‘জোকারের প্রশংসায়’ (আনন্দপ্লাস, ১৩-৯) খবরটি পড়ে এই লেখা। লেখাটির এক জায়গায় আছে ‘‘হিথ লেজার, জেরার্ড লেটোর পরে ওয়াকিন ফিনেক্স জোকারের চরিত্রে।...’’ কিন্তু, হিথ লেজারের জোকার ‘দ্য ডার্ক নাইট’ (২০০৮) জনপ্রিয় হওয়ার প্রায় বিশ বছর আগেই ১৯৮৯ সালে যিনি জোকারের চরিত্রে অভিনয় করে জনসাধারণের কাছে জোকারকে পরিচিত করিয়েছিলেন, তিনি হলেন অস্কার জয়ী অভিনেতা জ্যাক নিকলসন (ছবিতে)। তাঁর নাম বাদ দিলে জোকার সম্বন্ধে লেখাটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। টিম বার্টনের পরিচালনায় ‘ব্যাটম্যান’ (১৯৮৯) ছবিতে নায়ক ব্যাটম্যান (মাইকেল কিটন) হলেও ‘দুর্ধর্ষ দুশমন’ জোকারের ভূমিকায় জ্যাক নিকলসনকে যেন অপরিহার্য মনে হয়েছিল। এবং জোকারের চরিত্রের যে ধারা তা জ্যাক-ই তৈরি করেছেন। ব্যাটম্যানের গ্রাফিক নভেল ‘দ্য কিলিং জোক’ অবলম্বনে নির্মিত সেই ছবিতে খ্যাপাটে খুনি জোকার যেন কমিক্স-এর পাতা থেকে উঠে এসেছিল বড় পর্দায়!
তবে বড় পর্দায় এর আগেও ১৯৬৬ সালের মজাদার ‘ব্যাটম্যান’ ছবিতে দর্শক জোকারকে দেখেছিল। সেই ছবির জোকার সিজার রোমেরো তো নিজের গোঁফ পর্যন্ত কাটতে রাজি হননি। মুখে সাদা রং মেখেই তিনি পর্দায় জোকার সেজেছিলেন। কিন্তু, সিরিয়াস অর্থে যদি প্রথম কেউ রুপোলি পর্দায় জোকারকে মূর্ত করে থাকেন, তিনি আর কেউ নন, জ্যাক নিকলসন! তাই তাঁর নাম বিস্মরণের আড়ালে চলে গেলে পর্দায় গথাম নগরীর ‘অপরাধের রাজপুত্র’ জোকারের আলোচনা যেন অন্ধকারে থেকে যায়। প্রসঙ্গত, জ্যাক নিকলসন, হিথ লেজার বা জেরার্ড লেটো— বড় পর্দায় এই তিন ‘জোকার’ই শ্রেষ্ঠ সহ-অভিনেতার অস্কার পেয়েছেন! নোলানের ‘ডার্ক নাইট’ ট্রিলজি আক্ষরিক অর্থেই ডার্ক, কিন্তু টিম বার্টনের ‘ব্যাটম্যান’ (১৯৮৯) যেন জীবনের সাদাকালোর মিশেলে তৈরি এক চলমান গ্রাফিক নভেল!
শঙ্খশুভ্র চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৭৮
‘নিচু পদ’ কেন
‘নিচু পদই সই...’ (১২-৯)সংবাদটি পড়লাম। ‘ওয়ার্ড মাস্টার’ অধুনা ‘ফেসিলিটি ম্যানেজার’ সরকারি হাসপাতালের একটা গুরুত্বপূর্ণ পদ। যে সরকারি পোস্টের ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতক, সেটাকে দরখাস্তকারীদের মধ্যে যারা ইঞ্জিনিয়ার স্নাতক সেই যোগ্যতার নিরিখে নিচু পদ বলা হয়েছে। কেন বলা হয়েছে, প্রতিবেদনের শেষ অনুচ্ছেদে তার উত্তরও লেখা আছে। সেটাকে মান্যতা দিয়েই বলি, রাজ্যে সরকারি ছাড়া বহু বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দৌলতে এটা এখন আর বলা যাবে না যে— ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্ৰি কেবল মেধাবী ছাত্রদেরই কুক্ষিগত সম্পদ। এই ডিগ্রিধারীরা অনেকে আইটি সেক্টরে নিজেদের কাজের যোগ্যতা প্রমাণ করে চলছে। সংখ্যায় বেশি হওয়ার জন্যেই অন্য গুরুত্বপূর্ণ পেশায় দরখাস্ত করায় অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমরা এই প্রজন্মের জন্য প্রয়োজনীয় শিল্পস্থাপনই করতে পারিনি।
অঞ্জন কুমার শেঠ
কলকাতা-১৩৬
প্রয়াস প্রশংসনীয়
‘বয়স্কদের সুরক্ষার পাশে থাক ক্লাবও, চাইছে পুলিশ’ (১১-৯) এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অল্প বক্তব্য রাখছি। সম্প্রতি শহরে পর পর চুরি, ডাকাতি, এমনকি কয়েকটি খুনের ঘটনার পর লালবাজার ‘বয়স্ক দম্পতিদের নিরাপত্তায় একাধিক নির্দেশ জারি করেছিল’। ‘এ বার তাঁদের সুরক্ষা এবং দেখভালের জন্য স্থানীয় ক্লাবগুলির সাহায্য চাইল পুলিশ।’ কলকাতা পুলিশের প্রবীণদের জন্য ‘প্রণাম’ উদ্যোগকে আরও সক্রিয় করার কথাও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এর শুরুর কিছু পরিচিতি পেয়েছি। গত ৫ অগস্টে পর্ণশ্রী থানার ওসি প্রায় জন-কুড়ি ‘প্রণাম’ সভ্যকে নিয়ে সভা করেন, আমি সস্ত্রীক আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। ভাল আলোচনা হয়। আমাদের কী কী বিষয়ে সতর্কতার দিকে নজর দিলে ভাল সে ব্যাপারে অবহিত করা হয়। সম্ভব হলে সিসিটিভি লাগাতে পরামর্শও দেওয়া হয়। পুলিশের এই প্রয়াস প্রশংসনীয়।
এ বার যে সংযোজনের কথা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে তা হল প্রবীণদের সুরক্ষা ও দেখাশোনার জন্য ক্লাবগুলির সাহায্য। তার সুফল পাওয়া যাবে কি না, সময়ই বলতে পারবে। মাত্র কয়েক দিন আগেও গণেশ পুজোয় পর্ণশ্রীতে দিন চার/পাঁচ যে শব্দ দানবের শিকার হয়েছি, তখন অবধি ‘দেখাশোনার সদিচ্ছার কোনও ইঙ্গিত পাইনি। এই শিকার অবশ্য আবালবৃদ্ধ সকল বাসিন্দাই। দুর্গাপুজো পাঁচ দিনের, আর কালী পুজো দু’দিনের। ক্লাবগুলির পুজো উদ্যাপনের ও স্ফূর্তির সময় অনেক বেশি দিনের। তারস্বরে গান-বাজনা অনেক রাত অবধি রোজ চলে। সরকারি সময়সীমা ও ডেসিবেলসীমা কাগজে কলমে মাত্র।
এর উপর আছে দিনের পর দিন মেলার চাপ এই আবাসিক পাড়ায়। বাড়ি ঘিরে মেলা। বাড়িতে দু’টি গেট থাকলে একটিই মাত্র ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। কোনও কারণে সেটি হঠাৎ ব্যবহারে বাধা থাকলে পরিণতি— গৃহবন্দি। এমনটা অতীতে দু’বার ঘটেছে আমাদের দু’জনের। অন্য গেটটি ব্লক করে দেওয়া হয়। গ্যারাজ থাকলে এমন সঙ্কীর্ণ পথ ছাড়া হয় যে গাড়ি বার করা ও ঢোকানো যেন রীতিমতো ড্রাইভিং পরীক্ষা; সন্ধ্যায় সে পথও রুদ্ধ। কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি হলে অসহায় অবস্থা। বয়স্ক-বয়স্কা বলে আমাদের দু’জনের কোনও ছাড় নেই— ‘অ্যাডজাস্ট’ করতে হবে।
এটা এক বাস্তব নমুনা। এ অবস্থা যে অল্পবিস্তর সারা কলকাতা শহর জুড়ে, সেটা বোঝাই যায়। অবশ্যই এ নমুনা উৎসবের মাসগুলির, যার সংখ্যা, মনে রাখতে হবে, বেড়েই চলেছে। কিন্তু সুরক্ষা ও দেখভালের প্রয়োজন বারো মাসের। তার জন্য বিশেষ প্রয়োজন হল বিবেক ও সঠিক মানসিকতার।
সুতরাং কলকাতা পুলিশের এই নবতম প্রয়াসকে সাফল্যমণ্ডিত করতে হলে ক্লাব কর্তাদের ও সক্রিয় সভ্যদের বিবেক জাগ্রত করবার ও সঠিক মানসিকতা আনবার প্রয়াস নিতে হতে পারে। এই প্রসঙ্গে এই কথাটিও সংযোজন করতে দ্বিধা নেই যে, তাদের মাথার উপরে যাদের সস্নেহ আশীর্বাদ আছে তাদের সমর্থন ব্যতীত এই প্রয়াস অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে। আশা রাখছি যে সঠিক রাস্তা অবলম্বন করে কলকাতা পুলিশ বয়স্কদের জন্য তাদের এই প্রয়াসে সফল হবে।
সুমনশঙ্কর দাশগুপ্ত
কলকাতা-৬০
টাকা তোলা
‘দলের নামে টাকা তুললেই গ্রেফতার: মমতা’ শীর্ষক সংবাদটির পরিপ্রেক্ষিতে জানাই, অসাধারণ এক জন মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা পেয়েছি, যিনি সত্যি বলতে পিছপা হন না। দলের থেকে মানুষ বড়। দলের নাম করে টাকা ওঠে। তা যে নেতারা ব্যবহার করে সেটা বোঝা যায়। কিন্তু টাকা যদি পার্টি অফিসে না যায় তা হলে দল চলে কী করে? মুখ্যমন্ত্রী জানলেও জানতে পারেন, টাকা কিন্তু আঞ্চলিক নেতারা কেন্দ্রীয় দলের জন্য পাঠান। আর মাননীয়া নির্দেশ না দিলে সম্ভব কি নেতাদের গ্রেফতার করা? এ জিনিস বন্ধ করা সম্ভব নয়?
রীতা পাল
কলকাতা-২৪
জহরের অভিনয়
রবিবাসরীয়তে বিরল প্রতিভা অভিনেতা জহর রায়কে নিয়ে (১৫-৯) লেখাটি উপভোগ্য। রচনাটিতে একটি তথ্যভ্রান্তি লক্ষ করলাম। শুধু ‘পহেলা আদমি’ নয়, অশোককুমার, সুচিত্রা সেন (দ্বৈত ভূমিকা), ধর্মেন্দ্র অভিনীত ‘উত্তর ফাল্গুনী’র হিন্দি ভার্শন— ‘মমতা’ চলচ্চিত্রে তিনি অশোককুমারের পরিচারকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন— একটি দৃশ্যে তাঁর চোখ-ঘুরানোর দৃশ্য আজও মনে আছে। এ ছাড়া অন্য কোনও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন কি না, সে তথ্যও এই প্রসঙ্গে জানতে ইচ্ছে করছে।
পরিমল সমাদ্দার
কলকাতা-৯৬
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy