Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
তাঁরা কি তবে ভয় পেয়েই ‘রাম-রাম’ জপ করছেন

‘জয় শ্রীরাম’ না বললে খুন হবে, আপত্তি ওইখানেই: অমর্ত্য

‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে আমার কোনও রকম আপত্তি নেই। ‘জয় শ্রীরাম’ উক্তি করলেন না বলে লোককে মারা হল, খুন করা হল, তাতেই আমার আপত্তি।

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ০০:১৫
Share: Save:

প্রশ্ন: আপনি ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানকে বাংলা সংস্কৃতির বাইরের জিনিস বলায় প্রতিক্রিয়া হয়েছে যে সংস্কৃতি একটা চলমান বস্তু, তাতে নতুন জিনিস ঢোকাই স্বাভাবিক। তা হলে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান নিয়ে আপত্তি করব কেন?

অমর্ত্য সেন: ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে আমার কোনও রকম আপত্তি নেই। ‘জয় শ্রীরাম’ উক্তি করলেন না বলে লোককে মারা হল, খুন করা হল, তাতেই আমার আপত্তি। ‘জয় শ্রীরাম’ কথাটা চলমান বাংলা ভাষার মধ্যে খুব পড়ে না, এটা বলাই যায়— কিন্তু, পড়ে না বলে তা যোগ করা যাবে না, এটা আমি বলছি না। কিন্তু যোগ করার কারণ যদি এই হয় যে, এই বুলির সাহায্যে লোককে মারা যাবে, বিশেষত মুসলমানদের, তা হলে তো আপত্তি করার নিশ্চয় কারণ থাকবে। তাই, প্রশ্নটা এই নয় যে নতুন শব্দ বাংলা ভাষায় চলবে কি না, সারা ক্ষণই তো তাই চলছে— প্রশ্নটা হচ্ছে এই যে, কী কারণে এবং কী উদ্দেশ্য নিয়ে এই পরিবর্তনটা করা হচ্ছে, এবং সেই পরিবর্তনের ফলে লোকে যদি মার খায়, আহত হয়, মারা যায়, তা হলে আমাদের আপত্তি করার কারণ আছে কি না। আমার ধারণা, খুবই আছে। এটার সঙ্গে ভাষায় নতুন শব্দ যোগ করা চলবে না, এ রকম কোনও বক্তব্য আমার আগেও ছিল না, এখনও নেই।

প্র: ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানটা একেবারেই রাজনৈতিক স্লোগান, বিজেপির তৈরি। বাংলায় কেন, ভারতের কোথাওই এই স্লোগান ছিল না। কিন্তু, জয় রামজি কি, বা জয় সিয়ারামের মতো সম্বোধন ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বহু কাল প্রচলিত। কিন্তু, বাংলায় ছিল না। কেন?

উ: অতীতে বাংলা অঞ্চলে, গৌড়ে, বঙ্গতে, যে রাজত্ব চলত তা প্রধানত বৌদ্ধ। ধর্মপাল, দেবপাল ইত্যাদি। তাঁদের পতনের পর যখন সেনরা এলেন, তার কিছু দিনের মধ্যেই মুসলমান রাজত্ব শুরু হয়ে গেল। দীনেশচন্দ্র সেন দেখিয়েছেন, রামায়ণ বা মহাভারত সংস্কৃত থেকে বাংলায় অনুবাদের ব্যবস্থা করেছিলেন মুসলমান সুলতানরাই। এর সঙ্গে ধর্মের খুব যোগ ছিল না। রামের সঙ্গে আমাদের আধ্যাত্মিক যোগ খুব একটা বেশি এগোয়নি বলেই আমার ধারণা। তবে, রামকে নিয়ে আদিখ্যেতা করার তো অনেক কারণই থাকতে পারে।

আমি শুনছি যে মেঘালয়ের রাজ্যপাল আমাকে বাংলা শেখাতে আসছেন। সে সুযোগে হয়তো আমি জানতে পারব যে কবে থেকে এগুলো এসেছে! তবে, রামের প্রতি ধার্মিক মর্যাদা দেওয়া তো এক দিক দিয়ে একটা আশ্চর্য জিনিস, গোটা ভারতবর্ষেই, কারণ রামায়ণ তো উপনিষদের মতো একটা ধর্মীয় গ্রন্থ নয়। রামায়ণ হচ্ছে প্রধানত একটা এপিক, মহাকাব্য। সেই এপিকে রাম নানা জিনিস করছেন, যা নিয়ে আলোচনা এবং সমালোচনা রামায়ণেই আছে। যেমন জাবালি বললেন রাম তুমি অত্যন্ত ভুল করছ। তার পর, রাম যখন সীতাকে বার বার পরীক্ষা করার জন্য আগুনের মধ্যে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, সে নিয়েও কিছু আপত্তি লোকে করেছে,

সেটার পরিচয়ও রামায়ণেই পাওয়া যায়। কিন্তু অযোধ্যার রাজা রাম কী করে হঠাৎ ভগবানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলেন, সেটা নিয়ে চিন্তা করার কারণ আছে। আর সেটা শুধু বাংলায় নয়, সর্বত্রই এটি একটি চিন্তার জিনিস।

আমাকে যাঁরা এখন সমালোচনা করছেন, তাঁদের মধ্যে এক জন বললেন যে, আমরা নাকি ভয় পেলে ‘রাম রাম’ বলি। এটা এখনও অবধি আমার অভিজ্ঞতায় আসেনি, কিন্তু নিশ্চয় তাঁর অভিজ্ঞতায় আছে। তিনি নিশ্চয় ভয় পেলে ‘রাম রাম’ বলেন। এবং, তাঁর সঙ্গে দেখা হলে যদি দেখি যে তিনি ‘রাম রাম’ বলছেন, তবে আমি আন্দাজ করতে পারব যে তিনি কোনও কারণে একটু ভয় পেয়ে গেছেন!

প্র: আপনার মন্তব্যে যাঁরা অখুশি, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বাংলার সংস্কৃতিতে আপনার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন করছেন। আপনার কাছে বাংলার সংস্কৃতি ঠিক কী?

উ: আমি এ বিষয়ে নিয়ে খুব একটা বড় প্রামাণ্য থিসিস দিয়েছি, সেটা তো বলতে পারছি না। বাংলা ভাষার সঙ্গে যুক্ত, বাংলা আচার-বিচার, আলোচনা— এর মধ্যে যে যোগাযোগ হয়েছে, সেটাকে বাংলা সভ্যতার খানিকটা অংশ বলে ধরা যেতে পারে। কিন্তু এটা তো ছিটকিনি দিয়ে আটকে রাখার বিষয় নয়। কাজেই, তাঁরা যদি এর মধ্যে নতুন কিছু আনতে চান, আমার আপত্তি নেই। অনেকে বলছেন, এই তো আছে রামপুরহাট, আছেন রামকৃষ্ণ— এগুলো তো আলোচনার মধ্যে খুব সহজেই আসতে পারে। কোনও কোনও মহাপুরুষ যে ভিন্ন মতের লোকেদের ‘রাম-ধোলাই’ দেওয়ার কথা ভেবে আনন্দ পান, সেটিও আমাদের অজানা নয়। কিন্তু বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে, সভ্যতার সম্পর্কে আমার কিছু বলার হক আছে কি না, এই প্রশ্নের জবাব দেওয়াটা বোধ হয় আমার পক্ষে কঠিন। এ বিষয়ে নানা সময়ে নানা জিনিস বলার, লেখার সুযোগ আমার হয়েছে। অতএব, হঠাৎ এ বিষয়ে আমি রাজ্যপাল মশাইয়ের কাছ থেকে নতুন করে শিখব, এ রকমটা আশা করতে পারছি না।

প্র: অনেকেই বলছেন, রাজনীতির হাতে সমাজের ধর্মীয় মেরুকরণের কথা উঠলে ১৯৩৭-৪০, এই সময়কালের কথা মনে পড়ে। কৃষক প্রজা পার্টির সঙ্গে সরকার গড়ে মুসলিম লিগ অল্প কিছু দিনের মধ্যে বাঙালি মুসলমানকে তাঁদের অর্থনৈতিক পরিচিতির বদলে রাজনৈতিক পরিচিতিতে চিহ্নিত করতে সম্মত করতে পেরেছিল। এখন বিজেপিও পারছে। আপনি কি দুটোর মধ্যে মিল খুঁজে পাচ্ছেন? মূলত অর্থনৈতিক মিল?

উ: কারণ যে সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক, তা আমি মনে করি না। কিন্তু অর্থনীতির সঙ্গে একটা যোগ আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে কংগ্রেসি রাজনীতিতে যেটা বড় রকম ভুল হয়েছিল, সেটা হচ্ছে ভূমি সংস্কারের দিকে নজর না দেওয়া। এবং, যাঁরা বাঙালি হিন্দুদের রক্ষা করার ভারটা নিলেন, তাঁদেরও কিন্তু প্রধান উৎসাহ ছিল পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি হিন্দুদের নিয়ে। পূর্ববঙ্গের বাঙালি হিন্দুদের যে দেশভাগে বিশেষ একটা সুবিধা হল, সে রকমটা তো বলা যাচ্ছে না। তাঁদের জমি গেল, কলকাতায় বসে তাঁরা কিছু রোজগার করতেন— সেটাও গেল শেষ অবধি। এই জিনিসগুলোর মধ্যে একটা অর্থনৈতিক যোগ আছে, সেটা হচ্ছে ভূমি সংস্কারের যোগ। আমার বাড়ি তো ঢাকায়, এবং আমাদের পরিবারের নিবাস ছাড়া কোনও জমি ছিল না। তাতে অনেক সময়ই আমাদের সমালোচনা শুনতে হয়েছে যে জমিওয়ালা হিন্দুদের প্রতি আমরা তেমন সহানুভূতি দেখাচ্ছি না। সেটা সত্যিও হতে পারে। যে সমস্যাটা ফজলুল হকের হল। বাঙালি হিন্দু-মুসলমানদের একত্র রাজনীতিতে নিয়ে আসার কাজটা কঠিন ছিল। এবং‌ সেই কাঠিন্য কমবে না, যত দিন না হিন্দু জমিদারদের জমিগুলো বাজেয়াপ্ত করা যায়, মুসলমান প্রজাদের ভার লাঘব হয়। সেটা ঘটল ১৯৪৭ সালের পরে। এখন যদি ফজলুল হকের সঙ্গে শেখ মুজিবর রহমানের তুলনায় আমরা আসি, এর মধ্যে দু’টি পার্থক্য আছে। প্রথম হল, শেখ মুজিবের চিন্তাধারার মধ্যে একটা বড় রকম প্রসারতা ছিল, যার জন্য তিনি হিন্দু-মুসলমানকে একসঙ্গে করার কাজে সবেগে এগোতে পেরেছিলেন। ১৯৭০ সালে যখন পাকিস্তানে নির্বাচন হল, আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে সেকুলারিজ়মের— ধর্মনিরপেক্ষতার— প্রতি নজরও ছিল। ফজলুল হক যদিও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি খুব সহানুভূতিশীল ছিলেন, এ রকম সুচিন্তিত ভাবে এগিয়ে যাওয়া তাঁর পক্ষে সহজ ছিল না। আর দ্বিতীয়ত, যখন ফজলুল হক এই নিয়ে যুদ্ধ করছেন, তখন বাঙালি হিন্দুদের উপর মুসলমানদের, মুসলমান চাষিদের ক্ষোভ থাকার একটা বড় রকম অর্থনৈতিক কারণ ছিল। কিন্তু যখন মুজিব এই নিয়ে আলোচনা করেছেন, তখন হিন্দু জমিদারির সেই সমস্যাটি সামনে থেকে সরে গেছে।

প্র: যদি নেহরুতান্ত্রিক উদার ভারত যথেষ্ট অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করত, এবং যদি তার সুষম বণ্টন হত, ফলে লোকের মনে ক্ষোভ না থাকত, তা হলে কি ২০১৪ সালে মানুষ এত সহজে সেই উদারবাদ বিসর্জন দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিকে মেনে নিতেন?

উ: সেটা একটা বড় প্রশ্ন। এই জন্য নয় যে অর্থনৈতিক ভাবে বঞ্চিত হয়ে জনগণ বিজেপিতে গেলেন, কিন্তু তাঁদের আশা তো এটাই ছিল যে একটা বড় রকম পরিবর্তন হবে। তার প্রয়োজনও ছিল। অনৈক্য কমানোরও দরকার ছিল। এই যে আমাদের দেশে নানান লোকের মধ্যে এত পার্থক্য— শেডিউলড কাস্ট, শেডিউলড ট্রাইব— তাঁদের জীবনযাত্রায় যে অভাব তা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা পাওয়ার একটা সুযোগ ২০১৪-তেও ছিল, এখনও আছে। নেহরুবাদী চিন্তাধারার মুশকিল হল, নেহরুর নীতিতে সবার জন্য স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ব্যবস্থা করার কথাটা বলা হলেও তা কখনও প্রধান গুরুত্ব পায়নি। অর্থনীতির ক্ষেত্রে যে ভুলটা বহু দিন থেকে চালু আছে— সেটা এখনও চালু, বিজেপি যে সেটাকে আটকাতে পেরেছে, তা নয়। তবে, সেই ভুলের অজুহাতে লোকের মধ্যে রাজনৈতিক প্রচার করাটা অনেক সহজে সম্ভব হয়েছে। তার সঙ্গে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের হাতে খরচ করার মতো অনেক টাকা, হুকুম দেওয়ার অনেক লোক, কেউ যদি আপত্তি করেন তবে তাঁকে

‘আরবান নকশালাইট’ বলে জেলে পোরার অভ্যাস, অথবা কেউ যদি মন খুলে বক্তৃতা দেন, তা হলে তাঁকে অ্যান্টি-ন্যাশনাল বলে দাগিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা— এ-সব জিনিস বিজেপির শক্তিকে বহু গুণ বাড়িয়ে তুলেছে।

প্র: এই বারের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল অনেকের মনেই একটা সংশয় তৈরি করে দিয়েছে— হিন্দু পরিচিতির প্রতিস্পর্ধী অবস্থান হিসেবে বাঙালি পরিচিতিকে ঘিরে, বাঙালি জাতীয়তাবাদকে ঘিরে কি আদৌ কোনও রাজনীতি সম্ভব? যে তথাকথিত নিম্নবর্ণের মানুষরা হিন্দু নিয়মতন্ত্র থেকে বেরিয়ে নিজেদের সংগঠন তৈরি করেছিলেন, তাঁরাই কিন্তু নিজেদের হিন্দু পরিচিতিকে গুরুত্ব দিয়ে ভোট দিলেন এ বার।

উ: পূর্ববঙ্গে যদি সাম্প্রদায়িকতা দমন করা সম্ভব হয়ে থাকে, পশ্চিমবঙ্গে তা কেন হবে না? তবে এটা ঠিকই যে বর্ণহিন্দু বাঙালিরা অন্য বাঙালিদের আলাদা করে রেখেছিলেন— নিজেদের বাঙালি বলে দাবি করে অন্যদের বাঙালি পরিচিতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে এসেছেন। বর্ণহিন্দু বাঙালিরা মুসলমান, দলিত এবং অন্যদের সমান মর্যাদা দিতে চাননি। বিজেপি নেতৃত্ব তো প্রকৃতপক্ষে কোনও মর্যাদা দিতে চাননি। কিন্তু যখন একটা রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বা যুদ্ধ চলছে, তখন তাঁরা সহজেই এই বিভেদটাকে ব্যবহার করেছেন। এই ব্যবহার করার সুযোগটা বাঙালি সংস্কৃতির, বাঙালি সভ্যতার নানা রকম বিভাজনের সঙ্গে যুক্ত বলে আমার ধারণা।

পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সুস্থতা ও প্রগতির জন্য নানা জিনিস করার প্রয়োজন আছে। তার মধ্যে একটি প্রয়োজন শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠন। নানা জিনিস, যা নিয়ে লেনিন আলোচনা করেছেন, তার মধ্যে রাজনৈতিক সংগঠনের জন্য শক্তিশালী পার্টি থাকা, এই জিনিসটাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়। এই সংগঠন না থাকলে রাজনৈতিক যুদ্ধ করা যায় না। সামরিক যুদ্ধের ক্ষেত্রে যেমন সেনাবাহিনী লাগে, রাজনৈতিক যুদ্ধে তেমনই পার্টি লাগে। এবং সেই পার্টির প্রচণ্ড উৎসাহ থাকা দরকার। এখনকার যাই-যাই অবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। নিজেরাও সত্যি বলে মনে করেন না— এ রকম অবাস্তব কথা অন্যদের বলাটা বন্ধ করা দরকার। বিজেপিকে তাঁরাও যে খুব ভাল মনে করেন তা নয়, কিন্তু বিজেপিকে দিয়ে তৃণমূলকে ধ্বংস করার যে স্বপ্ন— এর মধ্যে চিন্তার সাবলীলতার অভাব আছে। তা বলে তৃণমূলের রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারকে উপেক্ষা করতে হবে, এমন মনে করারও কারণ নেই।

প্র: এই যে ভারতে এখন সর্ব ক্ষণ একটা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা, ভয়ের পরিবেশ রয়েছে, সেটা কি দাঙ্গার চেয়েও বিপজ্জনক?

উ: দাঙ্গার থেকে মারাত্মক আরও বেশি কিছু আছে, তেমনটা বলতে পারছি না। আরও খারাপ কিছু হতে পারে, সেটা অসম্ভব নয়, কিন্তু সে প্রচণ্ড বীভৎসতার কথা আমার পক্ষে ভাবা সহজ নয়। তবে এটা ঠিকই যে দাঙ্গা হচ্ছে না বলে আমাদের খুব খুশি থাকার কারণ আছে, সেটা একেবারেই সত্যি নয়। দাঙ্গা হচ্ছে না, হয়তো হবেও না। কিন্তু কাউকে নির্যাতন করা, কে কী খাচ্ছে না খাচ্ছে সেটা দেখা, এবং তা নিয়ে মারধর করা, তাদের বলা যে এটা করো ওটা করো না, আর না করলেই খুন করে দেওয়া, এর মধ্যে যে একটা বীভৎসতা আছে, সেটা দাঙ্গার সঙ্গে তুলনীয় না হলেও একটা খুবই অসহ্য জিনিস। অসহ্য ব্যবহার সহ্য করা মানবিক সভ্যতার পরিচয় দেয় না।

সাক্ষাৎকার: অমিতাভ গুপ্ত

অন্য বিষয়গুলি:

Amartya Sen Nobel Jai Sri Ram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy