লকডাউনে সহযোগিতা করছেন নাগরিকরা। ছবি: লেখকের নিজস্ব।
ম্যানেজমেন্টের পড়াশোনা সূত্রে বিগত সাড়ে চার বছর ফিলিপিন্সের বাসিন্দা আমি।
আমাদের ফতেমা বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরের অন্যতম মেট্রো ম্যানিলার ভেলেনজুয়েলা সিটিতে অবস্থিত। প্রচণ্ড বড় জায়গা জুড়ে মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্টের বিল্ডিংগুলো পাশাপাশি অবস্থিত। বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগটাই ভারতীয় এবং তাঁরা মেডিসিন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী। ওঁরা থাকেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছিই। তবে আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেশ কিছুটা দুরের পরবর্তী শহর ক্যালোকান সিটিতে একাই থাকি। তাই হয়তো ফিলিপিন্সের স্থানীয় সংস্কৃতি বুঝতে সুবিধা হয়েছে।
অতিথি সেবার জন্য পৃথিবী-বিখ্যাত এই দেশ। কয়েক শত বছর স্প্যানিশদের দখলে ছিল। পরবর্তীতে আমেরিকা স্পেনকে পরাস্ত করে ৫০ বছর রাজত্ব করে। ফলে, এদের তাগালোগ ভাষার মধ্যে বেশ কিছুটা স্প্যানিশ ভাষার প্রভাব এবং আমেরিকার সংস্কৃতি লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানেও প্রচুর পরিমাণে আমেরিকান, ইউরোপীয়, চাইনিজ, জাপানিরা ভালোবেসে এখানেই থেকে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে লাখখানেক ভারতীয়ও আছেন। এই কারণেই হয়তো এটাই এশিয়ার একমাত্র দেশ যেখানে প্রায় সবাই ইংরেজি বলতে পারেন। ফলে, ভাষাগত সমস্যা কখনও হয় না।
আমোদপ্রিয় ফিলিপিনোরা জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী সহ যে-কোন অনুষ্ঠানই খুব ধুমধাম করে নেচে-গেয়ে সুরাপানের মাধ্যমে পালন করে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে কোথায় যেন সেই জীবনযাত্রায় ছেদ পড়েছে। প্রেসিডেন্টের নির্দেশে প্রতিটা বারাঙ্গায় (প্রাচীর ঘেরা ছোট ছোট পাড়া) থেকে বেরনোর গেটে পাহারার ব্যবস্থা হয়েছে। সেই বারাঙ্গায় থেকে বাইরে একটা নির্দিষ্ট সময়ে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করার জন্য পরিবার পিছু একটা করে কোয়রান্টিন পাস দেওয়া হয়েছে। কোয়রান্টিন পাস ছাড়া বাইরে বের হওয়া অথবা বাইরে থেকে কারওর আসার অনুমতি নেই।
আমেরিকা, ইটালি, জার্মানি প্রথম থেকে করোনাকে গুরুত্ব না দেওয়ায় ওখানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে পরিস্থিতি। তবে, এখানে সরকার সচেষ্ট এবং মানুষও সচেতন। যে ভাবে এই দেশে লকডাউনে সবাই সহযোগিতা করছেন, তাতে হয়তো বড় কোনও দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। আশা করছি, আমাদের মত যে প্রবাসীরা লকডাউনের ফলে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ও পরিবার থেকে দূরে আটকে পড়া অবস্থায়, তাঁরাও সবকিছু স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারব।
পার্থসারথি দাস, ক্যালোকান সিটি, ফিলিপিন্স
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন,feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy