প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে বাণিজ্যিক গাড়িতে যাত্রী-নিরাপত্তায় বিশেষ যন্ত্র, ভেহিকল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস (ভিএলটিডি) বাধ্যতামূলক ভাবে বসানোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে (‘গাড়ির অবস্থান জানার যন্ত্রের দামে আপত্তি বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের’, ৯-১)। স্বভাবতই ওই বিশেষ যন্ত্রের অপ্রতুলতা ও বাড়তি খরচের অজুহাতে আপত্তি জানিয়েছে বেসরকারি পরিবহণ মালিকদের একটি বড় অংশ। এই বিষয়ে সরকারি পরিবহণ নিগমের চিত্রটি এক ঝলক দেখে নেওয়া যাক। দক্ষিণবঙ্গে যাত্রী-পরিবহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি পরিবহণ নিগমে মহাসমারোহে ২০১৯-২০ পর্বে অনেক বাসে ভিএলটিডি যন্ত্র বসানো হয়েছিল। ফ্রন্ট-রেয়ার ক্যামেরা, মোবাইল ডিজিটাল ভেহিকল রেকর্ডার (এমডিভিআর), জিপিএস এবং প্যানিক বাটন— এই চারটি জিনিস বসানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ‘ওয়েবেল’-কে। ওয়েলন ও দিশা-র যৌথ উদ্যোগে প্রস্তুত এই ‘ভিএলটিডি’-র পুরো প্যাকেজ গাড়িপিছু প্রায় আটচল্লিশ হাজার টাকায় (মোট বরাদ্দ ৩.৩৭ কোটি টাকার) সরবরাহ করার বরাত পেয়েছিল ওয়েবেল। অনতি অতীতে স্পিড লিমিটিং ডিভাইস বা ডিজিটাল ডেস্টিনেশন ডিসপ্লে বোর্ড বসানোর জন্যও নিগমের টাকার অভাব হয়নি। কিন্তু ঢাক-ঢোল পিটিয়ে চালু হলেও সুসংহত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বছর দুয়েকের মধ্যে পুরো পরিকল্পনাটির যে গঙ্গাপ্রাপ্তি ঘটেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বর্তমানে একটি বাসেও ‘ভিএলটিডি’ চালু নেই।
‘আমরা আরম্ভ করি, শেষ করি না; আড়ম্বর করি কাজ করি না, যাহা অনুষ্ঠান করি তাহা বিশ্বাস করি না, যাহা বিশ্বাস করি তাহা পালন করি না...’ বিদ্যাসাগর সম্পর্কে ‘চারিত্রপূজা’-র মুখবন্ধে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সরকারি পরিবহণ নিগমের ক্ষেত্রেও কথাগুলি কী অদ্ভুত ভাবে মিলে যায়!
জি রাজশেখর, শিবপুর, হাওড়া
স্টেশনে দুর্নীতি
রেল-কর্তাদের নাকের ডগায় হাওড়া স্টেশনের নতুন কমপ্লেক্সের সুলভ শৌচালয়ে প্রতি দিন চলছে হাজার হাজার টাকার দুর্নীতি। পুরুষ এবং নারী, উভয় দিকের পোস্টারে লাল কালিতে বড় বড় করে লেখা আছে যে, প্রস্রাবের জন্য কোনও অর্থ লাগবে না। মলত্যাগের জন্য ২ টাকা এবং স্নানের জন্য ৫ টাকা। কিন্তু যে সব যাত্রী ওই শৌচালয়ে শুধু প্রস্রাবের জন্য যাচ্ছেন, তাঁদের সবাইকেও টাকা দিতে হচ্ছে। পুরুষদের ২ টাকা এবং মহিলাদের ৫ টাকা। বিশেষ কারণে আমি কিছু দিন আগে স্ত্রীর সঙ্গে হাওড়া স্টেশনে গিয়েছিলাম। শৌচালয়ের সামনে টাকা সংগ্রহ করার জন্য যাঁরা বসে থাকেন, তাঁদের যখন পোস্টার দেখিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে মোবাইলে ছবি তুলতে যাই, তখন আমাকে বাধা দেওয়া হয়। এবং ওখানে উপস্থিত তিন জন ব্যক্তি একত্রে আমাকে ধমকে বলেন যে, তাঁরা যে টাকা চাইছেন, সেটাই নিয়ম। বেশি নিয়ম দেখাতে চাইলে আমি বিপদে পড়ব।
আমার প্রশ্ন, প্রতি দিন সকলের চোখের সামনে হাজার হাজার যাত্রীর কাছ থেকে এই যে অন্যায় ভাবে টাকা তোলা হচ্ছে, সেটা কি রেল কর্তারা একেবারেই জানেন না? তাঁদের কাছে অনুরোধ, এই দুর্নীতি বন্ধ করুন। প্রধানমন্ত্রী যে স্বচ্ছ ভারতের কথা বলেন, সেটা কেবল পরিবেশগত নয়, আর্থিক এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতাও এর মধ্যে পড়ে।
চন্দন সিংহ , কলকাতা-৬১
অবৈধ সুবিধা
হাওড়া থেকে দিল্লি, উত্তর-পূর্ব ও উত্তর ভারতগামী যে কোনও এক্সপ্রেস ট্রেনের এসি কামরায় রেলের কর্মচারীদের নিত্যযাত্রী হয়ে যাওয়া নিয়মিত ব্যাপার। এমনকি, পূর্বা, সরাইঘাটের মতো ট্রেনেও এঁরা এসিতে রিজ়ার্ভ করে যাওয়া যাত্রীদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সরিয়ে বসে যান। কিছু বলতে গেলেই বলেন, সামনেই নামব, স্টাফ। দল বেঁধে মুখের সামনে দাঁড়িয়ে যাওয়া, চিৎকার করে গল্প— সবই সয়ে যেতে হয় এঁরা সামনেই নামবেন, এই সান্ত্বনায়। কিন্তু সামনে থেকে ফের এক দল স্টাফ ওঠেন তাঁদের পরবর্তী গন্তব্যের জন্য। সকালের ট্রেন হলে এই সমস্যা চলে সারা দিন। টিটিই, পুলিশ কেউ কিছু বলেন না। স্টাফেরা সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই পাবেন, কিন্তু বৈধ যাত্রীদের বিরক্তির কারণ হয়ে অবৈধ যাতায়াতটাও তার মধ্যে পড়ে কি?
অরিত্র মুখোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর, হুগলি
শৌচাগার জরুরি
সুনির্মল রায়ের পত্রের (‘লোকালেও শৌচাগার’, ৯-১) প্রেক্ষিতে জানাই এ বিষয়ে আমি পত্রলেখকের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি। কারণ, লোকাল ট্রেন মানে এই নয় যে, তার যাত্রাপথ সব সময় সংক্ষিপ্ত হয়। হাওড়া স্টেশন থেকে বর্ধমান (মেন বা কর্ড-এর মাধ্যমে) যেতে প্রায় আড়াই-তিন ঘণ্টা সময় লাগে। এত দীর্ঘ সময় প্রকৃতির ডাক চেপে রেখেই যাত্রীদের যাতায়াত করতে হয়, যা সত্যিই অসহনীয়। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, এক অজ্ঞাতকুলশীল বাঙালি অখিল চন্দ্র সেনের ভুলে ভরা ইংরেজি চিঠিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে পরাধীন ভারতবর্ষের দোর্দণ্ডপ্রতাপ ব্রিটিশ সরকার কিছু ট্রেনে শৌচাগারের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর পরে আমাদের মতো অজানা, অখ্যাত বাঙালি পত্রলেখকদের চিঠি সরকারের রেল দফতর গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে কি না, সন্দেহ থেকেই যায়।
প্রদীপ রায়চৌধুরী, চন্দননগর, হুগলি
অযথা হয়রানি
কিছু দিন আগে বিশেষ প্রয়োজনে বারাসত থেকে গাড়িতে বহরমপুর যেতে হয়েছিল। যাওয়ার সময় সোয়া চার ঘণ্টায় গন্তব্যে পৌঁছে গেলেও ফেরার সময় ছয় ঘণ্টার উপর লেগে গেল। কারণ, ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের অধিকাংশ জায়গায় রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। কিন্তু তাকে ছাপিয়েও বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের লরি দাঁড় করিয়ে টানা জিজ্ঞাসাবাদ প্রায় গোটা রাস্তাকেই স্তব্ধ করে দিয়েছিল। রাস্তাঘাটে নজরদারি অবশ্যই জরুরি। কিন্তু জনসাধারণের অসুবিধা করে কি তাতে বিশেষ লাভ হয়?
অমিতাভ দাশ, কলকাতা-১২৬
ভুয়ো কার্ডধারী
‘রেশন কার্ড নিয়ে অভিযোগ শান্তনুর’ (১৩-১) সর্বৈব সত্য অভিযোগ। প্রতিটি রেশন ডিলারের কাছে কম-বেশি অবস্থাপন্ন লোকের বিশেষ সুবিধাযুক্ত রেশন কার্ড আছে। অথচ, কেবল গরিব মানুষদের বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার কথা সরকারের। কিন্তু তাঁদের অনেকেই এই কার্ড এখনও পাননি। আবাস যোজনার মতো রেশন কার্ডেও অনেকে প্রভাব খাটিয়ে বা খাদ্য দফতরের ভুলে বিশেষ সুবিধাযুক্ত কার্ড পেয়েছেন। যাঁরা খাদ্য দফতরের ভুলে বিশেষ সুবিধাযুক্ত কার্ড পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকই সেই কার্ড জমা দিয়েছেন। এঁদের অনেকে রেশন দোকান থেকে সামগ্ৰী নিয়ে খোলা বাজারে বিক্রি বা রেশন ডিলারের সঙ্গে যোগসাজশে রেশন দোকান থেকেই খাদ্যসামগ্রী অন্যত্র চালান করেন। শুধু মাসে এক বার রেশন দোকানে গিয়ে বায়োমেট্রিক প্রমাণ দিয়ে আসেন। সঠিক তদন্ত হলে সরকারেরও বহু টাকা বাঁচবে।
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল, কোন্নগর, হুগলি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy