Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Teachers

সম্পাদক সমীপেষু: শিক্ষকের প্রয়োজন

রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে শূন্যপদ প্রচুর, যোগ্য অথচ বঞ্চিত প্রার্থীদের চাকরি দিতে আদালতের নির্দেশও রয়েছে। তা হলে তো বিদ্যালয়গুলির শূন্যপদ পূরণে আর কোনও বাধা থাকা উচিত নয়।

শিক্ষকশূন্য কিছু কিছু স্কুল।

শিক্ষকশূন্য কিছু কিছু স্কুল।

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২২ ০৪:৪৪
Share: Save:

‘পড়ুয়ার অধিকার’ (১৭-৯) সম্পাদকীয়ের বিষয়ে কিছু বলতে চাই। দু’বছরেরও বেশি সময় অতিমারির কবলে আটকে ছিল শিক্ষাব্যবস্থা। তার ধাক্কায় মূলত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর বিপর্যস্ত! তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা করে যখন স্কুলগুলি খুলতে শুরু করেছে, তখন শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির পর্দা ফাঁস হল। একে তো রাজ্যের অনেক স্কুলেই বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের ঘাটতি, তার উপর মহামান্য আদালতের আদেশে বেআইনি ভাবে নিযুক্ত বেশ কয়েক জন শিক্ষকের চাকরিতে পূর্ণচ্ছেদ পড়েছে। তার ফলে কিছু কিছু স্কুল প্রায় শিক্ষকশূন্য হয়ে পড়েছে! এখন একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে শূন্যপদ প্রচুর, যোগ্য অথচ বঞ্চিত প্রার্থীদের চাকরি দিতে আদালতের নির্দেশও রয়েছে। তা হলে তো বিদ্যালয়গুলির শূন্যপদ পূরণে আর কোনও বাধা থাকা উচিত নয়। এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হওয়া আশু প্রয়োজন।

আরও একটি বিষয়। এক সময় স্কুলের ঘাটতি মেটাতে, শিশু শিক্ষাকেন্দ্র, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলি স্বল্প বেতনে শিক্ষা সহায়কদের দ্বারা পরিচালিত হত। শিক্ষার আপাত বেহাল অবস্থায় সেগুলি কার্যকর ভূমিকা নিতে পারত। এদের পুনরুজ্জীবন কাম্য। আশা করি, শিক্ষাব্যবস্থার সাময়িক স্থবিরতা অতিক্রম করা যাবে। এবং সরকারও যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে শিক্ষার বিষয়টি দেখবে।

সুবীর ভদ্র, ডানকুনি, হুগলি

পুজোর দূষণ

প্রতি বছর দেবী দুর্গার মাটির প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়ে থাকে বাংলার বিভিন্ন নদীবক্ষে, পুকুর, জলাশয়ে। এতে দেবী প্রতিমার ডাকের সাজ, বাঁশ-খড়ের কাঠামো, রঙিন কাপড়, প্লাস্টিক রং এবং মাটি নদীর জলে মেশে। এ ছাড়াও দুর্গা পুজোয় ব্যবহৃত ফুল, ফল, তেল, আমের পল্লব, ঘট, কলাগাছ প্রভৃতি লৌকিক উপচার দশমীর দিন নদীবক্ষে ফেলা হয়। এর জন্য নদী, পুকুর ও অন্যান্য জলাশয়ের জল দূষিত হয়। তাই দুর্গা প্রতিমা ভাসান বা নিরঞ্জন না করে নদীর পারে কোনও ফাঁকা জায়গায় প্রতিমাগুলি সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বর্ষায় বৃষ্টির জলে ধুয়ে যাওয়া প্রতিমার সেই মাটি আবার প্রতিমা নির্মাণে ব্যবহার করতে পারেন মৃৎশিল্পীরা। এতে নদীর জলের দূষণ যেমন কমবে, তেমনই মাটি সংগ্ৰহ করার খরচও কিছুটা কমবে মৃৎশিল্পীদের। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ঢাকায়, ফরিদপুরে বিভিন্ন এলাকায় দেবদেবীর মূর্তি নিরঞ্জন না করে বটগাছের নীচে রেখে দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে বলে শুনেছি।

এ বঙ্গের বিভিন্ন বারোয়ারি পুজো কমিটি এবং পঞ্চায়েত বা পুরসভার দেবদেবীর মূর্তি নিরঞ্জন নিয়ে যথাযথ ভাবনাচিন্তা করা প্রয়োজন। না হলে নদী, পুকুর, জলাশয়গুলিতে জল দূষণের মাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানের পরিস্থিতিতে জনস্বার্থে যা একেবারেই কাম্য নয়।

তুষার ভট্টাচাৰ্য

চাঁদার জুলুম

চাঁদা কি চাঁদা-আদায়কারীদের আনুষ্ঠানিক অধিকার? বেশ কিছু দিন থেকেই এই বিষয়টি নিয়ে একটা আশঙ্কা দানা বাঁধছে। দুর্গা পুজো থেকেই চাঁদা তোলার হিড়িক শুরু হয় প্রতি বছর। লক্ষ্মী, কালী, কার্তিক, জগদ্ধাত্রী, সরস্বতী— পর পর চলতে থাকে চাঁদা তোলার পর্ব।

বেশ কিছু পরিচিত সংলাপ শোনা যায় চাঁদা আদায়কারীদের মুখে ‘এ বার নতুন থিম, বুঝতেই পারছেন’, ‘এ বার ৫০ বছর পূর্তি’, ‘বাজারদর যা বেড়েছে’ ইত্যাদি। অর্থাৎ, চাঁদার অঙ্ক বাড়াতে হবে। এঁরা কি বোঝেন না যে, পুজোর বাজেট করা সহজ, কিন্তু এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে টাকা দেওয়াটাই কঠিন। ইদানীং পাড়ায় পাড়ায় খাতা করা হয় চাঁদাদাতাদের নামে। সেখানে চাঁদার অঙ্ক স্থির করাই থাকে। যাঁর যেমন সামর্থ্য, তিনি তেমন চাঁদা দেবেন— এটা যেন ভুলতে বসেছে এখনকার চাঁদা আদায়কারীরা। দরাদরির কোনও অবকাশ থাকে না। একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ফেলা হয় বেশ কায়দা করে। চাঁদাদাতারা সব সময় ভয়ে ভয়েই থাকেন। কারণ, আদায়কারীদের অসন্তুষ্টিতে তাঁদের অনিষ্ট ও অসম্মান সুনিশ্চিত। এ ব্যাপারে প্রশাসন-সহ অন্য দায়িত্বশীলদের সাহায্য পাওয়া কঠিন হয়। ক্লাব বা পাড়ার উঠতি ছেলেদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর লোক মেলা ভার।

তা ছাড়া, রাস্তায় গাড়ি আটকে চাঁদা তোলার রেওয়াজও দিন দিন বাড়ছে। গাড়ি নিয়ে বেরোনো মুশকিল হলে পড়ে। খুব খুশি মনে চাঁদা দিচ্ছেন এমন চাঁদাদাতার সংখ্যা বিরল, এ কথা সকলেই জানেন। এখন প্রশ্ন, এ ভাবে জোর করে ভয় দেখিয়ে তোলা চাঁদা দিয়ে সত্যি কি কোনও দেবদেবীর পুজো হতে পারে? মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে আমরা কি সত্যিকারের দেবতাকে প্রকারান্তরে রুষ্ট করছি না?

এমন কি হতে পারে না, এক দল মানুষ ভদ্র ভাবে গিয়ে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘আপনার যেমন ইচ্ছা তেমন চাঁদা দিন আমাদের পুজোর জন্য।’ তার পর চাঁদাদাতার দেওয়া অর্থ গ্রহণের পরে শুভেচ্ছা বিনিময় করে ফিরে গেলেন চাঁদা আদায়কারীরা। এই চিত্র এক সময় দেখেছি গ্রামে। আবার এই চিত্র ফিরে আসুক আমাদের মধ্যে। পুজো সকলের কাছে আনন্দের হয়ে উঠুক। ডিজে বক্সের তাণ্ডব, মাদকের রমরমা, হুমকি ও জুলুমের পুজো বন্ধ হোক। পুজো হয়ে উঠুক সকলের। তবেই না পুজো সার্থক।

মলয় ঘোষ

সবার উৎসব

দুর্গাপুজো মানেই বাঙালিদের একটা আবেগ। এক বছর অপেক্ষা করতে হয় দিনগুলোর জন্য। তবে, এই পুজোতে আমরা যখন আনন্দে মেতে উঠি, তখন কিছু মানুষকে অর্থোপার্জনের জন্য তাঁদের পরিবারকে ছেড়ে কাজের সূত্রে দূরে যেতে হয়। যেমন, ঢাকি, বড় বড় প্যান্ডেল নির্মাতা ইত্যাদি। পুজোয় তাঁদের কোনও আনন্দ থাকে কি? আমাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তাঁরা নিজেদের সব আনন্দ কষ্ট করে লুকিয়ে রাখেন মনের এক কোণে। নিজেদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সুন্দর মণ্ডপসজ্জা তৈরি করেন শুধুমাত্র আমাদের জন্য। আর আমরা সেই সব মণ্ডপ দর্শন করে আনন্দ লুটি, ফোনে মণ্ডপ ও প্রতিমার ছবি বন্দি করি। পুজোর আগে নতুন নতুন জামাকাপড় কিনি। কিন্তু কিছু মানুষ পুরনো জামাকাপড় পরেই পুজো দেখেন। যাঁদের সামর্থ আছে তাঁরা এঁদের পাশে দাঁড়ালে হয়তো এঁদের সবার মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব হবে।

রুদ্রপ্রসাদ নন্দী

বেহাল রাস্তা

আড়শা ব্লকের রাঙামাটি গ্রামের বজরংবলী মন্দির থেকে কাঁসাই নদী পর্যন্ত যাতায়াতের একমাত্র ও মূল রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। গোটা রাস্তাটি কাঁচা এবং বিভিন্ন জায়গায় উঁচু নিচুতে ভর্তি। সারা বছরই রাস্তাটির অবস্থা খারাপ থাকে। আর বর্ষাকালে অবস্থা হয় ভয়াবহ। গাড়ি, বাইক বা সাইকেল চালানো চরম কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। রাঙামাটি হাই স্কুলে কয়েক শত ছাত্রছাত্রী নিরুপায় হয়ে এই রাস্তাটি ব্যবহার করে।

সমগ্র রাঙামাটি-সহ আড়শা ব্লকের অন্তর্গত আড়শা, ফসকো, পাটট্যার, আশারামডি, করনডি ইত্যাদি কয়েকটি গ্রামের মানুষকে ব্যবসা, আনাজ বিক্রি বা অন্যান্য কাজে ফরেস্ট মোড়, চাষ রোড বা বোকারো যেতে হয় এই রাস্তা ব্যবহার করেই। আবার জয়পুর ব্লকের উপর কাহান অঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ ব্যবসা ও বিভিন্ন কাজে রাঙামাটি, আড়শা বা সিরকাবাদ যাতায়াত এই রাস্তা দিয়েই করেন।

তাই, কাঁচা রাস্তাটির সঠিক পরিমাপ অনুসারে ও রাস্তার অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে কংক্রিট ঢালাই করলে এলাকাবাসীর যাতায়াতের অসুবিধা দূর হবে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

শিবনাথ লায়েক

অন্য বিষয়গুলি:

Teachers school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy