“ভাল, সারি, সত্য বল দেখি, তোমার বিশ্বাস কি? ভূত আছে?”
এ ভাবেই আরম্ভ হয়েছিল সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের ‘নিশীথ রাক্ষসীর কাহিনী’ আখ্যান। পরিমণ্ডল সাহেবি ভাবাপন্ন বাঙালি পরিবারের, যারা সেকালে ছুরি-কাঁটা দিয়ে ‘মেষ মাংসের রোষ্ট’ ভক্ষণ করে। বড় ভাই বরদা কনিষ্ঠ সারদাকে এই প্রশ্ন করার পর ভূত নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে খানিক তর্কাতর্কি চলে এবং বরদা জানায়, সে নিজেই ভূত চাক্ষুষ করেছে। বরদা সারদাকে জিজ্ঞেস করে, সে ভূত দেখতে রাজি আছে কিনা। সারদা জানায়য়, সে ইচ্ছুক। বরদা বলে, “আচ্ছা তবে আহার সমাপ্ত করা যাউক।”
সেই ‘আহার’ আজও সমাপ্ত হয় নাই। এই পর্যন্ত লিখেই বঙ্কিম কলম থামিয়েছিলেন। এই কাহিনি কোন দিকে গড়াত, এই রচনা উপন্যাস হয়ে উঠত নাকি ছোটগল্প হয়েই থেমে থাকত, তা নিয়ে বাংলা সাহিত্যের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ আছে। বঙ্কিম এই লেখা আরম্ভ করেছিলেন ‘প্রথম পরিচ্ছেদ’ হিসেবে। তা দেখে অনেকে মনে করেন, এটি হয়ত ছোট উপন্যাস বা ‘নভেলা’-য় গিয়ে ঠেকত। কিন্তু বঙ্কিম আর না এগোনোয় কেউ স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। আর বরদা সারদাকে ভূত দেখিয়েছিল কিনা, তা-ও জানা যায়নি। কেন বঙ্কিম লেখা অসমাপ্ত রেখেছিলেন, তা জানা যায়নি। সুকুমার সেন তাঁর সম্পাদিত (সহ-সম্পাদক সুভদ্রকুমার সেন) ‘উপছায়া’ নামের বাংলা ভৌতিক গল্পের সংকলনের ভূমিকায় জানিয়েছিলেন, বঙ্কিম অতিলৌকিকে দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলেন। পরে বঙ্কিমের দৌহিত্র দিব্যেন্দুসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বঙ্কিমচন্দ্রের অভিজ্ঞতা’ নামে একটি গল্পে বঙ্কিমের প্রত্যক্ষ ভৌতিক অভিজ্ঞতার বর্ণনার কথা লেখেন। সুকুমার সেন মনে করেন, সেই অভিজ্ঞতাই সাহিত্যসম্রাটকে ‘নিশীথ রাক্ষসীর কাহিনী’ লিখতে অনুপ্রাণিত করেছিল। কিন্তু জীবনে একটিও অতিপ্রাকৃত আখ্যান না-লেখা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট কি শেষ পর্যন্ত বাংলা ভূতের গল্পেরও ভগীরথ হয়ে দাঁড়াতেন? তার জবাব মেলে না।
বিশ্বের সর্বত্র এমন অসমাপ্ত রচনা ছড়িয়ে রয়েছে। কোথাও লেখকের আকস্মিক প্রয়াণের ফলে, কোথাও বা কোনও রহস্যময় কারণে। লেখকের মৃত্যুর পর সে সব রচনা পাঠকের সামনে এসেছে। পাঠক হা-হুতাশ করেছেন। বাংলায় এমন উল্লেখযোগ্য উদাহরণ বঙ্কিমের পর শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যোমকেশ-স্রষ্টা তাঁর জীবনের শেষ কাহিনিটিও ব্যোমকেশকে নিয়েই লিখছিলেন। ‘বিশুপাল বধ’ নামের কাহিনিটি অসমাপ্ত থেকে যায় লেখকের প্রয়াণে। বিশ্বনাথ পাল বা সংক্ষেপে বিশুপাল নামে পরিচিত এক যুবক থিয়েটার অভিনেতার রহস্যমৃত্যুর তদন্তে নামে ব্যোমকেশ। সেই অভিনেতা নিহত হয় মঞ্চে অভিনয়ের সময়েই এক হাতাহাতি লড়াইয়ের দৃশ্যে। দর্শকাসনে ছিল ব্যোমকেশ। ফলে তাকে জড়িয়েই পড়তে হয় রহস্য উদ্ঘাটনে। থিয়েটারের লোকেদের এজাহার নেওয়া অবধি শরদিন্দু লিখে গিয়েছেন।
‘শরদিন্দু অমনিবাস’-এর সম্পাদক প্রতুলচন্দ্র গুপ্ত অমনিবাসের প্রথম দুই খণ্ডের ভূমিকা ‘ব্যোমকেশ, সত্যবতী, সত্যবতীর গাড়ি’-তে জানিয়েছেন, ১৯৭০-এর ফেব্রুয়ারি-মার্চ নাগাদ শরদিন্দু কলকাতায় এসে কিছুদিন ছিলেন। বন্ধু প্রতুলচন্দ্রকে ‘বিশুপাল বধ’ নিয়ে কিছু কথাও তিনি সেই সময় বলেন। কিন্তু কাহিনির পরিণতি জানাননি। ফলে অজানা বিশুপালের হত্যাকারীর নাম। সেই ঘটনার কথা লিখে প্রতুলচন্দ্র লিখেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্রের ‘নিশীথ রাক্ষসীর কাহিনী’-র প্রসঙ্গ। ‘নিশীথ রাক্ষসীর কাহিনী’-তে কথকের নাম ছিল ‘বরদা’। একান্ত বঙ্কিমভক্ত শরদিন্দু কি বঙ্কিমকে মাথায় রেখেই কি সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ সিরিজের সমান্তরালে লিখে যাচ্ছিলেন ‘ভূতান্বেষী’ বরদা সিরিজ? প্রতুলচন্দ্র তার উত্তর দেননি।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘ইছামতী’ উপন্যাসটিকে আরও দীর্ঘ করতে চেয়েছিলেন বলেই কথিত। একই কথা শোনা যায় সতীনাথ ভাদুড়ির ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ সম্পর্কেও। কিন্তু দু’টি উপন্যাসই যে যার মতো করে একটা বৃত্ত সমাপ্ত করেছিল। ফলে তাদের ‘অসমাপ্ত’ বলে দেগে দেওয়া যায় না।
কিন্তু সমস্যা গুরুতর সত্যজিৎ রায়ের ক্ষেত্রে। দু’খানি শঙ্কুকাহিনি অসমাপ্ত রেখে প্রয়াত হন সত্যজিৎ। একটির নাম ‘ইনটেলেকট্রন’ আর দ্বিতীয়টি ‘ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা’। ১৩৯৯ বঙ্গাব্দের শারদীয় ‘আনন্দমেলা’য় প্রকাশিত হয় সে দু’টি। সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায় প্রথম কাহিনির শেষে জানান, ‘উপরে মুদ্রিত অসমাপ্ত গল্পের নামকরণ বাবা করেছিলেন— ‘ইনটেলেকট্রন’। একটি বাঁধানো রুলটানা কাগজের খাতায় খসড়াটি পাওয়া যায়। এটি সম্ভবত ১৯৮৯-এর জুন মাসে লেখা। ওই একই মাসে সত্যজিৎ শেষ করেছিলেন ‘ডাক্তার নন্দীর (মুন্সীর) ডায়রি’ ও ‘গোলাপি মুক্তা রহস্য’। ‘ইনটেলেকট্রন’ পরে সম্পূর্ণ করার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু হয়ে ওঠেনি।’ দ্বিতীয় কাহিনির শেষে আবার সন্দীপ লেখেন, ‘একই আকারের অপর একটি বাঁধানো খাতায় ১৯৯১-এর জুন মাসে লেখা ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনার অসমাপ্ত খসড়াটি পাওয়া গেছে। বাবা গল্পটি মোট তিন বার লেখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু প্রতিবারই তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তৃতীয় অর্থাৎ সর্বশেষ খসড়াটি এখানে প্রকাশ করা হল।’
‘ইনটেলেকট্রন’ শঙ্কু-আবিষ্কৃত একটি বুদ্ধিমাপক যন্ত্র। সেটি আবিষ্কারের পরে শঙ্কুর সঙ্গে দেখা করতে আসেন মাকড়দহ নিবাসী অতিলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষ নকুড়চন্দ্র বিশ্বাস। যন্ত্র দেখে খুশি হয়ে বিদায় নেওয়ার সময়ে তিনি শঙ্কুকে বলে যান, ‘হামবুর্গ যাবার আগে খবরটা দেবেন। আমি সঙ্গে গেলে আপনার মঙ্গল হবে।’ প্রসঙ্গত, হামবুর্গে আবিষ্কারক সম্মেলনে যে শঙ্কু আমন্ত্রণ পেয়েছেন, তা নকুড়বাবুর জানার কথা নয়। কিন্তু হামবুর্গে গেলে শঙ্কুর কী ধরনের বিপদ হত আর তা থেকে নকুড়বাবু কী ভাবে তাঁকে উদ্ধার করতেন, তা আর জানা হয়নি শঙ্কু-প্রেমীদের। ‘ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা’-য় শঙ্কু ৭৫ বছরে পা রেখেছেন। সে দিনই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন এক বছর পঁচিশেকের সাহেব। তিনি শঙ্কুর পূর্বপরিচিত বায়োকেমিস্ট জন ড্রেক্সেলের ছেলে। তিনি জানান, তাঁর বাবা মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণে গিয়ে ১৩ শতকের এক দুষ্প্রাপ্য আরবি পুঁথির সন্ধান পান এবং সেটা পড়ে জানান, ওই পুঁথিতে পৃথিবীর সুন্দরতম জিনিস আবিষ্কারের বর্ণনা আছে। সেটা যে কী, তা বিজ্ঞানী ড্রেক্সেল জানাননি। তা নিয়ে গবেষণা করতে ড্রেক্সেল প্রশান্ত মহাসাগরের এক নির্জন দ্বীপে চলে যান। জোসেফ গ্রিমাল্ডি নামের এক ধনী বায়োকেমিস্ট ড্রেক্সেলের পরীক্ষার খরচ বহন করতে এবং তাঁকে গবেষণায় সাহায্য করতে রাজি হন। তিন মাস পর ছেলের কাছে চিঠি আসে, কোনও ক্রান্তীয় অসুখে হঠাৎ ড্রেক্সেল মারা গিয়েছেন। কিন্তু তাঁর ছেলের ধারণা, তাঁর বাবাকে খুন করা হয়েছে। গবেষণার কৃতিত্ব হাতানোর জন্য খুনটা করেছেন গ্রিমাল্ডি। বিষয়টির তদন্ত করতে শঙ্কু কি যাবেন তাঁর ‘দল’ সহ সেই নির্জন দ্বীপে? শঙ্কু রাজি হয়েছিলেন কি না, সে কথা আর লিখে যাননি সত্যজিৎ।
সে ভাবেই শেষ হয়নি রবিশংকর বলের উপন্যাস ‘কিস্সা বলেন শেহরজাদে’। আরব্য রজনীর কেতায় ছিন্নভিন্ন সাম্প্রতিক পৃথিবীকে নিয়ে চমকে দেওয়া আঙ্গিকে শুরু হয়েছিল সেই উপন্যাস। শেষ করে যেতে পারেননি ‘দোজখনামা’-র লেখক। অতৃপ্তি থেকে যায় নবারুণ ভট্টাচার্যের অসমাপ্ত তথা শেষ উপন্যাস ‘মবলগে নভেল’ নিয়েও। তুমুল জনপ্রিয় ফ্যাতাড়ুদের নিয়ে জমজমাট এই কাহিনি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত। কিন্তু পাঠকরা থই পান না সে সব কাহিনির!
লেখা অসমাপ্ত রেখে পৃথিবী ছেড়ে পাড়ি দেওয়া লেখকের মধ্যে চার্লস ডিকেন্স উল্লেখযোগ্য। ডিকেন্স জীবনের অন্তিম উপন্যাসটিও ছকেছিলেন হত্যারহস্যের ধারাতেই। ‘দ্য মিস্ট্রি অব এডউইন ড্রুড’ নামের সেই উপন্যাস ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হচ্ছিল প্রতিটি কিস্তি আলাদা আলাদা বই আকারে ১ শিলিং দামে ১৮৭০ থেকে ১৮৭১ সালের মধ্যে। ডিকেন্স জানিয়েছিলেন, তিনি ১২ কিস্তিতে উপন্যাস শেষ করবেন। সম্ভবত গোটা দুয়েক কিস্তি তিনি প্রকাশিত দেখে গিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয় বাকি চারটি কিস্তি। কিন্তু শেষ কথা কেউ বলতে পারেননি। ২০০৯ সালে মার্কিন রহস্য-সাহিত্যিক ম্যাথিউ পার্ল ‘দ্য লাস্ট ডিকেন্স’ নামে একটা উপন্যাস লেখেন সেই অসমাপ্ত রচনার সূত্র ধরে। তবে সেটা একেবারেই অন্য কাহিনি। ডিকেন্সের রচনা সেখানে ধরতাই মাত্র।
রহস্য সাহিত্যের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া উপন্যাসত্রয়ী ‘মিলেনিয়াম সিরিজ’-এর লেখক সুইডিশ সাংবাদিক তথা সাহিত্যিক স্টিগ লারসেন তাঁর প্রথম বই ‘দ্য গার্ল উইথ দ্য ড্রাগন ট্যাটু’ দেখে যাননি। লারসেনের মৃত্যুর এক বছর পর সেই বই প্রকাশিত হয়। এর পর বাকি দুই খণ্ড ‘দ্য গার্ল হু প্লেড উইথ ফায়ার’ এবং ‘দ্য গার্ল হু কিকড দ্য হর্নেটস নেস্ট’ প্রকাশিত হয় যথাক্রমে ২০০৬ এবং ২০০৭ সালে। লারসেন নাকি এই সিরিজের ১০টি খণ্ড লিখবেন বলে পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তিনটিতে থেমে যাওয়ায় তা ‘মিলেনিয়াম ট্রিলজি’ নামেই পরিচিত হয়ে রয়েছে। পরে তাঁর প্রকাশক ডেভিড ল্যাগেরক্রানৎজ নামের এক লেখককে দিয়ে আরও চারটি পর্ব লিখিয়েছেন। কিন্তু রসিকরা সেই লিখনকে লারসেনের উচ্চতার বলে মনে করেন না। প্রসঙ্গত, লারসেনের লেখা সেই তিনটি উপন্যাস কিন্তু একটা বৃত্তকে সম্পূর্ণ করেছিল। জানার কোনও উপায় নেই, তিনি বেঁচে থাকলে সেই কাহিনিমালা কোন দিকে এগোত।
শেষমেশ যাঁকে নিয়ে খটকা, তিনি রবীন্দ্রনাথ। বিপুল রচনারাজির মধ্যে কি অসমাপ্ত থেকে গিয়েছে কিছু? বহুকাল ধরে বিশেষজ্ঞরা রবীন্দ্রনাথের প্রথম উপন্যাস ‘করুণা’-কে অসম্পূর্ণ লিখন হিসেবেই জানতেন। ১৮৭৭ থেকে ১৮৭৮ সালের মধ্যে তা ‘ভারতী’ পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। কবির জীবদ্দশায় সেটি বই আকারে বার হয়নি। তাই ১৮৮৩ সালে প্রকাশিত ‘বৌঠাকুরাণীর হাট’-কেই তাঁর প্রথম উপন্যাস হিসবে ধরা হত। কিন্তু রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ তপোব্রত ঘোষ জানাচ্ছেন, আরেক রবীন্দ্র গবেষক জ্যোতির্ময় ঘোষ তাঁর গবেষণাপত্রে প্রমাণ করেছেন, ‘করুণা’ শেষ হয়েছিল ‘ভারতী’ পত্রিকাতেই। তিনি ‘বঙ্গদর্শন’ গোষ্ঠীর লেখক চন্দ্রনাথ বসুর রবীন্দ্রনাথকে লেখা একটি চিঠির কথা তিনি লিখেছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সেই গবেষণাপত্রকে মান্যতা দেয়। ফলে ‘করুণা’-কে অসমাপ্ত লেখা বলা যায় না। তবে তপোব্রত কবির জীবনের একেবারে শেষ পর্যায়ে লেখা তিনটি গল্পের উল্লেখ করেছেন— ‘বদনাম’, ‘প্রগতিসংহার’ আর ‘মুসলমানীর গল্প’। এর মধ্যে প্রথম দু’টি শেষ হয়েছিল বলেই ধরা হয়। কিন্তু তৃতীয়টি কবির রোগশয্যায় বসে মুখে বলে যাওয়া গল্প। শ্রুতিলিখন নিয়েছিলেন কেউ। সে গল্প কি সত্যিই শেষ হয়েছিল? এর উত্তর কারওর জানা নেই।
তপোব্রতের কথায়, “শেষ পুরস্কার নামে একটি গল্পের ‘কাঠামো’ ১৯৪১-এর ৫-৬ মে নাগাদ কল্পিত হয়। ‘গল্পগুচ্ছ’ চতুর্থ খণ্ডের সম্পাদক কানাই সামন্তে সেটিকে সম্পূর্ণ রূপ দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি।’’ সেই ‘কাঠামো’-টি ‘বিশ্বভারতী পত্রিকা’-র ১৩৪৯ বঙ্গাব্দের শ্রাবণ সংখ্যা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। আর ‘মুসলমানীর গল্প’ ১৯৪১-এর ২৪-২৫ জুন নাগাদ তৈরি হয়ে ওঠে। কানাই সামন্ত বলেছেন, ‘‘এই লেখাটি পূর্ণাঙ্গ ছোটগল্প নয়। গল্পের খসড়া মাত্র। এটিই তাঁর শেষ গল্প রচনার চেষ্টা। অনুমান করা যায়, রোগশয্যা থেকে সেরে উঠে সেই খসড়াটিকেও পূর্ণাঙ্গ করে তোলার ইচ্ছে রবীন্দ্রনাথের ছিল। খসড়াটি প্রথম প্রকাশিত হয় ‘ঋতুপত্র’-র ১৩৬২ বঙ্গাব্দের আষাঢ় সংখ্যায়।’’
কিন্তু কবি রোগশয্যা থেকে আর ফিরে আসেননি। খসড়া থেকে পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি ‘মুসলমানীর গল্প’। শেষ নেই সেই মায়াময় কাহিনির। শেষ কথা বলার জন্য রয়ে গিয়েছে কেবল শ্রাবণের অবিরাম ধারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy