চিঠি-১: খেতে পাচ্ছি না, লজ-মালিক টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে
আমি একটি লোকাল এম্ব্রোয়ডারি কারখানাতে কাজ করি | আমার দাদার (দেবাশীষ জানা) কিডনির সমস্যা থাকার জন্য গত ৪ মার্চে আমি এবং দাদা ভেলোরের সিএমসি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসি। আমাদের বাড়ি ফেরার টিকিট ছিল গত ২৫ মার্চের। কিন্তু হঠাৎ লকডাউনের জেরে এখানে আটকে পড়েছি। আমাদের কাছে এখন খুব বেশি টাকা নেই। আমাদের লজ মালিক জোর করে টাকা চাইছে, আমরা ঠিকঠাক ভাবে খেতেও পারছি না। এখানকার সরকার থেকে কোনও খাবারও দিচ্ছে না। দয়া করে আপনারা কিছু একটা ব্যবস্থা করে দিন। এ ভাবে আমরা আর কত দিন কাটাব? এ রকম চললে আমরা হয়তো এখানে না খেতে পেয়েই মারা যাব।
সুভাষ চন্দ্র জানা, রানিচক, পো- ডিমারীহাট, থানা- তমলুক, জেলা- পূর্ব মেদিনীপুর, পিন-৭২১৬৬৮, মোবাইল- ৮৬৯৫৪৫৯০৮৮
চিঠি-২: টাকা নেই, খাবার পাচ্ছি না, খানাকুলে ফেরান
আমার বা়ড়ি হুগলির খানাকুলে। ওড়িশার কটকে একটা কোম্পানিতে কাজ করি। লকডাউনে আটকে পড়েছি। হাতে টাকা নেই। ঠিক ভাবে খেতে পারছি না। বাড়িভাড়াই বা কী ভাবে দেব? বাড়িতে মায়ের শরীর খুব খারাপ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, আমি যাতে বাড়ি ফিরতে পারি, তার ব্যবস্থা করুন।
রঞ্জিত শাসমল, মোবাইল- ৯৩৪৮৯৫৯০৮০
চিঠি-৩: স্পাইনাল কর্ডের রোগী দাদাকে ভেলোর থেকে ফেরান
আমার দাদা, বৌদি গত ১৭ মার্চ ভেলোরে গিয়েছিল ডাক্তার দেখাতে। ওঁদের নাম শঙ্কর কারক ও পাপিয়া কারক। কিন্তু লকডাউনের জন্য এখনও ফিরতে পারেনি। আমার দাদার স্পাইনাল কর্ডে জটিলতা রয়েছে। এখন বেড রেস্টে আছে।
শঙ্কর কারক ও পাপিয়া কারক। আটকে পড়েছেন ভেলোরে। ছবি-লেখক।
আমার দাদা, বৌদি অত স্মার্ট নয়। ওরা এটিএম ব্যবহার করতে পারে না। এটিএম কার্ড সঙ্গে নিয়েও যায়নি। যা টাকা নিয়ে গিয়েছিল তা প্রায় শেষের দিকে। ওরা খুব প্রোবলেমে রয়েছে। দুই বেলা ঠিক মতো খেতেও পাচ্ছে না। অনুগ্রহ করে ওদের বাড়িতে ফেরানোর কিছু ব্যবস্থা করুন।
স্বরূপ কারক, দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, মোবাইল নম্বর-৭৪০৭০৭৩৬৩৪, ইমেল- karakswarup898@gmail.com
চিঠি-৪: অনলাইনের সঙ্গে ডিজিটাল ক্লাসও ইলামবাজারের স্কুলে (ছবি আছে)
বীরভূম জেলায় প্রথম কোনও সরকারি বিদ্যালয়ে এপ্রিল মাসের প্রথম থেকে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির সমস্ত ছাত্রছাত্রীর জন্য অনলাইন ক্লাস চলছে। শুধুমাত্র হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ করে নয়, বাচ্চাদের সঙ্গে স্বতন্ত্র যোগাযোগের মাধ্যমে ক্লাসগুলো সংগঠিত হচ্ছে। প্রত্যেক ক্লাসের শেষে বাচ্চাদের বোর্ড ওয়ার্কের কপি দেওয়া হচ্ছে। অনলাইনে তাদের খাতা দেখা, তাদের কাছে উত্তর নেওয়া এবং সর্বোপরি তাদের কাছে ব্ল্যাকবোর্ড পৌঁছে দেওয়ার মতো ব্যবস্থা চলছে নিউ ইন্টিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলে, ইলামবাজার ব্লকে।
অনলাইনে ক্লাস চলছে ইলামবাজারের একটি স্কুলে। ছবি-লেখক।
আগামী সোমবার থেকে এই অনলাইন ক্লাসের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ডিজিটাল ক্লাস যার মাধ্যমে বাচ্চারা অ্যানিমেটেড ওয়েতে পড়া বুঝতে পারবে সরাসরি শিক্ষকদের থেকে। যা সম্ভবত পশ্চিমবঙ্গের প্রথম কোনও সরকারি স্কুলে শুরু হচ্ছে এবং হাতে গোনা দুই-একটি বেসরকারি স্কুলে এ রকম ডিজিটাল অনলাইন ক্লাস হয়।
দীপগোপাল মুখার্জি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, নিউ ইন্টিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুল, ইলামবাজার ব্লক। মোবাইল- ৭৯০৮৬৭৪৮৪৩
চিঠি-৫: ঝা়ড়গ্রামের ৫০ জন আটকে আছি মুম্বইয়ে
আমরা ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকার ৫০ জন মুম্বইয়ে আছি। আমাদের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু একটা সাহায্য করুন প্লিজ।
দেবব্রত পাল, পিন-৪০০০৫১, মোবাইল- ৯০৮২৯৯৮৯৮৩
চিঠি-৬: খাওয়ার টাকা নেই, গুয়াহাটি থেকে ফেরান আমাদের
আমাদের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর থানার রামনগর ১ নম্বর ব্লকের গোবরা অঞ্চলে। আমরা ৮ জন গৌহাটিতে আছি। আমরা ডিজাইনের কাজ করি। লকডাউনে জেরে আমরা গুয়াহাটিতে আটকে পড়েছি। আমাদের কাছে যা টাকা ছিল সব শেষ। আমাদের কাছে খাওয়ার টাকাও নেই। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, আমাদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দিন।
সুশান্ত মাইতি, কামরুপ, গুয়াহাটি-৭৮১০০, আসাম, মোবাইল নম্বর-৮৩৯৯০৩৫৪৬৪
চিঠি-৭: ভেলোরে আটকে পড়েছি, ছোট্ট মেয়ে রয়েছে মেদিনীপুরে
চিকিৎসা সূএে গত ৬ মার্চ আমরা ভেলোরের সিএমসি হাসপাতালে আসি। কিন্তু তৎক্ষণাৎ লকডাউন হওয়ায় আটকে পড়ি ভেলোরে। আশা ছিল, এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখের পর বাড়ি ফিরতে পারবো, কিন্তু পুনরায় লকডাউন ঘোষণার পর বাড়ি ফেরার আশা আরও এক বার নিভে গেল। বর্তমান আমরা ভীষণ ভাবে আর্থিক ও খাওয়াদাওয়ার সমস্যায় পড়েছি। ঘরের ছোট্ট মেয়েকে ছেড়ে এসেছি মেদিনীপুরের বাড়িতে, মনের অবস্থাও মোটেই ভাল নয়। ছোট্ট একটা কারবার করে সংসার চলে, সেটাও বন্ধ করে এসেছি।
রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ, যথাসাধ্য চেষ্টা করে বাড়ি ফেরানো হোক আমাদের। সরকারি নিয়ম মেনে চলবো।
বিশ্বজিৎ করণ, মিতালী করণ, গ্রাম-চিরুলিয়া, পোস্ট-মহেশপুর, থানা-এগরা, জেলা- পূর্ব মেদিনীপুর, পিন-৭২১৪৫২, মোবাইল- ৯৭৩৫৯৭৯২৫৬/৭৩৮৪৯৯২৫৫৭.
চিঠি-৮: কেরল সরকারকে জানিয়েও কোনও সাহায্য পাইনি
আমার বাবা ক্যানসারের রোগী। সে জন্য আমরা গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কেরলের কোচির অমৃতা হসপিটালে চিকিৎসা করাতে আসি। বাবার চিকিৎসা শেষ হয় গত ২৭ মার্চ। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের জন্য আটকে পড়ি। বর্তমানে হসপিটালের গেস্ট হাউসে প্রতি দিন ৫০০ টাকা ঘরভাড়া দিয়ে আমাদের থাকতে হচ্ছে। হসপিটালের ক্যান্টিনে টাকা দিয়ে খেতে হচ্ছে। কেরল সরকারকে জানিয়েও কিছু সাহায্য পাইনি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্যের প্রত্যাশায় রইলাম।
কিরীটি ভূষণ কোলে, মোবাইল-৮২৫০৪৯৯৪৩৪
চিঠি-৯: কেরলে আটকে আমরা মুর্শিদাবাদের ২৮ জন শ্রমিক
আমরা কেরলে শ্রমিকের কাজ করতে এসেছিলাম। কিন্তু লকডাউনের জন্য ১৬ দিন কোনও কাজ নেই। সকলের কাছে যা টাকা ছিল, তা-ও ফুরিয়ে গিয়েছে। আমরা ২৮ জন শ্রমিক আছি। আমাদের বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহর পাড়া থানা এলাকায়। আমরা এখন আছি কেরলের পালাক্কাড় জেলায়।
ইয়ামিন শেখ, আমাদের এখনকার ঠিকানা- পালাক্কাড় জেলা, থানা- মান্নারকড়, পোস্ট অফিস- পুল্লিস্সিরি, পিন- ৬৭৮৫৮২, কেরল।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy