Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Afforestation

সম্পাদক সমীপেষু: কে করবে বৃক্ষরোপণ

সবাই জানি আমাদের ঋতু ছ’টা। কিন্তু আগামী প্রজন্ম শরৎ, হেমন্ত, বসন্তকে আলাদা করে বুঝতে পারবে না।

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:৪৩
Share: Save:

‘আসছে বছর আবার, হবে তো?’ (২৫-১২) শীর্ষক প্রবন্ধে ইন্দ্রজিৎ রায় জলের মতো স্বচ্ছ এক প্রশ্ন তুলেছেন। সমস্ত বিশ্ববাসীরও একই প্রশ্ন— কেন সবুজ ধ্বংস হচ্ছে, যেখানে আইনে স্পষ্ট নির্দেশ আছে? বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ঘটা করে পালিত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে পাঁচতারা হোটেলে বসে। অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে এই প্রকল্পে। এ দিকে ধনী দেশগুলির অন্যতম আমেরিকা নিজের চুক্তি নিজেই ভাঙছে। জাতীয় সড়কগুলো দু’লেনের থেকে আট-দশ লেনের হচ্ছে। জাতীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হলে চওড়া রাস্তা অবশ্যই করতে হবে। কিন্তু তাই বলে বড় বড় গাছ কেটে মাঝখানে ফুলের গাছ লাগালে কি পরিবেশ রক্ষা করা যাবে? বড় বড় শহরে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যে সমস্ত গাছের বিলুপ্তি ঘটেছে, সেই স্থানে কি নতুন গাছ রোপণ করেছে কর্তৃপক্ষ?

সবাই জানি আমাদের ঋতু ছ’টা। কিন্তু আগামী প্রজন্ম শরৎ, হেমন্ত, বসন্তকে আলাদা করে বুঝতে পারবে না। এখন অনেক সময়ই অকাল বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। মফস্সলে প্রকৃতির নিধন নির্বিচারে হচ্ছে। রাস্তার ধারে পূর্ণবয়স্ক গাছগুলো কেটে নিয়ে আর সেখানে নতুন কোনও গাছ লাগানো হচ্ছে না। এই সব কথা কি রাষ্ট্রনায়কদের কানে ঢুকবে? না কি ঢুকলেও তা কর্পোরেটের দাপটে ঢাকা পড়ে যাবে?

বীরেন্দ্র নাথ মাইতি, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

দায়িত্বহীনতা

‘বিমানের পেটেই ঘুম, সটান বিদেশ’ (১৫-১২) খবরটি সত্যিই অভাবনীয়। আসলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নজরদারির চূড়ান্ত গাফিলতি এবং নিরাপত্তাবাহিনীর পেশাদারিত্বের ঘাটতির কারণেই এমন শোচনীয় ঘটনাটি ঘটেছে। সংবাদে বলা হয়েছে— বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানায়, এই ধরনের কর্মীদের দিয়ে দিন-রাত কাজ করানো হয়। মনে করা হচ্ছে, ওই কর্মীও এ ভাবে দিন-রাত কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে মালপত্র তোলার সময়েই বিমানের পেটে ঘুমিয়ে পড়েন। প্রশ্ন হল, একটি নামী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ কাজকর্মে কেন এমন অব্যবস্থা? এখানে প্রযুক্তিগত সর্বাধুনিক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও, অতিরিক্ত কাজের ধকলে অবসন্ন হয়ে বিমানের কার্গো-হোল্ডে ঘুমিয়ে পড়া কর্মীটিকে কেন আগেই উদ্ধার করা গেল না? মুম্বই থেকে আবু ধাবি— এই দীর্ঘ উড়ান যাত্রায় কার্গো হোল্ডে ভাগ্যবশত বায়ুচাপ ও তাপমাত্রা ঠিকঠাক ছিল বলেই ওই হতভাগ্য বিমানকর্মীটির মৃত্যু হয়নি। এখন বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের যে তদন্তই শুরু হোক না কেন, একটা বড় বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তার প্রশ্নে উড়ান সংস্থার কর্তাদের দায়িত্ববোধ ও সচেতনতার ভূমিকাটি যে কতখানি নড়বড়ে, এ ঘটনা কি তা সবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল না?

তবে বিদেশের বিমানবন্দরে এর চেয়েও অনেক বেশি মারাত্মক ঘটনা দু’-একটা যে ঘটেনি, তা নয়। যেমন, ২০১৫ সালের জুনে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের ট্যাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি কাহিনি। দুই আফ্রিকান ভাগ্যবিড়ম্বিত তরুণ, এক জনের নাম জাস্টিন, অন্য জন কার্লিটো ভ্যালে। তাঁদের লক্ষ্য ছিল, যে ভাবেই হোক আফ্রিকা ছেড়ে পালাতে হবে। সুযোগ বুঝে সবার নজরদারি এড়িয়ে তাঁরা ওই দিন ট্যাম্বো বিমানবন্দরে অপেক্ষারত লন্ডনের হিথরো এয়ারপোর্টগামী জাম্বো বিমানের নীচের আন্ডারক্যারেজের চাকায় লুকিয়ে পড়েন। চার পাশে মোড়ানো বৈদ্যুতিক তার দিয়ে নিজেদের শক্ত করে বেঁধে নেন। এই ভাবে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায়, ১১ ঘণ্টার ফ্লাইটে ওঁরা যখন লন্ডনের হিথরো এয়ারপোর্টের কাছাকাছি পৌঁছন, তখন কার্লিটো ভ্যালে অবসন্ন শরীরের ভারসাম্য আর রাখতে না পেরে আকাশ থেকে পড়ে মারা যান। কিন্তু জাস্টিন বেঁচে যান। জাস্টিন ও কার্লিটো ভ্যালের এমন দুঃসাহসিক ঘটনাটি নিয়ে এর পরে যে বিশ্বব্যাপী সাড়াজাগানো তথ্যচিত্রটি তৈরি হয়, তার নাম দ্য ম্যান, হু ফেল ফ্রম দ্য স্কাই।

বর্তমানে সামগ্রিক নিরাপত্তার স্বার্থে, মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঘটনার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সেই রুদ্ধশ্বাস কাহিনিও ভুললে চলবে না।

পৃথ্বীশ মজুমদার, কোন্নগর, হুগলি

ভাষার দীনতা

দেরি আছে ভাষা দিবসের। প্রত্যেক বছর আসে এই দিবস, আবার চলেও যায়। কিন্তু বাংলা ভাষার শুদ্ধতা কই? অথচ, এই ভাষা নিয়ে চলছে নিরন্তর চর্চা। প্রতি মুহূর্তে নিশ্বাস-প্রশ্বাসের মতো যখন এই ভাষার সঙ্গে যোগ, তখন তার নিজস্বতা ও শুদ্ধতা রক্ষা হচ্ছে কি? প্রতি দিনের কথোপকথন, ফোনালাপ, মেল, মেসেজ ইত্যাদিতে দেখা যাচ্ছে বাংলা-ইংরেজির মিশেল। শুদ্ধ বাংলার চেয়ে ভুল ব্যাকরণে দু’-চার কথা ইংরেজিতে বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হয়। পাঁচটা কথার ভিতর দুটো বিদেশি শব্দ থাকবেই। লেখার মধ্যেও বাংলা ইংরেজির মিলমিশ, শুদ্ধ বাংলা যেন হয় না। তবুও ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় উঠে আসে বাংলা ভাষা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনাচর্চা। অথচ, তার শুদ্ধতা নিয়ে গর্জে উঠছি না। শুদ্ধ ভাবে না বললে বা লিখলে সেটা সেই ভাষারই অসম্মান, সেটা বোধ হয় বোঝানো হচ্ছে না। মোবাইলের মেল, মেসেজ ইত্যাদিতে অদ্ভুত লেখনী লক্ষ করা যায়। সেখানে মানতে হচ্ছে না কোনও লেখার রীতি, ব্যাকরণ। বিষয়টা এ রকম— যেন তেন প্রকারেণ মনের ভাবটা বুঝিয়ে দেওয়া। তা ছাড়া, ইংরেজি হরফে বাংলা উচ্চারণ বেশ কষ্টসাধ্য হয়। ভাষা দিবসে এর প্রতিবাদ কই!

প্রতি মুহূর্তে ইংরেজির গুরুত্ব টের পাওয়া যায়। বাংলা ক্যালেন্ডারের চেয়ে ইংরেজি ক্যালেন্ডারের গুরুত্ব বেশি। বাংলা মাস, তারিখ, সাল মনে থাকে না, কিন্তু ইংরেজিতে অবশ্যই থাকে। বাংলা ক্যালেন্ডার শোভা পায় দেওয়ালে, দেবদেবীর ছবিতে। আর এই ক্যালেন্ডার গুরুত্ব পায় পালা পার্বণ, শুভ অনুষ্ঠান ও অমাবস্যা-পূর্ণিমার দিনক্ষণ দেখতে। এ ছাড়া পয়লা বৈশাখ নিয়ে যত না উচ্ছ্বাস, তার চেয়ে ঢের বেশি আনন্দ উপভোগ করা যায় ইংরেজি নববর্ষ, পয়লা জানুয়ারিতে। যবে থেকে হারিয়ে গিয়েছে চিঠির আদান-প্রদান, সেই থেকে হারিয়েছে বাংলা লেখার রীতি ও বাংলা ভাষার চর্চাও। চিঠির সম্বোধন বিন্যাস থেকে সমাপ্তি, প্রতিটা পর্যায়ের ছত্রে ছত্রে উঠে আসত পত্রসাহিত্যের একটা দিক। বাংলা ভাষার এই লেখার চর্চা যে দিন থেকে হারিয়েছে, সে দিন থেকেই বোধ হয় শুরু হয়েছে বাংলা ভাষার দৈনতার এই নতুন রূপ।

সনৎ ঘোষ, বাগনান, হাওড়া

শিক্ষক চাই

মুড়গ্রাম-গোপালপুর অঞ্চলে গোপালপুর একটি বর্ধিষ্ণু গ্রাম। ১৯৬৮ সালে এখানে শ্রীগোপালপুর ললিতা সুন্দরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টি সরকার অনুমোদিত। ছাত্রী-সংখ্যা প্রায় ৫৬০ জন। কিন্তু গত ৮-৯ বছর যাবৎ বিদ্যালয়ে অঙ্ক ও বিজ্ঞান বিভাগে কোনও শিক্ষিকা নেই। স্থানীয় এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা বিনা পারিশ্রমিকে নবম ও দশম শ্রেণির অঙ্ক ও বিজ্ঞান পড়াচ্ছেন। গত দু’বছর যাবৎ করোনা আবহে বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন বন্ধ থাকায় এখন আর তিনি আসেন না। তা ছাড়া অন্যান্য বিভাগেও শিক্ষিকা সংখ্যা এতই সীমিত যে, এক জন ছুটি নিলে সেই ক্লাস করার মতো আর কেউ থাকেন না। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকাকে নিয়ে স্কুলে মাত্র পাঁচ জন স্থায়ী শিক্ষিকা এবং চার জন পার্শ্ব-শিক্ষিকাকে নিয়ে বিদ্যালয় মন্থর গতিতে কোনও রকমে চলছে।

কোনও বিদ্যালয় সুন্দর ভাবে চালাতে গেলে সেখানে ঘর ও আনুষঙ্গিক যা যা দরকার, এখানে তা সবই আছে। নেই শিক্ষিকা, প্রধান শিক্ষিকা, করণিক, যাঁদের অভাবে বিদ্যালয় চালানো সমস্যার। তাই শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন, এঁদের চাহিদা মিটিয়ে বিদ্যালয়টিকে নতুন প্রাণ দেওয়া হোক।

প্রতিমা ভদ্র, শ্রীগোপালপুর, পূর্ব বর্ধমান

অন্য বিষয়গুলি:

Afforestation deforestation Environment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy