উত্তরবঙ্গে যখন প্রবল বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত, তখন দক্ষিণবঙ্গে ভরা বর্ষাতেও ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির দেখা নেই। চারিদিকে শুধুই এক পশলা বা মাঝে মাঝে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিধারা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষিকাজ। বর্ষার বৃষ্টিতে পশ্চিমবঙ্গের চাষ অনেকটা নির্ভরশীল। জুলাইয়ের শুরু থেকে বর্ষা খানিক দরাজ হলেও এখনও কাটেনি উদ্বেগের মেঘ। আমন ধান রোপণ আর জমির পাট ঘরে উঠবে কী ভাবে? মাঠের পাট ভাল ভাবে বাড়তে পারেনি। কারণ, মাঠের পাট ঘরে তুলতে গেলে পাট কাটার পর জলে পচিয়ে পাট থেকে তবেই বার হবে আঁশ। কিন্তু এই মরসুমে বৃষ্টির অভাবে পুকুর বা খাল বিল এখনও খালি। পাট ভেজানোর জল নেই নদী বা খালগুলিতে। অপর দিকে, আমন ধান চাষের ক্ষেত্রেও জলের অভাবে চারা রোপণ করতে পারছেন না চাষিরা। কোথাও কোথাও মিনি বা ডিপ-টিউবওয়েলের পাম্প চালিয়ে ধান-চারা রোপণের চেষ্টা চলছে।
বিগত বছর ঠিক একই রকম প্রতিকূল পরিস্থিতি ছিল। পরিস্থিতির দ্রুত বদল না হলে যে বড়সড় সঙ্কট অপেক্ষা করছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সারা বছরের রসদ কোথা থেকে আসবে তা ভেবেই চিন্তা বাড়ছে প্রতিটা কৃষক পরিবারে। সরকারি সাহায্য মিলবে কি না, তা নিয়েও বাড়ছে উদ্বেগ। আমাদের রাজ্যের অর্থনৈতিক কাঠামো অনেকটাই কৃষির উপর নির্ভরশীল। চাষিরা প্রতিনিয়ত সঙ্কটের সম্মুখীন হলে তার প্রভাব আমাদের কৃষিপ্রধান অর্থনীতিতে অবশ্যম্ভাবী। তাই সময় এসেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক রাজ্যের কৃষক সমাজকে আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে শস্য বিমা, কৃষি ঋণের পাশাপাশি আরও কার্যকর কৃষিবান্ধব নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করার।
পাভেল আমান, হরিহরপাড়া, মুর্শিদাবাদ
বিষপ্রয়োগ
সম্প্রতি খবরে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় জৈব চাষে উৎসাহ দিতে কৃষক সমাবেশ করা হচ্ছে। যদিও এ সব সমাবেশ শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হচ্ছে। কারণ, জৈব সার ব্যবহারকারী চাষির উৎপাদন মূল্য বেড়ে যায় অনেকখানি। সে তুলনায় তাঁরা সঠিক দাম পান না। সস্তার রাসায়নিক সার ব্যবহারকারীর কাছে প্রতিযোগিতায় হেরে যান। যেমন করে পাট চাষি প্লাস্টিক কারবারির কাছে হেরে গিয়েছেন। পাটজাত দ্রব্য আমাদের পরিবেশ তথা জীবন বাঁচাতে পারত, অথচ দাম বেশি বলেই সে দ্রব্য ব্যবহারে আমাদের অনীহা। প্লাস্টিক জীবন হানিকর, কিন্তু কম দামি। সচেতনতা এবং অর্থের অভাবে আমরা ধ্বংসকেই বেছে নিয়েছি প্রতিনিয়ত। প্রশাসনিক উদাসীনতাও এ ক্ষেত্রে দায় এড়াতে পারে না।
কৃষিজ ফসলে বিষাক্ত রাসায়নিক প্রয়োগের ফলস্বরূপ মস্তিষ্ক বিকৃতি থেকে মারণ ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবু বাজারে গেলেই দেখা যাচ্ছে উজ্জ্বল হলুদ রঙের পাকা কলা, পেঁপে কিংবা আম। খেয়াল করলে দেখা যাবে, যতটা পাকা উপর থেকে দেখা যাচ্ছে অতখানি ভিতরে নয়। এর কারণ, গাছের অপুষ্ট ফল মাত্র চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে রঙিন করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট-এর মতো কিছু রাসায়নিক, শরীরের উপর যার প্রভাব ভয়ানক। অথচ, ওই ফলগুলি পরিপক্ব অবস্থায় গাছ থেকে সংগ্রহ করলে মানুষ বেঁচে যেত। দ্রুত, বেশি লাভ করার ইচ্ছায় স্বাস্থ্য নষ্ট হচ্ছে। পটল, ঝিঙে, সবুজ রাখতে মেশানো হচ্ছে ভয়াবহ তুঁতে। মুড়ির সঙ্গে মেশানো হচ্ছে ইউরিয়া। এ সব খুব গোপনে হচ্ছে, এমনও নয়। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, দ্রুত ব্যবস্থা করা হোক। প্রয়োজনে কড়া আইন প্রয়োগ করা হোক।
দীপায়ন প্রামাণিক, গোবরডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা
দামি টোম্যাটো
টোম্যাটো ফল না আনাজ, রসিক বাঙালি এই চর্চা ছেড়ে এখন মেতেছে সেই টোম্যাটোর দাম নিয়ে। বড় একটা ঝুড়িতে লাল টুকটুকে টোম্যাটো, তাতে পড়েছে সকালের রোদ। আর তা যেন বাজারে আনাজের রানি হয়ে চোখ টানছে। কিছু দিন আগে কাঁচা লঙ্কার দর তিনশো টাকা কিলো ছাড়িয়েছিল, পাল্লা দিয়ে আদাও ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা ছুঁই ছুঁই হয়েছিল। এখন যদিও কমেছে অল্প। তবে টোম্যাটোর এই দাম বেড়ে যাওয়াটা বড্ড গায়ে লাগছে। কাঁচা লঙ্কা পঞ্চাশ কি একশো গ্ৰাম কেনা যায়, রান্নায় অল্প হলেই হয়ে যায়। আদার ক্ষেত্রেও তাই। কিন্তু টোম্যাটো তো কম করে ২৫০ গ্ৰাম নিতেই হবে, যার মূল্য কিছু দিন আগেও দিতে হয়েছে চল্লিশ টাকা প্রায়।
দাম বাড়ার কারণে টোম্যাটোর দর এখন আর এক কিলো বা আধ কিলোর হিসাবে বিক্রেতাকে বলতে শোনা যাচ্ছে না। বলছেন, পনেরো টাকা বা আঠারো টাকায় একশো গ্ৰাম। প্রয়োজন যেখানে পাঁচশো, সেখানে রান্নাঘরে বুড়ি ছোঁয়ার মতো করে কেনা হচ্ছে এই প্রিয় আনাজ। একটা টোম্যাটোকে দুই কি তিন টুকরো করে রান্নায় স্বাদ আনার চেষ্টা করেছেন গৃহিণীরা। অনেক ক্ষেত্রে আবার টোম্যাটো ছাড়াই রান্না হয়ে যাচ্ছে। আর রাঁধুনি মাত্রেই জানেন, খাবারের পাতে টোম্যাটোর কী গুণ। যদিও সব আনাজপাতির দামই ঊর্ধ্বমুখী। হোটেল-রেস্তরাঁ থেকে প্রান্তিক, খেটে-খাওয়া মানুষের চা-দোকানে বসে টিফিনের ঘুগনি, আলুর দম, তেলেভাজা সহযোগে মুড়িও বেশ দামি হয়ে উঠেছে, যেখানে পদগুলি টোম্যাটো, আদা, রসুন, কাঁচা লঙ্কা ছাড়া চলেই না।
সনৎ ঘোষ, বাগনান, হাওড়া
পুকুরের তথ্য
মানবেশ সরকারের লেখা ‘জলাশয় গণনায় ভুল অনেক’ (৩-৭) শীর্ষক প্রবন্ধটিতে তথ্যগত কিছু ভুল আছে। যেমন, চণ্ডীতলার ইটখোলার পুকুরটি কালো ছাই দিয়ে তৎকালীন শাসক দল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ভরাট করে ১৯৮৫ সালে। সেই সময় মধ্যমগ্রাম-সোদপুর রোডের উপর এই জলাশয়কে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে চণ্ডীতলার কিছু পরিবেশপ্রেমী মানুষ প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। ১৯৯১ সালে পানিহাটিতে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে তারা এই আন্দোলনে শামিল হয়। ১৯৯৩ সালে সরকার এই জমি খাস ঘোষণা করে। অবশেষে হাই কোর্টের রায়ে এই জলাশয়ের পুনঃখনন হয়। তাই এই লড়াই তিন দশকেরও বেশি সময়ের, প্রবন্ধকার-উল্লিখিত দু’দশকের নয়। ওই পুকুরের পাশে আর একটি পুকুর (খোসোদের পুকুর) ২০১৬ সালে ভরাট হওয়া শুরু হলে এপিডিআর তীব্র আন্দোলন করে এবং মৎস্য দফতরের হস্তক্ষেপে ভরাট বন্ধ হয়। জলাশয়টি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে এপিডিআর আজও সক্রিয়। তাই এটা জলাশয় গণনার (২০১৮-১৯) বছরখানেক আগে ভরাট হচ্ছিল, এই বক্তব্য ভুল।
পশ্চিমবঙ্গ অন্তর্দেশীয় মৎস্য আইন ১৯৮৪ (সংশোধিত ২০০৮) ধারা ১৭ক অনুসারে, যে কোনও পরিমাপের জলাশয় ও জলাভূমি বোজানো আইনত নিষিদ্ধ। অর্থাৎ, ‘পাঁচ কাঠা বা তার বেশি জলাশয় বোজানো নিষিদ্ধ’। বর্তমান সংশোধিত আইনে এই সংস্থান নেই।
তুফান চক্রবর্তী, কলকাতা-১১০
শিক্ষার্থীর দাবি
সম্প্রতি নার্সিং কলেজের ছাত্রী হওয়ার সুবাদে ডিউটি পড়েছিল কলকাতার একটি কেন্দ্রীয় হাসপাতালে। ভেবেছিলাম, রাজ্য সরকারের হাসপাতালের তুলনায় কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ কার্যালয়ে বেশি সুব্যবস্থা, আর জিনিসপত্রের বেশি সরবরাহ থাকবে। কিন্তু পুরোপুরি ভুল ধারণা। সেখানে নাকি সরঞ্জামের এতই অভাব যে, একটা ইনজেকশনের সিরিঞ্জ রোগী যত দিন থাকবে তত দিন ব্যবহার করতে হবে। অবাক লাগল— যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারীদের মাইনে এতটা বেশি, সেখানে একটা হাসপাতালে জিনিসপত্রের বরাদ্দ এত কম কেন?
পাঞ্চালী, কলকাতা-১৩৫
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy