উত্তম রোমান্স
‘সুপ্রিয়ার সঙ্গেই শেষ উত্তম রোমান্স’ (২৮-১) শীর্ষক লেখাটি কতখানি যুক্তিযুক্ত? উত্তমকুমারের চলচ্চিত্র জীবনের একটি বিরাট অংশ জুড়ে ছিলেন সুপ্রিয়া দেবী। কিন্তু সত্যিই কি উত্তম রোমান্স যুগের শেষ হল সুপ্রিয়া দেবীর মৃত্যুর সঙ্গে?
উত্তমকুমারের অন্তত একশো রোমান্টিক ছবির নায়িকারা এখনও জীবিত এবং এর বেশির ভাগ ছবি সেই যুগের সুপার হিট। কী করে ভুলে গেলেন সাড়া-জাগানো দুটি ছবি ‘আনন্দ আশ্রম’ ও ‘অমানুষ’-এর কথা? শর্মিলা ঠাকুর কি উত্তমকুমারের রোমান্টিক
নায়িকাদের তালিকায় পড়েন না? সাবিত্রীর সঙ্গে ‘নিশিপদ্ম’, ‘মোমের আলো’, ‘অভয়ের বিয়ে’ অথবা মাধবীর সঙ্গে ‘ছদ্মবেশী’, ‘শঙ্খবেলা’ কি রোমান্সের মধ্যে পড়ে না? এই নায়িকাদের সঙ্গে উত্তমকুমারের রোমান্টিক ছবির সংখ্যা কিন্তু সুপ্রিয়া দেবীর চেয়ে কম নয়।
তালিকা আরও বড় হবে যদি অপর্ণা সেন বা অঞ্জনা ভৌমিকের নাম যোগ করা হয়। উত্তমকুমারের এই রোমান্টিক নায়িকারা সবাই জীবিত। তাই সুপ্রিয়া দেবীর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই উত্তম রোমান্স শেষ, এই বিচার ভুল।
প্রিয়ব্রত মুখোপাধ্যায়
বাঁকুড়া
বেগানা
সুপ্রিয়া দেবীর প্রয়াণের পর তাঁর অভিনীত হিন্দি ছবি নিয়েও কিছু আলোচনা হয়েছে। ‘দূর গগন কি ছাওঁ মে’, ‘আপ কি পরছাইয়াঁ’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। কিন্তু একটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ছবি হল ‘বেগানা’। সদাশিব রাও কভি পরিচালিত ‘বেগানা’ ১৯৬৩ সালে মুক্তি পায়। ছবিটির মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন সুপ্রিয়া এবং ধর্মেন্দ্র।
শৈলেন্দ্রর লেখা এবং স্বপন-জগমোহন সুরারোপিত আটটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন মহম্মদ রফি, লতা মঙ্গেশকর, মুকেশ, আশা ভোঁশলে, মান্না দে, মহেন্দ্র কপূর এবং উষা মঙ্গেশকর। এর মধ্যে ‘বুলাতি হ্যায় বাহার চলে হাম দোনো’ গানটিতে সুপ্রিয়ার অভিনয় ভোলার নয়।
পার্থসারথি রায়
বিহারজুড়িয়া, বাঁকুড়া
আশ্রয়
কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর প্রয়াণের পর তাঁকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বহু আলোচনাই হয়েছে, কিন্তু বাংলা চলচ্চিত্র জগতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে তিনি যে ‘দ্বৈত ভূমিকা’ পালন করেছিলেন, সেটা উঠে আসেনি। সুপ্রিয়া তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রকে সমৃদ্ধ করে তাঁর ভূমিকা পালন করে গিয়েছেন, আবার তিনি উত্তমকুমারের অসাধারণ উত্থান ও জনপ্রিয়তার ক্ষেত্রেও অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিলেন বছরের পর বছর ধরে। মহানায়কের মৃত্যুর আগের মুহূর্ত পর্যন্ত।
কোনও একটা সময়ে পারিবারিক জীবনে বীতশ্রদ্ধ হয়ে অসহায় অবস্থায় সুপ্রিয়ার কাছে আশ্রয় ও শান্তি চেয়েছিলেন উত্তম। সেই আশ্রয় না পেলে মহানায়কের জীবনে হয়তো অন্য রকম কিছু ঘটে যেতে পারত। এই পরিপ্রেক্ষিতে উত্তমকুমারের নিজস্ব লেখা বই ‘আমার আমি’
(পৃ ১৫১ ও ১৫৩) থেকে তাঁরই কিছু কথা তুলে ধরছি।
‘১৯৬৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তারিখে আমাদের ভবানীপুরের বাড়িতে ছিল গৌরীর জন্মদিন। প্রতিবার এই দিনটি এখানে পালন করা হয়... হঠাৎ একটা মনকষাকষি হয়ে গেল। সেই মন কষাকষি কিন্তু চরমে পৌঁছে গেল। আমি অনেক চেষ্টা করেও মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে পারলাম না। সে এক বিশ্রী ঘটনা,... গিরিশ মুখার্জি রোডের বাড়িতে আর থাকব না এমন একটা প্রতিজ্ঞা নিয়েই পথে নেমে পড়লাম। নিজের মনের সঙ্গে প্রচণ্ড যুদ্ধ করে মনটাকে ক্ষতবিক্ষত করেছিলাম,... শেষ পর্যন্ত হাজির হয়ে গেলাম ময়রা স্ট্রিটে। আমাকে ঠিক এভাবে দেখবে তা বেণুর স্বপ্নেও ছিলনা। তাকে বললাম তুমি আমাকে আশ্রয় দেবে? তৎক্ষণাৎ বেণু আমাকে আশ্রয় দিয়েছিল। বেণু বিস্ময়-মমতা দুই নিয়ে হাসি মুখে দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছিল,...এই ময়রা স্ট্রিটে আসার পর থেকে আমি আবার মানসিক অনেকটা স্বস্তি পেতে থাকলাম। আমি আমার মানবিক চেতনাবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে বেণুকে গ্রহণ করেছিলাম আমার পবিত্র কর্তব্য জ্ঞানে... আমার সংসার আছে, স্ত্রী আছে, সন্তান আছে, মা আছেন, তবুও যে আমাকে বেণু লতার মতো জড়িয়ে রেখেছিল, যার সেবাযত্ন, যার মমতা, যার ভালবাসা আমাকে অনেকখানি সজীব করে রেখেছিল, তাকে আমি কোনও ভাবে ঠকাতে চাইনি...’
বাবলু নন্দী
কলকাতা-৭৯
লতা প্রথম
‘লতা প্রথম’ (সম্পাদক সমীপেষু, ১৮-১) শীর্ষক চিঠির সূত্র ধরে বাংলা বেসিক গানে লতাজির আবির্ভাব প্রসঙ্গে জানাতে চাই, ১৯৫৩ সালে মান্না দে-র সুরে দুটি গান, ‘হায় হায় গো রাত যায় গো’ এবং ‘কত দূরে আর নিয়ে যাবে বলো’ পূজা সংখ্যার রেকর্ডে লতাজির জন্য প্রস্তুত করা ছিল। কিন্তু লতাজিকে পাওয়া না যাওয়ায়, শেষে মান্না দে নিজে ওই গান দুটিতে কণ্ঠদান করেন।
পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৫৪ সালে (১৯৫৬ নয়) সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের সুরে, চিঠিতে উল্লেখিত গান দুটি ‘আকাশ প্রদীপ জ্বলে...’, এবং ‘কত নিশি গেছে...’ রেকর্ড হয়।
অশোক ঘোষ
কাছারি রোড, বর্ধমান
নিরাপত্তা
‘দ্বিতীয় বাড়ি’তে নিরাপত্তা নেই (২৩-১) লেখাটি পড়ে দুটো বিষয় মনে নাড়া দিচ্ছে। প্রথমত, বাচ্চাদের নানা বাহ্যিক উপকরণ ব্যবহারে কি একশো শতাংশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব? না। কারণ যে ভাবে সমাজ চলছে, আমরা প্রত্যেকে অন্যের থেকে একশো ভাগ দায়বদ্ধতা আশা করতে অভ্যস্ত, কিন্তু নিজের দায়িত্ব যে কী— সেটা বেমালুম ভুলে বসে আছি! আর সত্যিই তো, মানুষের মনের ভিতর কী চলছে, সেটা তো আঁচ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। শিশুমনের উপর কী চাপ, তা আমরা অধিকাংশ সময়েই বুঝি না। তবু সচেতন থেকে, নিজের শিশুটিকে বার বার ঠিক শিক্ষা দিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, লখনউতে সাত বছর বয়সের ছেলেটিকে ছুরি মারার অভিযোগে যে মেয়েটিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, সে জানিয়েছে, ছেলেটিকে সে আগে দেখেনি। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার বাবার বচসার জন্য তাকে দোষী করা হয়েছে। মেয়েটির কথা ভবিষ্যতে যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তবে তার মানসিকতার উপর এই ঘটনার একটা বিরাট কুপ্রভাব পড়বে। এ দিকটাও কিন্তু আমাদের ভাবতে হবে।
ভাস্কর দেবনাথ
নবপল্লি, বহরমপুর
হুকিং
অমিতাভ গুপ্তর ‘বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতে চাইলে’ (১৮-১) শীর্ষক লেখাটি প্রসঙ্গে কিছু কথা। হুকিং-এর মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ ‘চুরি’ হয়, তার ব্যবহারের দিকেও কি নজর দেওয়া প্রয়োজন নয়? সেই বিদ্যুৎ যদি খুব ছোট মাপের হলেও উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়, এবং সেই পণ্য যদি বাজারজাত হয়, তবে তার থেকে শেষ অবধি অর্থনীতির যতটুকু লাভ হয়, বিদ্যুৎ চুরি বাবদ সরকারের ক্ষতির হিসেব কষতে বসলে সেই অঙ্কটির কথাও মাথায় রাখা ভাল। সে-ক্ষেত্রে কি এই ‘চুরি’-কে ‘ভরতুকি’ হিসেবে দেখা যায়?
প্রশ্নটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। বড় শিল্পকে সরকার প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে বিপুল ছাড় এবং সুবিধা দিয়েই থাকে। তখন যুক্তি দেওয়া হয় যে, এই ছাড়ের ফলে শিল্প প্রণোদনা পাবে, এবং তার ফলে মোট যা লাভ হবে, তাতে এই ক্ষতি পুষিয়ে যাবে। কুটির শিল্পের ক্ষেত্রেই বা যুক্তিটা ভাবা হবে না কেন? চুরি করা ঠেকাতে বরং কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে বিদ্যুতে বিশেষ ভরতুকি দেওয়া যায় কি না, সরকার তা ভেবে দেখতে পারে।
সন্দীপ মিত্র
ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল ইনস্টিটিউট, কলকাতা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy