বছরের শুরুতে দিল্লি জয়ের পরে বছরের শেষে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে ফের ক্ষমতা দখলই এখন বিজেপির লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য পূরণে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেটও বিহারময়। বিহারের জন্য শুধু একাধিক ঘোষণাই নয়, বাজেট পেশের সময় মধুবনী চিত্রকলা-সজ্জিত শাড়িও পরেছিলেন। পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত মধুবনী শিল্পী দুলারী দেবীর উপহার দেওয়া শাড়ি পরে বাজেট পেশের পরে মহিলা সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া আড্ডায় সেই শাড়ি তৈরি করতে কত সময় লাগে, কী ভাবে শাড়িটি যত্ন করে রাখতে হয়, তা নিয়ে গল্পও করেছেন অর্থমন্ত্রী। সাংসদদের মধ্যে আড্ডায় অবশ্য শাড়ি-রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তা হল, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ, কেরল ও অসমে ভোট। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গই পাখির চোখ বিজেপির। তা হলে কি আগামী বছর অর্থমন্ত্রীকে বাংলার শাড়িতে বাজেট পেশ করতে দেখা যাবে?

শৈল্পিক: মধুবনী চিত্রকলা-শোভিত শাড়িতে বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী।
বিরাট ভোজ
নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যেই লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে প্রায় ৮০০ সাংসদের সরকারি বাসভবন রয়েছে। দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে বিজেপি সাংসদদের আপ্তসহায়কদের জন্য মহাভোজের আয়োজন করলেন বিজেপির এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান সাংসদ। কারণ আপ্তসহায়কদের উপরে সাংসদদের বাসভবনে কর্মরত গৃহসহায়ক, আনাজ বিক্রেতা, গাড়ির চালক, ধোপা ও অন্য কর্মীদের মধ্যে প্রচারের দায়িত্ব পড়েছিল। নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে খোদ অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে হারিয়ে বিজেপির প্রবেশ বর্মা জিতেছেন। সেই আনন্দেই মহাভোজ।
পাতে মাছ থাকবে তো?
প্রায় সাতাশ বছর পরে দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। রাজধানীর বাঙালি অধ্যুষিত চিত্তরঞ্জন পার্ক যে এলাকায়, সেই গ্রেটার কৈলাসেও জয়ী বিজেপি প্রার্থী। এই প্রত্যাবর্তনে চিন্তায় মাছে-ভাতে বাঙালি। চিত্তরঞ্জন পার্ক ও সংলগ্ন এলাকা তো বটেই পূর্ব দিল্লি, নয়ডা, গাজ়িয়াবাদ থেকেও বাঙালিরা পছন্দসই মাছ কিনতে যান চিত্তরঞ্জন পার্কে। যখন বিজেপি ক্ষমতায় ছিল না তখনই বছরে দু’বার নবরাত্রি উপলক্ষে আমিষে বিস্তর কড়াকড়ির সাক্ষী থেকেছে ওই বাজারগুলি। প্রকাশ্য স্থান থেকে আড়ালে গিয়ে বিক্রি করতে হত মাছ-মাংস। আগামী দিনে ওই কড়াকড়ি কত গুণ বাড়বে কে জানে!
কমল নাথের দুর্দিন
এক সময় মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস মানেই কমল নাথ। তিনিই নায়ক, তিনিই পরিচালক। বিধানসভা ও লোকসভায় মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের খারাপ ফলের পরে কমল রাহুল গান্ধীর পছন্দের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। হয়তো তাই বি আর আম্বেডকরের জন্মস্থান মধ্যপ্রদেশের মহূ-তে কংগ্রেসের বিশাল জনসভা হলেও কমল নাথের কাটআউট দেখা গেল না। কলকাতার সেন্ট জ়েভিয়ার’স-এর এই প্রাক্তনী জনসভার দিন মহূ-তে এলেন। সভা শেষ হতেই বিদায় নিলেন।
অখিলেশের দাবি
রাজনীতিতে এক জনের সঙ্কট অন্য জনের সামনে সুযোগ। প্রয়াগরাজের কুম্ভে দুর্ঘটনার পরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কিছুটা হলেও চাপে। তাঁর ইচ্ছা ছিল, কুম্ভের সফল আয়োজন করে ২০২৭-এ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের আগে সফল প্রশাসকের ভাবমূর্তি সাজিয়ে-গুছিয়ে নেবেন। মৌনী অমাবস্যার সময় দুর্ঘটনা ও তীর্থযাত্রীদের মৃত্যু তাতে ধাক্কা দিয়েছে। এই সুযোগে সমাজবাদী পার্টি মাঠে নেমেছে। লখনউতে সমাজবাদী পার্টির সামনে বিরাট ব্যানারে অখিলেশ যাদবের খালি গায়ে কুম্ভে স্নানের ছবি। সঙ্গে ঘোষণা, “অখিলেশ ২০২৭-এ ক্ষমতায় ফিরবেন এবং বিশাল অর্ধকুম্ভের আয়োজন করবেন।”

অবগাহন: মহাকুম্ভে অখিলেশ যাদব।
সুবর্ণ সুযোগ
দূষণ কমাতে সংসদ চত্বর থেকে সাংসদের বাড়ি পর্যন্ত ইলেকট্রিক গাড়ি পরিষেবা দেয় সংসদীয় সচিবালয়। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় ইভি গাড়ি কম। এক বার সংসদের বাইরে গেলে নিরাপত্তাবেষ্টনী পার হয়ে ফেরে গাড়িগুলি। ফলে সাংসদরা দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করেন মকর দ্বারের সামনে। রাজ্যসভা ও লোকসভা সাংসদদের জন্য আলাদা গাড়ি। তাতেও সময় যাচ্ছে প্রচুর। ফয়দা সাংবাদিকদের। অপেক্ষারত সাংসদদের থেকে হাঁড়ির খবর জেনে নিচ্ছেন। সাংসদেরাও সুযোগ পেলেই ‘বাইট’ দিতে ছাড়ছেন না।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)