ফাইল চিত্র।
‘বরফ বৃত্তান্ত’ (কলকাতার কড়চা, ৫-৮) পড়ে, কিছু সংযোজন। ১৮৩৩ সালে বস্টনের টাস্কানি জাহাজে করে বরফ এসেছিল ১৮০ টন। সে দিন বরফ নিয়ে সারা কলকাতায় এত হইচই শুরু হয়, অফিস আদালত, দোকানপাট, সব বন্ধ। প্রতি সের বরফ বিক্রি হয় চার আনায়। লর্ড বেন্টিঙ্ক ও কলকাতার ইংরেজরা আপ্লুত হয়ে জাহাজের ক্যাপ্টেন রজার্সের সম্মানার্থে টাউন হল-এ এক সংবর্ধনায়, তাঁকে একটি রুপোর কাপ ও অভিনন্দনপত্র প্রদান করেন। বরফ সংরক্ষণের জন্য ইংরেজ সরকার ব্যাঙ্কশাল স্ট্রিটে একটি গম্বুজওয়ালা গুদাম নির্মাণ করে। এটি হল আইস হাউস। পরে লখনউতে যখন সরকারি বরফ কারখানা তৈরি হয়, তখন দু’আনায় এক সের বরফ পাওয়া যেত।
প্রশান্ত নাগ
কলকাতা-৪০
নির্বাসন ২৫
নির্বাসনের রজতজয়ন্তী, এক নির্মম পরিহাস। তিনি তসলিমা নাসরিন। বাংলা ভাষায় লেখার মাহাত্ম্য তাঁকে ভূগোল জাতপাত এবং ধর্মের রক্তচোখ থেকে বাঁচাতে পারেনি। কী করে পারবে? মেয়ে হয়ে তিনি নির্ভয়ে নিঃসঙ্কোচে মেয়েবেলা এবং গোটা মেয়েজীবনের কথা লিখবেন, পুরুষের সমাজ তা কেমন করে মেনে নেবে? কোনও মেয়ে লেখক যদি লেখেন, পুরুষ আমাকে এক লাথি মারলে আমি তাকে দশ লাথি ফিরিয়ে দেব, তা হলে তাঁকে গিলোটিনের হাত থেকে বাঁচাবে কে?
এই উগ্রতা আর অনমনীয় মনোভাব তসলিমার বিপদ বাড়িয়েই চলেছে। কোনও কিছুতেই পরোয়া করেন না তিনি। এই দীর্ঘ পঁচিশ বছরই তিনি পয়েন্ট অব নো রিটার্নে দাঁড়িয়ে আছেন। প্রশ্ন হল, এই অবস্থা থেকে তাঁকে রক্ষা করবে কে? এর আগে বাংলা ভাষায় লিখে কোনও লেখকের এমন পরিণাম হয়নি। বাংলার যে বুদ্ধিজীবী আর সুশীল বাবুদের দায় ছিল, তাঁদের তো তসলিমা নাসরিন নামটি শোনামাত্র ভাবসমাধি হয়। রাজনীতির প্রগতিবাবুদের অবস্থা আরও খারাপ। ভোটাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে তাঁকে রাতারাতি বিদায় করতে পারলে বাঁচেন।
কেউ নেই আপনার পাশে তসলিমা। এই রজতজয়ন্তীর মুখে দাঁড়িয়ে আপনাকে সেলাম জানিয়ে বলি, লড়াইটা শেষ পর্যন্ত আপনাকে একাকেই করতে হবে, সেই সঙ্গে খুঁজতে হবে লড়াকুদের। গ্রিসের সেই মহান দার্শনিক ডায়োজিনিসের মতো আপনিও দিনের বেলায় লণ্ঠন হাতে কলকাতার রাস্তায় নেমে আসুন। কেউ জানতে চাইলে বলুন, মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছি।
অরুণকান্তি দত্ত
বেলুড় মঠ, হাওড়া
শূন্য হাতে
হালিশহরে রাইফেল ট্রেনিং নিয়ে, পুলিশের সঙ্গে রাইফেল নিয়ে কাজ করে, জেলাশাসকের বাংলো গার্ড দিয়ে, ভোটে নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর এক জন মানুষ যখন শেষ বয়সে শূন্য হাতে বাড়ি ফেরেন, তা খুব কষ্টের। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে দু’বার জানিয়েছিলাম। কাজ হয়নি।
নন্দদুলাল মুখোপাধ্যায়
বাঁকুড়া
সরাসরি বলুন
এই মুহূর্তে কাটমানি এই রাজ্যে এক বিরাট ভূমিকা পালন করছে। এটা যদি একটা বৃহত্তর আন্দোলনের রূপ নেয়, তবে আরও ভাল হবে। আসুন আমরা সবাই ‘মিটু’ আন্দোলনের মতো, কবে কোথায় কী ভাবে, জেনে বা না-জেনে, কাটমানি দিতে বাধ্য হয়েছি, সৎ ভাবে স্বীকার করি সোশ্যাল মিডিয়ায়। গৃহঋণ থেকে আরম্ভ করে প্রাইমারি টিচারি, ব্যাঙ্ক লোন থেকে মিউটেশন, পার্টিফান্ড থেকে সিন্ডিকেট, কিছু বাদ দেবেন না। লজ্জার বা ভয়ের কোনও কারণ নেই। আপনার পিছনে কোনও দল না থাকলেও, মনে রাখবেন, সাধারণ বঞ্চিত মানুষ আছেন।
পোপো মুখোপাধ্যায়
মুড়াগাছা, নদিয়া
শিশুমন বদলাচ্ছে
বুকার-বিজয়ী ব্রিটিশ লেখক হাওয়ার্ড জ্যাকবসনের আশঙ্কা, আগামী কুড়ি বছরের মধ্যে শিশুদের মূর্খ বানাবে ফেসবুক-টুইটার। এ আশঙ্কা অমূলক নয়, তবে, একটি পাঁচ কিংবা ছ’বছরের শিশুকে যেমন-তেমন গল্প বলে আজ আর বোকা বানানোও সম্ভব নয়। বাঘের ভয়, ভূতের ভয়— শিশুমনে সব যেন উধাও। কোথায় গেল সেই শাঁকচুন্নি, ব্রহ্মদত্যি, মামদো কিংবা গেছো ভূতের দল ! শিশু কেমন করে চিনবে অশ্বত্থ কিংবা শেওড়া গাছ ? ভূতের ভিডিয়ো দেখার সুযোগ হয়তো আছে, কিন্তু তাতে গা-ছমছম করা পরিবেশ গড়ে ওঠার সুযোগ নেই। ছ’বছরের নাতি দাদুকে বলে, ‘‘ভূত বলে কিছু হয় না। আমাদের শরীরে টু হান্ড্রেড সিক্স টোটাল হাড় আছে। হাড়গুলো জুড়ে দিলে স্কেলিটন যেটা হয়, সেটাই ভূত।’’
অপর একটি শিশু বাঘের ভয় দেখালে বলে, ‘‘আমার কাছে ওষুধ আছে। বাঘ এলে ওষুধ খাইয়ে দেব, বাঘ অজ্ঞান হয়ে যাবে, তার পর মরে যাবে।’’ গল্পকার সম্বুদ্ধ ‘বাঘের থাবা’ গল্পের শুরুতে লিখেছেন: ‘‘...তখন সোঁদরবন ছিল বাঘের আড্ডা। ঝোপে ঝাড়ে বাঘ গিসগিস করত। স্টীমার চলবার সময় নদীর দু পাড়ে বাঘ এসে গজরে লাফিয়ে পড়ত। এখন সে বাঘ আর নেই, মরে হেজে গেছে। যা দু-একটা এখনও দেখা যায়, সে না-খেয়ে আধমরা। পূর্বপুরুষের সে তেজ আর নেই।’’ এ গল্প না পড়েই আজকের শিশু বাঘ সম্পর্কে ভয়মুক্ত।
আজকের শিশু ঝোপঝাড় দেখেনি। সাপের ভয় যদি বা তাকে, সন্ধ্যার পর সাপ বলতে নেই— শুনে সে হাসে। ‘‘ভূত আমার পুত, পেতনি আমার ঝি/ রাম-লক্ষ্মণ বুকে আছে, করবি আমার কী’’ ছড়ায় তার প্রয়োজন নেই। প্রযুক্তির কল্যাণে শিশুর মন বদলে গিয়েছে। ‘কাউবয়’ খেলনা হাতে নিয়ে ছ’সাত বছরের শিশু গ্রামের রাখাল-বালক সম্পর্কে সঠিক শিক্ষা লাভ করতে পারছে না।
শিবাশিস দত্ত
কলকাতা-৮৪
একই জায়গায়
বনগাঁ মহকুমাতে একমাত্র সিটি স্ক্যান মেশিনটি আছে নবনির্মিত বনগাঁ পুরসভা ভবনে। ১৬-৭ তারিখে পুরসভার আস্থাভোটের কারণে সেখানে একটি অস্থির অবস্থার সৃষ্টি হয়। তাতে রোগীর ওখানে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। ভবিষ্যতে আস্থাভোট অন্য কোনও প্রশাসনিক ভবনে করলে ভাল হয়।
অঙ্কন মুন্সী
চাঁপাবেড়িয়া, উত্তর ২৪ পরগনা
আরও হেরিটেজ
হেরিটেজ শহরের তকমা পেতে চলেছে নবদ্বীপ। কিন্তু ভেবে দেখা যেতে পারে, হুগলির শ্রীরামপুর থেকে প্রায় ব্যান্ডেল পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাটিও ‘হেরিটেজ’ তকমার উপযুক্ত।
অঞ্চলটি বয়সে কলকাতার চেয়েও বড়। চারটি ইউরোপিয়ান জাতি হুগলির এই এলাকা এক সময় শাসন করেছিল। শ্রীরামপুর শাসিত হয়েছিল প্রথমে ড্যানিশ ও তার পর ব্রিটিশদের দ্বারা। চন্দননগর ফরাসিদের এবং ব্যান্ডেল ও চুঁচুড়া পর্তুগিজদের দ্বারা শাসিত। এই চারটি জায়গার এখানে-ওখানে ছড়িয়ে আছে এই ইউরোপীয়দের গড়ে যাওয়া বা রেখে যাওয়া অসংখ্য স্থাপত্য ও দ্রষ্টব্য, যেগুলির অধিকাংশই এখন ভাগ্যক্রমে রাজ্য সরকারের নজরে পড়ায় সংস্কারের পথে। শ্রীরামপুরে গেলেই দেখতে পাওয়া যাবে ড্যানিশ কফি হাউস, ওঁলাদে চার্চ, উইলিয়াম কেরির সমাধিস্থল ছাড়াও অনেক দর্শনীয় জায়গা। ব্যান্ডেল ও চুঁচুড়ায় ব্যান্ডেল চার্চ, চুঁচুড়ায় ইমামবাড়া ও অসংখ্য রঙিন ঝাড়বাতি সজ্জিত ঘণ্টাঘর।
এলাকাগুলির প্রাচীনতা ও সমৃদ্ধি বিচার করলে এগুলিকে ‘হেরিটেজ’ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করার কথা ভাবা যায়। তাতে দেশি-বিদেশি পর্যটকও বাড়ার সম্ভাবনা।
তাপস সাহা
শেওড়াফুলি, হুগলি
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy