রাজার কুমার/ প্রমথেশ বড়ুয়ার জীবনকথা
রবি বসু
৪৯৯.০০
দে’জ পাবলিশিং
তাঁর বিপুল সাহিত্যজ্ঞানকে ফিল্মে প্রয়োগ করেছিলেন। ক্যামেরা-ফ্রেম তৈরি করা থেকে লাইটিং-এর বোধ ছিল তাঁর চমৎকার, বিদেশে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে ক্যামেরার কাজ শিখে এসেছিলেন। দখল ছিল সম্পাদনায়। সঙ্গীতানুরাগী ছিলেন, এবং নিজে ভাল রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতেন বলে ছবিতে পরিস্থিতি অনুযায়ী সঙ্গীত-প্রয়োগেও কুশলী ছিলেন। ‘‘এক কথায় তাঁকে একজন টোটাল ফিল্মমেকার নির্দ্বিধায় বলা যায়।’’— প্রমথেশ বড়ুয়া সম্পর্কে বলেছেন তপন সিংহ, আরও বলেছেন, ‘‘বড়ুয়াকে বিচার করতে হবে তাঁর সময়কালের পরিপ্রেক্ষিতে। তখন টেকনিকের দিক থেকে বাংলা সিনেমা আদিম অবস্থায় ছিল। কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি ছিল না। ওই সীমার মাঝে তাঁকে কাজ করতে হয়েছে, উদ্ভাবন করেছেন মৌলিক প্রতিভাকে সম্বল করে। সেখানেও তিনি যথেষ্ট পরিমাণে আধুনিক ছিলেন।... বড়ুয়া খুব ভালো সংলাপ লিখতেন।’’
এ বইয়ের মূল অবলম্বন প্রমথেশ বড়ুয়ার মৃত্যুর পঁচিশ বছর পর দেশ পত্রিকার বিনোদন সংখ্যায় প্রকাশিত রবি বসুর ‘রাজার কুমার’ রচনাটি। এতদিন পরে সেটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হল। সঙ্গে সংযোজিত হল প্রমথেশ বড়ুয়ার নিজের কিছু লেখা, চিঠিপত্র, এবং তাঁর সম্পর্কে তৎকালীন শিল্পী, কলাকুশলী, চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্টদের প্রতিক্রিয়া ও তাঁকে নিয়ে রচনাদি।
অসমের গৌরীপুর রাজপরিবারে রাজা প্রভাতচন্দ্রের জ্যেষ্ঠপুত্র প্রমথেশ শিকার, গল্ফ, টেনিস, বিলিয়ার্ড সব বিষয়েই দক্ষ ছিলেন। কিন্তু কোনওদিন রাজা হতে চাননি, রয়ে গিয়েছিলেন চিরকাল রাজকুমারই, শিল্পবোধের টানেই তাঁর চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ।
তাঁর কাজকর্মের বিভিন্ন মুহূর্তের চিত্রাবলি, ফিল্মের পোস্টার, বিজ্ঞাপন, রেকর্ডের কভার থেকে তাঁর নিজস্ব লেখালিখি, বা তাঁকে নিয়ে স্মৃতিকথন, তথ্যাদি, বিশ্লেষণে ভরপুর এই বইটি বডুয়াসাহেবকে সামগ্রিক ভাবে বোঝার সুযোগ এনে দিয়েছে পাঠককে। এক দিকে তাঁর মন ও মনন, অন্য দিকে তাঁর ভাবনার প্রয়োগ, এ-দুইয়ে মিলে ভারতীয় ছবিতে তাঁর স্থানটিও চিনিয়ে দেয় এ-বই।
‘বঙ্গশ্রী’ পত্রিকার পরিচয় এবং রচনাপঞ্জি
সম্পাদক: ইন্দিরা সমদ্দার
৪৫০.০০
সোপান
মৃত্যুর পর তাঁর শেষ রচনাটি (ইংরেজিতে লেখা, ৫.৬.১৯৪৯-এ অমৃতবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত) অনূদিত হয়ে প্রকাশ পায় চিত্রবাণী পত্রিকায়, ‘আমাদের গলদ কোথায়’ শিরোনামে। তাতে বাংলা ছবির সঙ্কটের গোড়া ধরে টান দিয়েছেন বড়ুয়াসাহেব, পড়তে-পড়তে টের পাওয়া যায় আজও কী অসম্ভব প্রাসঙ্গিক তাঁর বিশ্লেষণ।
চন্দ্রশেখর মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত মাসিকপত্র ‘উপাসনা’ ১৩১১ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়। বিশিষ্ট বাঙালি শিল্পোদ্যোগী সচ্চিদানন্দ ভট্টাচার্যের হাতে এই পত্রিকার স্বত্ব আসার পর তিনি নাম পাল্টে নতুন পত্রিকা ‘বঙ্গশ্রী’ প্রকাশ করলেন, সম্পাদক পদে নিয়ে এলেন সজনীকান্ত দাসকে। ১৩৩৯ বঙ্গাব্দের মাঘ মাসে ‘বঙ্গশ্রী’র সূচনা। সজনীকান্ত দায়িত্বে ছিলেন দু’বছর। সচ্চিদানন্দের সঙ্গে মতভেদের জেরে তিনি ইস্তফা দেন। তবে পত্রিকা চলেছিল ১৩৬১ পর্যন্ত। বহু আকর্ষণীয় বিভাগ চালু করেন সজনীকান্ত— বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ‘বিচিত্র জগৎ’, গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্যের ‘বিজ্ঞান জগৎ’, নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়ের ‘চতুষ্পাঠী’, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ‘অন্তঃপুর’ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। লিখেছেন তারাশঙ্কর, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, যদুনাথ সরকার, আরও অনেকে। সযত্নে পত্রিকার পরিচিতি এবং রচনাপঞ্জি তৈরি হয়েছে। এই উদ্যোগের জোরে ‘বঙ্গশ্রী’র মতো গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকা উঠে এল বিস্মৃতির অন্ধকার থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy