আমি স্ত্রী ও কন্যা-সহ ২৭ ফেব্রুয়ারি ডায়মন্ড হারবারের একটি নামকরা রিসর্টে এক রাতের বুকিং করেছিলাম। পৌঁছোনোর পর দেখলাম, কর্মচারীদের মুখে মাস্কের বালাই নেই। রুম স্যানিটাইজ় করতে বলা হলে আমাদের জানানো হল, সেটা নাকি আগে থেকেই করা রয়েছে। অথচ, রুমে আগের গেস্টদের খাওয়া বাদামের খোসা, মেঝেতে চুল, ধুলো ভর্তি। আমাদের রুমের সামনের সুইমিং পুলে অসংখ্য লোক উপযুক্ত সুইমিং কস্টিউম ছাড়াই মদের বোতল হাতে নেমে পড়েছেন। বাকিরা মাঠে মদ্যপ অবস্থায় শুয়ে। কোনও রকম কোভিডবিধি না মেনে তাঁরা সর্বত্র ভেজা জামাকাপড়ে, এমনকি লিফটেও যাতায়াত করছেন।
কিছু ক্ষণ পরে শুরু হল তারস্বরে ডিজে বক্সের অত্যাচার। যদিও সামনের মাঠটি সবার ব্যবহারের জন্য সাজানো, কিন্তু সেখানে এই শ’খানেক লোকের বিনোদনের জন্য খাবার ও মদের ব্যবস্থা করা হল। নিরাপত্তার অভাবে আমরা এক বারের জন্যেও সেখানে যেতে পারলাম না। হোটেলের ম্যানেজার ও রিসেপশনে কর্মরত কর্মীকে বার বার অভিযোগ জানিয়ে কোনও লাভ হল না। আমাদের বলা হল, এই পিকনিক রাত অবধি চলবে। কিছু করার নেই। তার বদলে আমরা যেন হোটেলের ব্যবস্থা করা গঙ্গাবক্ষের উপর প্রমোদতরণিতে করে কিছু ক্ষণ ঘুরে আসি। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছিল, আমরা তো মাত্র একটা ঘর নিয়েছি। কিন্তু পিকনিকের জন্য প্রায় সব ঘর বুক করা আছে, তাই ব্যবসার খাতিরে এটা করতেই হয়। টানা তিন ঘণ্টা শব্দের অত্যাচার ও লোকজনের অভব্য আচরণ সহ্য করার পর আর থাকতে না পেরে আমরা ফেরত আসার সিদ্ধান্ত নিই। ওই রিসর্টের কলকাতা বুকিং অফিসেও অভিযোগ জানাই।
ব্যবসার খাতিরে যদি পিকনিকের জন্য হোটেল ভাড়া দিতে হয়, তা হলে তার নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম থাকে, যার কোনওটাই এঁরা মেনে চলেননি। হোটেলে পিকনিকের কোনও বুকিং থাকলে তা সম্পূর্ণ ভাবে আলাদা জায়গায় করা হয়, যাতে অন্য গেস্টদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষায় কোনও রকম অসুবিধা না হয়। এই রকম অভিজ্ঞতা অন্য কোনও হোটেলে হয়নি।
শুভদীপ দাঁ, বরাহনগর, কলকাতা
নতুন ভোগান্তি
ভোট যত এগিয়ে আসে, সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও ঊর্ধ্বমুখী হয়। অনবরত মিছিল-প্রচারে, হল্লায় ট্র্যাফিক স্তব্ধ হয়। অনিয়ন্ত্রিত মাইক-ডিজের শব্দ বিস্ফোরণ সাধারণ মানুষের মানসিক শান্তি বিঘ্নিত করে। এই বার হয়রানির নতুন সংযোজন— মোবাইলে কল করে, একটি নির্দিষ্ট দলের প্রচারের নামে অন্য আর একটি দলের বিরুদ্ধে কদর্য আক্রমণ। এমন কোনও দিন যায়নি যে দিন আমি এক বারও কল পাইনি। চেষ্টা করেছি যে নম্বরগুলো থেকে কল আসছে, সেগুলো ব্লক করে স্বস্তি পেতে। কিন্তু ব্লক করে দেখছি, পরের দিন নতুন কোনও নম্বর থেকে আবার কল আসছে। ভোট আসে, ভোট যায়, তবু আমাদের ভোগান্তি যায় না।
সুজিৎ সাহা, চাকদহ, নদিয়া
এক নিয়ম
বসত বাড়ি, বাণিজ্যিক বাড়ি, বা ফ্ল্যাট বানাতে গেলে নির্দিষ্ট কিছু কারণের কথা মাথায় রেখে চার দিকে ছাড় দেওয়া সরকারি নিয়মের মধ্যে পড়ে। ভাল কথা। কিন্তু কারণগুলো যখন এক, তখন নিয়মানুসারে ছাড়ের পরিমাণ এক-এক পুরসভায় এক-এক রকম কেন? বেশি গোল বাধে যখন পুরসভাগুলো একেবারে গাঁ ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকে, যেমন— বারাসত, মধ্যমগ্রাম ইত্যাদি। স্থাবর সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে এ জন্য কখনও কখনও বিবাদ চরমে ওঠে, এমনকি ভাইয়ে ভাইয়েও।
যা-ই হোক, এমন ভিন্নতা নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের উচিত, বিশেষ কয়েকটা পুরসভাকে (যেমন দার্জিলিং) বাদ দিয়ে সব পুরসভার জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে একই রকম ছাড়ের নিয়ম করা।
কল্লোল সরকার, হৃদয়পুর, উত্তর ২৪ পরগনা
শুধু শিক্ষাই বাদ?
প্রায় এক বছর আমরা করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করেছি, ভবিষ্যতেও হয়তো করতে হবে। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় আমরা টিকা হাতে পেয়েছি। তবুও এই টিকা আবিষ্কারের বহু আগে থেকেই বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র খুলে দেওয়া হয়, যান চলাচলও স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সব বিধিনিষেধই শিথিল হয়ে গেল। আজ মানুষ কী কারণে রাস্তায় বেরিয়েছে, বা সে মাস্ক পরে আছে কি না, সে বিষয়ে প্রশাসন উদাসীন। ক্লাব, পার্টি, শপিং মল, রেস্তরাঁ বা পর্যটন কেন্দ্র সবার দ্বারই আজ উন্মুক্ত। একমাত্র শিক্ষার দ্বারই এখনও রুদ্ধ।
করোনা সংক্রমণ এড়াতে দীর্ঘ কাল লকডাউনে কেটেছে ‘ছাত্রজীবন’। পারিবারিক অনুষ্ঠান থেকে রাজনৈতিক ক্ষেত্র— সবখানে জনসমাগম হচ্ছে। সেখানে কোনও বাধা সে ভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে না। যত সমস্যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘিরে। অনলাইনে শিক্ষা হয় না। পরীক্ষায় সবাই বই দেখে উত্তর লিখছে, ভাল নম্বর পাচ্ছে। কিন্তু ন্যূনতম জ্ঞানার্জন হচ্ছে না।
যাঁরা চাকরির আশায় ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা কোর্স করছেন, তাঁদেরও বহু সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কম্পিউটার সংক্রান্ত যে কোনও শিক্ষা অনলাইনে গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। অনেক শিক্ষার্থীর পরিবারে কম্পিউটার থাকে না। যাঁদের থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কে সমস্যা দেখা দিলে অনেক শিক্ষার্থী ঠিক ভাবে ক্লাসও করতে পারে না। আবার অনেকের ঘর নিরিবিলিতে ক্লাস করার যোগ্য নয়। যদি ফোন বা ল্যাপটপই শিক্ষার উপযুক্ত উপকরণ হত, তা হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনই পড়ত না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মই যদি অজ্ঞানতার তিমিরে থাকে, তা হলে রাষ্ট্রের উন্নতি কি হতে পারে?
বহু বেসরকারি চাকরি-সংক্রান্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি সংস্থার দ্বারে আজও তালা ঝুলছে। নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে, তা সত্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু তাদের নীচের ক্লাসেও শিক্ষার্থীরা আছে। ভাবতে হবে তাদের কথাও। নয়তো ভবিষ্যতের দ্বার রুদ্ধ হয়ে যাবে।
সন্দীপ দাস, কলকাতা-৭৬
ননস্টিক
‘ননস্টিকের রকমসকম’ (পত্রিকা, ২৭-২) শীর্ষক প্রবন্ধটি পড়লাম। এই প্রসঙ্গে আমার কিছু সংযোজন। আজকাল রান্নার কাজ যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয়, তাই ননস্টিক ফ্রাইং প্যান, সসপ্যান ইত্যাদির ব্যবহার অনেক বেড়েছে। এতে এক দিকে যেমন গ্যাস সাশ্রয় হয়, অন্য দিকে রান্নাও তাড়াতাড়ি হয়ে যায়।
এই সরঞ্জামের ব্যবহার অন্যান্য বাসনের মতো নয়। তরকারি রান্না বা ভাজাভুজির আগে প্রথমে তেল সমগ্র প্যানটিতে ছড়িয়ে দিয়ে তার পর গ্যাস জ্বালাতে হবে। কোনও মতেই খালি প্যান গ্যাসে চাপিয়ে লাইটার জ্বালানো ঠিক নয়। দ্বিতীয়ত, স্টিলের হাতা নিজের সুবিধের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে হাতার ঘর্ষণে প্যানের টেফলন কোটিং-এ দাগ পড়ে যেতে পারে। তা ছাড়া বার বার ব্যবহার করলে সাদা দাগ লক্ষ করা যায়। তাই কাঠের হাতা ব্যবহার করাই যুক্তিযুক্ত। সাদা দাগের আস্তরণ ফুটে উঠলে সেই ফ্রাইং প্যান ব্যবহার না করাই ভাল।
তৃতীয়ত, রান্নার পর খাবার অন্য পাত্রে ঢেলে সঙ্গে সঙ্গে গরম অবস্থায় ফ্রাইং প্যান ধুয়ে ফেলা ঠিক নয়। যত ক্ষণ পর্যন্ত ঠান্ডা না হচ্ছে প্যান-টি, তত ক্ষণ এতে জল না দেওয়াই ভাল। স্পঞ্জজাতীয় নরম জিনিস দিয়ে পাত্রটি ধোয়া বিধেয়। দাগ তোলার জন্য তারের ব্রাশ কখনও ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে দ্রুত প্যান-টি নষ্ট হয়। নতুন ব্যবহারের আগে এক দিন পুরো তেল মাখিয়ে রেখে পরের দিন ধুয়ে নিয়ে, তার পর রান্নার কাজে ব্যবহার করা শ্রেয়।
উৎপল মুখোপাধ্যায়, চন্দননগর, হুগলি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy