দিল্লি ডায়েরি’তে ‘সাধ্যের বাইরে’(২২-৯) শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়ে ডাক্তারদের হাতের লেখা নিয়ে এক মজার গল্প মনে পড়ল। এক ভদ্রলোক তাঁর স্নাতক কন্যার সঙ্গে এক ওষুধের দোকানের মালিকের সদ্য ডাক্তারি পাশ ছেলের সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এক ডাক্তারবাবুর সঙ্গে দেখা করলেন। ডাক্তারবাবুর সঙ্গে ওষুধের দোকানের মালিকের যথেষ্ট সুসম্পর্ক। তাই পরিচিত ডাক্তারবাবুকে ওই ভদ্রলোক এ বিষয়ে তাঁর সপক্ষে একটু সুপারিশের জন্য বললেন। ডাক্তারবাবু সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্যাডে একটি চিঠি লিখে দিলেন, যেটি নিয়ে ওই ভদ্রলোক দোকান-মালিকের সঙ্গে দেখা করলেন। ভ্রু কুঁচকে অনেক ক্ষণ চিঠিটি পড়ার পর তিনি ভদ্রলোকের হাতে একটি অম্বলের টনিক ধরিয়ে দিলেন। অত্যন্ত অপমানিত হয়ে তিনি ডাক্তারবাবুর সঙ্গে দেখা করে ঘটনাটি বললেন। ডাক্তারবাবু সঙ্গে সঙ্গে ভদ্রলোককে নিয়ে দোকানে এসে মালিককে তাঁর এই কাজের কৈফিয়ত চাইলেন। মালিক খুব অপরাধী মুখে জানালেন, এই আন্দাজে ওষুধ দেওয়াটা তাঁর ঠিক হয়নি। আসলে তিনি প্যাডে লেখা একটা ওষুধের নামও পড়তে পারেননি। সবিনয়ে তিনি এ-ও জানালেন যে, ত্রিশ বছরে তিনি ডাক্তারবাবুর এ রকম প্রেসক্রিপশন একটাও দেখেননি। তাই কিছুটা ঘাবড়েও গিয়েছিলেন।
প্রদীপনারায়ণ রায়
শক্তিপুর, মুর্শিদাবাদ
‘তাড়াব না’
আমি এই পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করা এক জন মানুষ। আমার বাবা এবং মা উভয়েরই জন্ম পশ্চিমবঙ্গে। হ্যাঁ, দেশভাগের সময় তৎকালীন নেতাদের চুক্তি অনুযায়ী, বহু মানুষের সঙ্গে আমার ঠাকুর্দাও বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলেন। এ তথ্য বন্ধুদের কাছে আমিই তুলে ধরেছি। আজ, দিলীপ ঘোষের দু’কোটি মানুষ তাড়ানোর সংকল্প ঘোষণা এবং অমিত শাহ ও নানা মন্ত্রী নেতার তাতে সিলমোহর প্রদানের পরেই আমার ট্রেন, বাস, পাড়া, অফিসের ‘দেশপ্রেমী’ বন্ধুরা অবলীলায় হেসে হেসে নিদান দিয়ে দিচ্ছেন আমাদের বাক্স পেটরা নিয়ে বাংলাদেশে চলে যাওয়ার। কেউ আবার বরাভয় দিচ্ছেন, ‘‘না না, তোমাদের তাড়াব না।’’ ঘৃণা ও অপমানের এই উদ্যাপনে বহু অপমানিত মানুষও অবশ্য আনন্দ পাচ্ছেন এই ভেবে যে, শেষমেশ তাড়াবে না।
শোভন সেন
সাঁতরাগাছি, হাওড়া
ক্রীড়নক
সম্প্রতি রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধানকে সিবিআইয়ের হন্যে হয়ে খোঁজা এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হেনস্থার ঘটনায় অনেকেই পর্দার আড়ালে দুই রাজনৈতিক দলের দ্বৈরথ দেখতে পাচ্ছেন। প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে আসীন কয়েক জন আমলা ঘটনাচক্রে এই দ্বৈরথে তাঁদের যুক্ত করে ফেলেছেন বললে অত্যুক্তি হবে না। প্রথমত, রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধানের হদিস না মেলার কথা ধরা যাক। সুপ্রিম কোর্টে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের নোটিস গোয়েন্দা প্রধান ছুটিতে থাকায় ধরানো যায়নি। এটা ধরে নেওয়া যায়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোয়েন্দা প্রধানের ‘লিভ অ্যাড্রেস’ সিবিআইকে জানানো হয়েছিল। সেখানে যদি তাঁকে না পাওয়া যায় এবং প্রশাসন যদি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে, তা হলে সার্ভিস রুল অনুযায়ী ব্যবস্থা করার কথা। গোয়েন্দা প্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিক তো দূরস্থান, এ রকম ক্ষেত্রে অতীতে সাধারণ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করার নজির কম নেই। এ ক্ষেত্রে সে রকম কিছু করা হয়েছে বলে জানা যায়নি।
দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিগ্ৰহকারীদের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য মুখ্যসচিবকে রাজ্যপালের ফোন। সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেল, মুখ্যসচিব পুলিশ কমিশনারকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্ৰহণের কথা জানাবেন বলে রাজ্যপালকে আশ্বস্ত করেছিলেন। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব বা ডিজির নির্দেশ সত্ত্বেও পুলিশ যদি তৎপর না হয় এবং রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা বা গোয়েন্দা বিভাগের কাছে এত বড় গন্ডগোলের আগাম খবর যদি না থাকে, তা হলে কর্তব্যে গাফিলতির দায় যাঁরা দায়িত্বশীল সরকারি পদে আসীন তাঁদের ওপর স্বাভাবিক ভাবে এসে পড়ে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বদলে রাজ্যের কোনও মন্ত্রী যদি অনুরূপ ভাবে নিগ্ৰহের শিকার হতেন, তা হলে নিশ্চুপ থেকে তাঁরা রেহাই পেতেন কি? বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যদি পর্যাপ্ত পুলিশ থাকে, বহিরাগতরা তা হলে ভেতর ঢুকে তাণ্ডব চালাল কী করে? যে মহল থেকেই নিষ্ক্রিয় থাকার নির্দেশ আসুক না কেন, ব্যর্থতার দায়ভার থেকে তাঁরা মুক্ত থাকতে পারেন না। কারণ, তাঁরা আইনের রক্ষক, রাজনৈতিক দ্বৈরথে কোনও পক্ষ নয়।
একই কথা প্রযোজ্য সিবিআইয়ের ক্ষেত্রে। বুঝতে অসুবিধা হয় না, কোনও অদৃশ্য সুতোয় তাঁদের তৎপরতা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। যাঁরা এর শীর্ষপদে আছেন তাঁরাও একই দোষে দুষ্ট। রাজনৈতিক প্রভুরা চিরকালই তাঁদের অনৈতিক ইচ্ছেপূরণ আমলা এবং পুলিশের মাধ্যমে করার চেষ্টা করে আসছেন। কিন্তু তাঁদের হাতের ক্রীড়নক হয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের কয়েক জন আমলা পদের অমর্যাদা করছেন। একটা সর্বভারতীয় সার্ভিসের সম্মান ধুলোয় লুটোচ্ছেন।
ধীরেন্দ্র মোহন সাহা
কলকাতা-১০৭
খাবারের দাম
২৩ সেপ্টেম্বর। সকাল আটটা। কোরাপুট থেকে হাওড়া ফিরছি। জগদীশপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস। আমি এবং আমার সহযাত্রী উভয়েই প্রবীণ নাগরিক। একটি জানালার কাচ অস্পষ্ট। একটি আসনে ময়লা পড়ে আছে। দুপুরের খাবারের বরাত নেওয়ার ব্যবস্থা নেই। আইআরসিটিসি-র জামা পরা কেউ এক জন উঠবে। নিরামিষ থালা একশো টাকা। ক্যাশমেমো চাইলেও পাব না। অন্য এক জন আশি টাকায় ওই নিরামিষ থালা দেবে ক্যাশমেমো ছাড়া। আইআরসিটিসি-র ওই খাবারের দাম সম্ভবত ৩৫ টাকা।
মিহির গঙ্গোপাধ্যায়
কোন্নগর, হুগলি
পুজোর পাস
আমি ‘প্রণাম’-এর সদস্য। সারা বছর উন্মুখ হয়ে থাকি, দুর্গাপূজার দিনগুলি মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরব নিরাপদে। তার জন্য নিকটবর্তী থানা থেকে পাস দেওয়া হত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গত বছর থেকে ওই সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকার ও প্রণামের আধিকারিকদের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ, ওই সুবিধা আবার চালু করা হোক। অথবা প্রণাম সদস্য-সদস্যাদের যে প্রণামের কার্ড আছে, তা দেখিয়ে যেন তাঁরা ঠাকুর নির্বিঘ্নে দেখতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হোক। সেইমতো বড় বড় পুজোর দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকদের যেন নির্দেশ দেওয়া হয়
অরূপ দত্ত গুপ্ত
কলকাতা-৪৭
ফড়ে
যে কোনও সব্জি বাজারে ঠিক বেলা ১.৩০ থেকে ২টোর সময় দেখা যায়, কিছু লোক চাষিদের কাছ থেকে সব সব্জি কিনে জমা করে রাখছে। সারা দিন বাজারে বসে বিক্রি করার কষ্ট থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য চাষিরা অনেক সময় পাইকারি ভাবে সব্জি বিক্রি করে দেন। এর পর ওই লোকেরা ওই সব্জিগুলো উচ্চমূল্যে, বসা দোকানদারদের বিক্রি করে। এদের নাম ফড়ে।
চণ্ডীপুরে হাটবারে বেলা দুটোর সময় গিয়ে দেখি, কিছু চাষি দেশি ঝিঙে নিয়ে এলেন। ফড়েরা সেগুলি ১৪ টাকা কেজি, ১৬ টাকা কেজি দামে কিনে ফেলল। বিকেল ৩টের দিকে সব্জি বিক্রেতারা তাদের কাছে কিনলেন ২২ টাকা ২৪ টাকা করে। তাঁরা খুচরো বিক্রি করলেন ৩০ টাকা করে। তার মানে, চাষি এত কষ্ট করে ১৪-১৬ টাকা করে পেলেন, আর যাঁরা মাত্র তিন ঘণ্টা বাজারে এসে বসলেন, তাঁরা পেলেন ৮-৯ টাকা করে প্রতি কেজি। আর জনগণকে ১৬ টাকার সব্জি ৩০ টাকায় কিনতে হল।
সুজিত কুমার ভৌমিক
চণ্ডীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy