Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

অবরুদ্ধ রাস্তা: সম্পাদক সমীপেষু

য়ে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যতই পঞ্জাবের সরকারকে দোষারোপ করুক না কেন, মোদী শাসনে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ তথা অসন্তুষ্টিকে বিজেপি অস্বীকার করবে কী ভাবে?

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৪:৩২
Share: Save:

দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর জনবিরোধী নীতির জন্য কতটা অপ্রিয় হলে রাজপথে প্রহরী-সমেত তাঁর কনভয় কৃষকদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়, এবং প্রধানমন্ত্রী তাঁর গন্তব্যস্থলে না গিয়ে যাত্রাপথ বদলে, জরুরি সভা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাতিল করে ফিরে যেতে বাধ্য হন, তারই চিত্র দেখল ভারত (‘বিক্ষোভে রাস্তা বন্ধ, ঠায় বসে মোদী!’ ৬-১)। এই ঘটনায় ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুতর লঙ্ঘন’-এর তকমা দিয়ে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যতই পঞ্জাবের সরকারকে দোষারোপ করুক না কেন, মোদী শাসনে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ তথা অসন্তুষ্টিকে বিজেপি অস্বীকার করবে কী ভাবে?

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত এক বছরে তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে প্রায় ৭০০ জন কৃষকের প্রাণ গিয়েছে। অথচ, তার পরও দেশের প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের উদ্দেশে কোনও রকম সহমর্মিতা প্রকাশ করেননি। বরং এখনও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর চেয়ারে বহাল তবিয়তে বসে রয়েছেন অজয় মিশ্র টেনি, লখিমপুর খেরির কৃষক হত্যায় যাঁর ছেলে অভিযুক্ত। কৃষকরা টেনির অপসারণ, গ্রেফতারি ও ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি গ্যারান্টির দাবিতে অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত ভাবে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পথে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন।

এতেও প্রধানমন্ত্রী তথা শাসক বিজেপি দলের কোনও রকম শিক্ষা হবে বলে মনে হয় না। তাঁরা ধনীদের আরও ধনী ও গরিবদের আরও গরিব করার চূড়ান্ত জনবিরোধী নীতি থেকে বিন্দুমাত্র সরবেন না, সে আশঙ্কা থেকেই যায়।

কুমার শেখর সেনগুপ্ত

কোন্নগর, হুগলি

সময়ের দাম

পঞ্জাবের রাস্তায় ২০ মিনিট আটকে ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, পরে বলেছেন, বেঁচে ফিরেছি এই অনেক। খবরটা পড়ে মনে হল, আমাদের দেশে সময়ের বা জীবনের দাম বোধ করি একমাত্র প্রধানমন্ত্রীরই আছে, আমরা জীবন্মৃত। আমরা যারা বনগাঁ বা হাসনাবাদ বা নামখানার ভিড়-ঠাসাঠাসি ট্রেনে গুঁতোগুঁতি করে যাতায়াত করি, বা স্ট্র্যান্ড রোডে বাসের ভিতর অফিসফেরতা ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে আটকে থাকি, বা উত্তরপাড়ায় যানজট-ভরা সরু জিটি রোড কোনও মতে পেরিয়ে, টোটো থেকে দৌড়ে নেমে, বালিঘাট স্টেশনে গিয়ে ট্রেন চলে গিয়েছে দেখে শিয়ালদহগামী বাসের পাদানিতে ঝুলতে ঝুলতে যেতে বাধ্য হই, বা তেলেনিপাড়া ফেরিঘাট থেকে দমফাটা ভিড়ে ঝুঁকি নিয়ে গঙ্গার উপর দিয়ে লঞ্চে শ্যামনগর যাই, বা নিজের অসুস্থ আত্মীয়কে নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে রাজনৈতিক র‌্যালির জন্য দু’ঘণ্টা দাঁড়িয়ে যাই, এবং যখন এই সমস্ত ক্ষেত্রে দিশেহারা হয়ে যাই কখন গন্তব্যে পৌঁছতে পারব ভেবে— তখনও কিন্তু বলি না ‘বেঁচে ফিরেছি, এই অনেক!’ কারণ এই হয়রানি আমাদের নিত্যসঙ্গী।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কথা আলাদা। যে মানুষের পা মখমলের কার্পেট ছাড়া মাটিতে পড়ে না, যে মানুষ দেশের করদাতাদের টাকায় সকাল-সন্ধে বুলেটপ্রুফ গাড়ি চড়েন, করদাতাদের টাকায় প্রতি মাসে কোটি টাকার এসপিজি প্রোটেকশন নেন, করদাতাদের টাকাকে নিজের মনে করে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকায় দেশ-বিদেশ যাতায়াতের জন্য বিমান কিনে ফেলেন, তাঁর কাছে কুড়ি মিনিট অপেক্ষা তো বিশাল ব্যাপার! আর সেই কারণেই নোটবন্দির সময় তাঁর খামখেয়ালের জন্য শয়ে শয়ে মানুষ অনেক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গেলেও, বা লখিমপুরে কৃষকদের উপর দিয়ে গাড়ি চলে গেলেও, বা তুঘলকি কৃষি আইন বাতিলের জন্য লক্ষ লক্ষ কৃষক দিল্লি সীমান্তে বসে ঠান্ডায় অথবা কোভিডে মারা গেলেও, তাঁর কোনও হেলদোল হয় না। অথচ, বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও হাওয়াই চটি পরে নিজের দু’মেয়ের হাত ধরে শিকাগো মেরিন ড্রাইভে যেতেন সুরক্ষাকর্মীদের কোনও রকম বাড়াবাড়ি ছাড়াই। সুইস প্রেসিডেন্ট কোনও বডিগার্ড ছাড়াই ট্রেনে চেপে যাতায়াত করতেন। সুইৎজ়ারল্যান্ড পার্লামেন্টের ৯০% রাজনৈতিক নেতা এখনও ট্রেনে-বাসে-ট্রামে চেপে কাজে যান। টোনি ব্লেয়ার ও ডেভিড ক্যামেরন ইংল্যান্ডে নিয়মিত বাসে যাতায়াত করতেন। সুইডেনের কোনও মন্ত্রী বাস-ট্রেন ব্যবহার না করে ট্যাক্সি নিয়ে কাজে গেলে পরের দিন খবরের শিরোনামে চলে আসেন।

আমাদের দেশের জনগণের দুর্ভাগ্য, আমরা আজও মন্ত্রীদের, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ নাগরিক হিসাবে ভয় ও শ্রদ্ধা করতে শিখেছি, তাঁদের অন্যায়ের জন্য প্রশ্ন করতে শিখিনি। আমরা বলতে শিখিনি যে, আমাদের টাকায় যখন আপনাদের চলতে হয়, তখন আপনারাও আমাদের মতোই সাধারণ নাগরিকের জীবনযাপন করবেন, বিলাসবহুল নয়। আর সে জন্যই, আমাদের পোড়া দেশে প্রধানমন্ত্রী ২০ মিনিট অপেক্ষা করলে ‘গেল গেল’ রব ওঠে, তাঁর অনুগামীরা আকাশ-বাতাস এক করে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, এই দিন ভারতীয় ইতিহাসের কালিমালিপ্ত দিন।

অভিজিৎ মিত্র

বর্ধমান

তদন্ত চাই

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কনভয়ের পথ আটকে বিক্ষোভের যে ছবি দেখল পঞ্জাব, ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসে তার নজির বিরল। বহু কাল আগে ইন্দিরা গান্ধীকে এক বার জনসভা না করে ফিরে আসতে হয়েছিল, তবে সেখানে কারণ ছিল খলিস্তানি বিক্ষোভ ও আন্দোলন। সাম্প্রতিক বিক্ষোভের মাধ্যমে কৃষকরা বুঝিয়ে দিলেন যে, তাঁরা তাঁদের উপর এক বছর ধরে হওয়া অন্যায়ের ঘটনা ভুলে যাননি, এবং যাবেনও না। যত ক্ষণ না পর্যন্ত তাঁদের সব দাবিদাওয়া সরকার মেনে নিচ্ছে, তত দিন আন্দোলন চলবে।

যদি ধরেও নেওয়া যায় যে, ফিরোজপুরের ঘটনা নিন্দনীয় এবং দুর্ভাগ্যজনক, তা হলেও বলতে হয়, এক বছর ধরে কৃষক সংগঠনের উপর হওয়া অত্যাচার, এবং সাতশোর বেশি কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা এর চেয়ে অনেক বেশি দুর্ভাগ্যজনক। তবে এ-ও বলার কথা যে, এই ঘটনার তদন্ত, এবং দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া দরকার। ভবিষ্যতে যাতে এমন না ঘটে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করাও জরুরি।

পঙ্কজ সেনগুপ্ত

কোন্নগর, হুগলি

অন্যায় দাবি

আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ছাত্র। অতিমারির জন্য ক্যাম্পাসে পঠনপাঠন প্রথম সিমেস্টার থেকেই বন্ধ। অথচ, তৃতীয় সিমেস্টারে ভর্তির ফি-র মধ্যে ধরা হয়েছে গেম ফি, জেনারেটর ফি, লাইব্রেরি ফি, ম্যাগাজ়িন ফি, মেডিসিন ফি, স্টুডেন্ট হেলথ, ইউনিয়ন ফি। এর উপর সেশন চার্জ, টিউশন ও অ্যাডমিশন ফি নিয়ে মোট ১৫৬৫ টাকা দিতে হয়েছে। যখন ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসে ক্লাস করার সুযোগে পাচ্ছে না, না পাচ্ছে মেডিসিন বা হেলথ হোমের উপকারিতা, না পাচ্ছে লাইব্রেরি গিয়ে বই নিয়ে পড়তে, না হচ্ছে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তা হলে ওই সব খাতে কেন বিশ্ববিদ্যালয় ফি নেবে? এখন নিজের খরচে মোবাইল ডেটা রিচার্জ করে অনলাইন ক্লাস করতে হয়। পঠনপাঠন ও পরীক্ষা হয়েছে অনলাইনে। তবু পরীক্ষা বাবদ ৩০০ টাকা ফি আগেও নেওয়া হয়েছে, এ বারও নিচ্ছে। অনলাইন পরীক্ষায় যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাপানো প্রশ্নপত্র বা উত্তর লেখার পাতা কিছু দেয় না, তখন এ সব ফি গোদের
উপর বিষফোড়া।

রবিউল ইসলাম

ডোমকল, মুর্শিদাবাদ

দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর জনবিরোধী নীতির জন্য কতটা অপ্রিয় হলে রাজপথে প্রহরী-সমেত তাঁর কনভয় কৃষকদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়, এবং প্রধানমন্ত্রী তাঁর গন্তব্যস্থলে না গিয়ে যাত্রাপথ বদলে, জরুরি সভা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাতিল করে ফিরে যেতে বাধ্য হন, তারই চিত্র দেখল ভারত (‘বিক্ষোভে রাস্তা বন্ধ, ঠায় বসে মোদী!’ ৬-১)। এই ঘটনায় ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুতর লঙ্ঘন’-এর তকমা দিয়ে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যতই পঞ্জাবের সরকারকে দোষারোপ করুক না কেন, মোদী শাসনে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ তথা অসন্তুষ্টিকে বিজেপি অস্বীকার করবে কী ভাবে?

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত এক বছরে তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে প্রায় ৭০০ জন কৃষকের প্রাণ গিয়েছে। অথচ, তার পরও দেশের প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের উদ্দেশে কোনও রকম সহমর্মিতা প্রকাশ করেননি। বরং এখনও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর চেয়ারে বহাল তবিয়তে বসে রয়েছেন অজয় মিশ্র টেনি, লখিমপুর খেরির কৃষক হত্যায় যাঁর ছেলে অভিযুক্ত। কৃষকরা টেনির অপসারণ, গ্রেফতারি ও ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি গ্যারান্টির দাবিতে অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত ভাবে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পথে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন।

এতেও প্রধানমন্ত্রী তথা শাসক বিজেপি দলের কোনও রকম শিক্ষা হবে বলে মনে হয় না। তাঁরা ধনীদের আরও ধনী ও গরিবদের আরও গরিব করার চূড়ান্ত জনবিরোধী নীতি থেকে বিন্দুমাত্র সরবেন না, সে আশঙ্কা থেকেই যায়।

কুমার শেখর সেনগুপ্ত

কোন্নগর, হুগলি

সময়ের দাম

পঞ্জাবের রাস্তায় ২০ মিনিট আটকে ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, পরে বলেছেন, বেঁচে ফিরেছি এই অনেক। খবরটা পড়ে মনে হল, আমাদের দেশে সময়ের বা জীবনের দাম বোধ করি একমাত্র প্রধানমন্ত্রীরই আছে, আমরা জীবন্মৃত। আমরা যারা বনগাঁ বা হাসনাবাদ বা নামখানার ভিড়-ঠাসাঠাসি ট্রেনে গুঁতোগুঁতি করে যাতায়াত করি, বা স্ট্র্যান্ড রোডে বাসের ভিতর অফিসফেরতা ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে আটকে থাকি, বা উত্তরপাড়ায় যানজট-ভরা সরু জিটি রোড কোনও মতে পেরিয়ে, টোটো থেকে দৌড়ে নেমে, বালিঘাট স্টেশনে গিয়ে ট্রেন চলে গিয়েছে দেখে শিয়ালদহগামী বাসের পাদানিতে ঝুলতে ঝুলতে যেতে বাধ্য হই, বা তেলেনিপাড়া ফেরিঘাট থেকে দমফাটা ভিড়ে ঝুঁকি নিয়ে গঙ্গার উপর দিয়ে লঞ্চে শ্যামনগর যাই, বা নিজের অসুস্থ আত্মীয়কে নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে রাজনৈতিক র‌্যালির জন্য দু’ঘণ্টা দাঁড়িয়ে যাই, এবং যখন এই সমস্ত ক্ষেত্রে দিশেহারা হয়ে যাই কখন গন্তব্যে পৌঁছতে পারব ভেবে— তখনও কিন্তু বলি না ‘বেঁচে ফিরেছি, এই অনেক!’ কারণ এই হয়রানি আমাদের নিত্যসঙ্গী।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কথা আলাদা। যে মানুষের পা মখমলের কার্পেট ছাড়া মাটিতে পড়ে না, যে মানুষ দেশের করদাতাদের টাকায় সকাল-সন্ধে বুলেটপ্রুফ গাড়ি চড়েন, করদাতাদের টাকায় প্রতি মাসে কোটি টাকার এসপিজি প্রোটেকশন নেন, করদাতাদের টাকাকে নিজের মনে করে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকায় দেশ-বিদেশ যাতায়াতের জন্য বিমান কিনে ফেলেন, তাঁর কাছে কুড়ি মিনিট অপেক্ষা তো বিশাল ব্যাপার! আর সেই কারণেই নোটবন্দির সময় তাঁর খামখেয়ালের জন্য শয়ে শয়ে মানুষ অনেক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গেলেও, বা লখিমপুরে কৃষকদের উপর দিয়ে গাড়ি চলে গেলেও, বা তুঘলকি কৃষি আইন বাতিলের জন্য লক্ষ লক্ষ কৃষক দিল্লি সীমান্তে বসে ঠান্ডায় অথবা কোভিডে মারা গেলেও, তাঁর কোনও হেলদোল হয় না। অথচ, বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও হাওয়াই চটি পরে নিজের দু’মেয়ের হাত ধরে শিকাগো মেরিন ড্রাইভে যেতেন সুরক্ষাকর্মীদের কোনও রকম বাড়াবাড়ি ছাড়াই। সুইস প্রেসিডেন্ট কোনও বডিগার্ড ছাড়াই ট্রেনে চেপে যাতায়াত করতেন। সুইৎজ়ারল্যান্ড পার্লামেন্টের ৯০% রাজনৈতিক নেতা এখনও ট্রেনে-বাসে-ট্রামে চেপে কাজে যান। টোনি ব্লেয়ার ও ডেভিড ক্যামেরন ইংল্যান্ডে নিয়মিত বাসে যাতায়াত করতেন। সুইডেনের কোনও মন্ত্রী বাস-ট্রেন ব্যবহার না করে ট্যাক্সি নিয়ে কাজে গেলে পরের দিন খবরের শিরোনামে চলে আসেন।

আমাদের দেশের জনগণের দুর্ভাগ্য, আমরা আজও মন্ত্রীদের, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ নাগরিক হিসাবে ভয় ও শ্রদ্ধা করতে শিখেছি, তাঁদের অন্যায়ের জন্য প্রশ্ন করতে শিখিনি। আমরা বলতে শিখিনি যে, আমাদের টাকায় যখন আপনাদের চলতে হয়, তখন আপনারাও আমাদের মতোই সাধারণ নাগরিকের জীবনযাপন করবেন, বিলাসবহুল নয়। আর সে জন্যই, আমাদের পোড়া দেশে প্রধানমন্ত্রী ২০ মিনিট অপেক্ষা করলে ‘গেল গেল’ রব ওঠে, তাঁর অনুগামীরা আকাশ-বাতাস এক করে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, এই দিন ভারতীয় ইতিহাসের কালিমালিপ্ত দিন।

অভিজিৎ মিত্র

বর্ধমান

তদন্ত চাই

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কনভয়ের পথ আটকে বিক্ষোভের যে ছবি দেখল পঞ্জাব, ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসে তার নজির বিরল। বহু কাল আগে ইন্দিরা গান্ধীকে এক বার জনসভা না করে ফিরে আসতে হয়েছিল, তবে সেখানে কারণ ছিল খলিস্তানি বিক্ষোভ ও আন্দোলন। সাম্প্রতিক বিক্ষোভের মাধ্যমে কৃষকরা বুঝিয়ে দিলেন যে, তাঁরা তাঁদের উপর এক বছর ধরে হওয়া অন্যায়ের ঘটনা ভুলে যাননি, এবং যাবেনও না। যত ক্ষণ না পর্যন্ত তাঁদের সব দাবিদাওয়া সরকার মেনে নিচ্ছে, তত দিন আন্দোলন চলবে।

যদি ধরেও নেওয়া যায় যে, ফিরোজপুরের ঘটনা নিন্দনীয় এবং দুর্ভাগ্যজনক, তা হলেও বলতে হয়, এক বছর ধরে কৃষক সংগঠনের উপর হওয়া অত্যাচার, এবং সাতশোর বেশি কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা এর চেয়ে অনেক বেশি দুর্ভাগ্যজনক। তবে এ-ও বলার কথা যে, এই ঘটনার তদন্ত, এবং দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া দরকার। ভবিষ্যতে যাতে এমন না ঘটে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করাও জরুরি।

পঙ্কজ সেনগুপ্ত

কোন্নগর, হুগলি

অন্যায় দাবি

আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ছাত্র। অতিমারির জন্য ক্যাম্পাসে পঠনপাঠন প্রথম সিমেস্টার থেকেই বন্ধ। অথচ, তৃতীয় সিমেস্টারে ভর্তির ফি-র মধ্যে ধরা হয়েছে গেম ফি, জেনারেটর ফি, লাইব্রেরি ফি, ম্যাগাজ়িন ফি, মেডিসিন ফি, স্টুডেন্ট হেলথ, ইউনিয়ন ফি। এর উপর সেশন চার্জ, টিউশন ও অ্যাডমিশন ফি নিয়ে মোট ১৫৬৫ টাকা দিতে হয়েছে। যখন ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসে ক্লাস করার সুযোগে পাচ্ছে না, না পাচ্ছে মেডিসিন বা হেলথ হোমের উপকারিতা, না পাচ্ছে লাইব্রেরি গিয়ে বই নিয়ে পড়তে, না হচ্ছে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তা হলে ওই সব খাতে কেন বিশ্ববিদ্যালয় ফি নেবে? এখন নিজের খরচে মোবাইল ডেটা রিচার্জ করে অনলাইন ক্লাস করতে হয়। পঠনপাঠন ও পরীক্ষা হয়েছে অনলাইনে। তবু পরীক্ষা বাবদ ৩০০ টাকা ফি আগেও নেওয়া হয়েছে, এ বারও নিচ্ছে। অনলাইন পরীক্ষায় যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাপানো প্রশ্নপত্র বা উত্তর লেখার পাতা কিছু দেয় না, তখন এ সব ফি গোদের
উপর বিষফোড়া।

রবিউল ইসলাম

ডোমকল, মুর্শিদাবাদ

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Farm Bill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy