরা জামাকাপড়ে ওই ধুলো নিয়েই হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন। আহতদের গায়ে হাত দেন সহানুভূতি প্রকাশের জন্যে। এমনিতেই হাসপাতালের ওয়র্ডগুলি জীবাণুশূন্য থাকা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে জীবাণু-সহ ধুলোমাখা জামাকাপড় পরে, মুখে মাস্ক না লাগিয়ে মানুষের উপকার করতে গিয়ে আরও বেশি অপকার করে ফেলতে পারেন এঁরা। যেখানে জনসমাগম অনেক বেশি, সেখানে অবশ্যই মাস্ক পরে থাকা উচিত। কিন্তু প্রশাসনিক প্রধানরা অথবা রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা এই ধারণাটি পোষণ করেন না। আমার প্রস্তাব হল, এ রকম কোনও ঘটনায় তাঁরা অবশ্যই যাবেন, কিন্তু সংখ্যায় দু’জন (সঙ্গে এক জন ডাক্তারবাবু থাকলে ভাল)। এ ছাড়া তাঁরা যেন জীবাণু-নিরোধক পোশাক পরেন। মুখে মাস্ক, মাথায় আচ্ছাদনের ব্যবস্থা থাকুক। আশা করি, আগামী দিনে এই সব পরিস্থিতিতে যথাযোগ্য ব্যবস্থা করা হবে।

অসিত ঘোষ, কলকাতা-৬৩

অবহেলিত

গরিব মানুষের বঞ্চনার অবসান করতে ‘দুয়ারে সরকার’ চালু করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু বহু গরিব মানুষ দেখছেন, ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে বার বার আবেদন জমা দিয়েও কাজ হচ্ছে না। সুরাহা না পেয়ে তাঁরা যখন পঞ্চায়েত বা ব্লক অফিসে ছুটছেন, তখন আবার সরকারি কর্তাব্যক্তিরা একরাশ বিরক্তি নিয়ে বলছেন, ‘এখানে কেন? এটা তো দুয়ারে সরকার শিবিরে হবে।’ প্রশ্ন হল, সরকারি অফিসটা তো সাধারণ মানুষের জন্যই সপ্তাহে পাঁচ দিন খোলা থাকে। ‘দুয়ারে সরকার’ তো আর প্রত্যেক দিন বসে না। নামটা ‘দুয়ারে সরকার’ হলেও, অনেকেরই বাড়ি থেকে ২-৩ কিলোমিটার দূরে শিবির বসে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি গ্রামের মানুষের অভিজ্ঞতার নিরিখে আমার দাবি, দুয়ারে সরকার শিবিরগুলিতে যত মানুষ আবেদন জমা করেন, তাঁদের কত জন শেষ পর্যন্ত পরিষেবা বা সহায়তা পান, তার পরিসংখ্যান প্রকাশ করা দরকার। যাঁদের আবেদন বাতিল হচ্ছে, তাঁরা কেন প্রত্যাখ্যাত হলেন, জানানো দরকার।

বনগাঁ ব্লকের কালুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচপোতা গ্রামের কয়েক জনের অভিজ্ঞতার দৃষ্টান্ত জানাচ্ছি। জটাই সরকার (৭৪) ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে দু’বার আবেদনপত্র জমা দিয়েও বার্ধক্য ভাতা পাননি। এই পরিবারটির দীনহীন দশা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত। চার বার আবেদন করেও ওই ভাতা পাননি অন্য এক পরিবারের সদস্য জ্যোৎস্না সরকার (৬১)। প্রতিবন্ধী যতন মালী (৪৬) বনগাঁ ব্লক অফিসে এক বার, ‘দুয়ারে সরকার’-এ দু’বার— মোট তিন বার আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। মেলেনি প্রতিবন্ধী ভাতা। ষষ্ঠী সরকার (৩৩) ‘দুয়ারে সরকার’-এ চার বার আবেদনপত্র জমা দিয়েও ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের টাকা পাননি কেন, তা তিনি জানেন না। কালুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেরই অন্তর্গত বল্লভপুর গ্রামের ৭০ বছরের আরতি মণ্ডল (৭০) ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে একাধিক বার আবেদনপত্র জমা দিয়েও লক্ষ্মীর ভান্ডার বা বার্ধক্য ভাতা, কিছুই পাননি। একই গ্রামের শিবু ঘোষ (৭৯) তিন বার আবেদনপত্র জমা দিয়ে আজও বসে আছেন বার্ধক্য ভাতার অপেক্ষায়। এঁদের বিপন্নতার শেষ কোথায়? আবেদন করে বঞ্চিত হলে এঁরা কোথায়, কার কাছে বিচার চাইবেন?

তহমিনা মণ্ডল, মধ্যমগ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা

বার্ধক্য ভাতা

ধূপ বিক্রি করে একার সংসার চালাই। অবিবাহিত এবং পিতৃমাতৃহীন প্রবীণা। দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টার পরে দ্বিতীয় বার দুয়ারে সরকারে নাম লিখিয়ে বার্ধক্য ভাতার জন্য দরখাস্ত দেওয়া হয়েছিল। সেই দরখাস্ত অনুযায়ী আমার নাম গত নভেম্বরে লিস্টে এসেছে, সেটুকু শুধু আমাকে দেখানো হয়েছিল। দেখান সেই ব্যক্তি, যাঁর মাধ্যমে আমি আবেদন জমা করেছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বার্ধক্য ভাতার টাকা জমা পড়েনি। বিষয়টি নির্দিষ্ট স্থানে জানানোর পর আমাকে বলা হয় যে, সরকার থেকে ওই খাতে এখনও কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। আমার নাম সত্যিই লিস্টে উঠেছে কি না, সেটা কী ভাবে জানতে পারব? এই ভাতা কবে থেকে আমি পাব, সেটা জানারও কি কোনও উপায় আছে?

ইভা সেন, ব্যারাকপুর, উত্তর ২৪ পরগনা

বাড়ুক পাতা

বর্তমানে ডিজিটাল ব্যাঙ্কিংয়ের জন্য মেশিনের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু পাসব‌ইয়ের পৃষ্ঠাসংখ্যা এক‌ই থাকছে। ফলে প্রায়‌ই পুরনো পাসব‌ই খুব তাড়াতাড়ি ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। বেশির ভাগ ব্যাঙ্ক থেকে নতুন পাসব‌ই আনতে গেলে এক দিনে তা হয়‌ই না। প্রবীণদের পক্ষে যা অসুবিধার। অনেক ব্যাঙ্কেই দুই, তিনতলা সিঁড়ি ভাঙতে হয়। ইনকাম ট্যাক্সের জন্য পাসব‌ই লাগে। অনুগ্রহ করে পাসব‌ইয়ের পাতা বাড়ানো হোক।

অমিতাভ দাশ, কলকাতা-১২৬

অন্য বিষয়গুলি:

Cars Schools Speed Breaker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy