শুনশান আমস্টালভিন। —নিজস্ব চিত্র।
আমরা থাকি নেদারল্যান্ডসে আমস্টারডামের একেবারে পাশের শহর আমস্টালভিন-এ। গত ছয় বছর ধরে আমি এবং আমার স্বামী কর্মসূত্রে এখানেই থাকি। গত জানুয়ারি মাসে ছুটি কাটিয়ে যখন ভারত থেকে ফিরছিলাম, তখন করোনাভাইরাস চিনে মহামারির আকার ধারণ করেছিল। মনে আশঙ্কা ছিল যে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়লে কী যে হবে। আর সেই আশঙ্কাই সত্যি হল!
২৭ ফেব্রুয়ারি নেদারল্যান্ডসে প্রথম করোনা-আক্রান্ত চিহ্নিত হয়। ইটালি সহ অন্যান্য দেশে তখনই করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এখানে ১৬ মার্চ থেকে অফিস, স্কুল, কলেজ, ডে-কেয়ার সব বন্ধ হয়ে গেলো। সম্পূর্ণ লকডাউন এখানে কখনও হয়নি, কিন্তু সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী বেশিরভাগ মানুষই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছে। জরুরি পরিষেবা সবই উপলব্ধ আছে, সুপারমার্কেটও সব খোলা আছে। শুরুর দিকে কিছু জিনিসপত্রের ঘাটতি থাকলেও, এখন তা নিয়ন্ত্রণে। সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করলে মোটা অঙ্কের জরিমানার নির্দেশ আছে।
আরও পড়ুন: মারের সাগর পাড়ি দেব
আরও পড়ুন: এক মাস গৃহবন্দি, ম্যাঞ্চেস্টারে রোজ দেখছি মৃত্যুর মিছিল
এখানে প্রতিদিন আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। প্রতিদিনের পরিসংখ্যান মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। বাইরে বসন্তের ঝলমলে রোদ্দুর (এখানে যা খুব বিরল) হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কিন্তু পুরো শহরই গৃহবন্দি। আমাদের আড়াই বছরের মেয়েও বোধহয় বোঝে যে তার এ বারের বাড়িতে থাকা অন্য ছুটির মতো নয়। এই সময় নেই বাইরে খেলা, নেই বাবা-মায়ের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া। কর্মব্যস্ত জীবনে তিনজন একসঙ্গে সময় কাটাবার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। কিন্তু সে সুযোগ এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে হবে, কোনও দিন ভাবিনি।
খবরে দেখলাম এখানকার পার্ক, স্কেটিং এরিয়া সব কিছু বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতার জন্য। আমাদের বাড়ি থেকে বেরোলেই আমস্টালভিন শপিং সেন্টার। কখনও হাঁটতে বেরলে দেখি স্বতঃস্ফূর্ত শহরটা কেমন স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। ভারতে থাকে পরিবার-পরিজনদের জন্য দুশ্চিন্তা হয়। মনে হয়, আবার কবে দেখা হবে। হঠাৎ করে পৃথিবীর সময়টা যেন থেমে গিয়েছে। সদা জাগ্রত টিউলিপের এই দেশে বসে এখন তাকিয়ে আছি সুদিনের আশায়।
রুণা দাস, আমস্টেলভিন, নেদারল্যান্ডস
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy