উলুবেড়িয়া তখন গ্রাম। একেবারে অজ পাড়া-গাঁ যাকে বলে। আমার আশৈশবের দাপিয়ে বেড়ানোর জায়গা। এখন তাও আধা-শহর হয়েছে। কিন্তু সে সময় উলুবেড়িয়ায় থার্টি ফার্স্ট নাইট কী জানতাম না। নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন তখন ভিনগ্রহের শব্দ। ফলে বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনটাই ছিল আমাদের উত্সবের দিন।
দুর্গাপুজোতে যেমন নতুন জামা হত, পয়লা বৈশাখেও তাই। বছরের প্রথম দিন যা যা করব, সারা বছর তাই তাই হবে— এমন একটা ধারণা ছিল আমাদের। মানে ধরুন, পয়লা বৈশাখে ফুটবল খেললে গোল করতেই হবে। না হলে সারা বছর গোল পাব না। এ দিন সব সত্যি কথা বলতে হবে। না হলে বছরভর মিথ্যেবাদী বদনাম জুটবে আমার— এই সব আর কি। এ দিন সকাল সকাল উঠে পড়তাম। তারপর পড়াশোনা। সারা বছরের কথা মাথায় রেখে বই নিয়ে বসতেই হত। আর ভুল করেও যাতে একটা মিথ্যে কথাও না বলে ফেলি, সেটা খুব মেনটেন করতাম। আমার বাবা রোজ গীতা পড়তেন। পয়লা বৈশাখে বিকেলে ফুটবল পিটিয়ে বাড়ি এসে বাবার পাশে বসে গীতা শোনাটা আমার রুটিনের মধ্যেই পড়ত। সত্যি, উলুবেড়িয়ার মতো একটা জায়গায় জন্মেছিলাম বলে গর্ব হয় আমার।
আরও পড়ুন:শিল্পপথের নিরন্তর পথিক, সব নিয়েই অনন্য সৌমিত্র
এখন তো জীবন থেকে প্রাণটাই বেরিয়ে গিয়েছে। মেকানিক্যাল, মেশিনারি হয়ে গিয়েছে সবটাই। পয়লা বৈশাখ মানে সকলকে মনে করে উইশ করতেই হবে। এই রে, ওকে উইশ করতে ভুলে গেলাম না তো। অথবা উনি উইশ করেছিলেন, তার জবাবটা হয়তো দেওয়া হয়নি— এই টেনশন কাজ করে সারাক্ষণ। এই জীবনটা একদম এনজয় করি না আমি।
সেই ছোট্টবেলার মাটির রাস্তা দিয়ে হাঁটা, টালির চালের স্কুলে পড়াশোনা, বৃষ্টি পড়লে পড়াশোনা বন্ধের ছুতো আর পয়লা বৈশাখে মিথ্যে না বলার সতর্কতা— বড্ড মিস করি আমি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy