১৯৮০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান পোলিশ কবি চেস্লাভ মিয়োশ। আগের ত্রিশ বছর, যখন তিনি ফ্রান্স ও আমেরিকার রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন, তখন মাতৃভূমিতে তাঁর লেখার উপর ছিল সরকারি নিষেধাজ্ঞা। আধুনিক পোলিশ কবিতায় রোম্যান্টিক আন্দোলনের প্রভাব ছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও তা প্রাচীনতার মান্য রূপসজ্জায়, ইঙ্গিতে-ইঙ্গিতে তৎকালীন সমাজ ও রাজনীতির কথা বলত। মিয়োশ ছিলেন পুরোপুরি নিষিদ্ধ, নামোল্লেখও বারণ ছিল (বলা হত ‘পরিত্রাণের রচয়িতা’), কিন্তু স্বাধীনতাপ্রিয় ও দখলদার-বিরোধী পোলিশ পাঠকের মধ্যে গোপনে ঘুরে বেড়াত তাঁর কবিতা, দারুণ জনপ্রিয়ও হয়েছিল। ১৯৮২-তে মিয়োশের প্রথম বাংলা অনুবাদ করেন মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ৪৪টি কবিতা অনুবাদ করেন, এবং দেশান্তরী কবিকে নিয়ে একটি প্রবন্ধ লেখেন।
কামিল শেৎচিন্স্কির জন্ম মিয়োশের দেশে, কিছু দিন পড়াশোনা ভারতে, মানবেন্দ্রবাবুর পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগে— যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যে। পোল্যান্ড থেকে বাংলা ও সংস্কৃতে স্নাতক হওয়ার পর বিশ্বভারতীতে পড়েছেন, তার পর তুলনামূলক সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। এ বইয়ে মিয়োশের জীবন ও কবিতা নিয়ে কামিলের গভীর অধ্যয়নের ছাপ আছে, আছে বাংলা ভাষায় দখলের পরিচয়। মাত্র কয়েক বছরের পড়াশোনায় সর্বার্থেই দূরবর্তী এক ভাষায় এমন দক্ষতা অর্জন— অজস্র জটিল বাক্য ও অপ্রচলিত শব্দের প্রয়োগ— প্রশংসার দাবি রাখে। ভারতীয় দর্শনে কামিলের দখলও স্পষ্ট হয় এই অনুবাদে ও ভাবনায়।
চেস্লাভ মিয়োশের কবিতা
অনু: কামিল শেৎচিন্স্কি
২৫০.০০
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা
সিল্কের শাড়ি পরলে তাতে পিন আটকে নেওয়া ভাল, লেখিকা জানিয়েছেন, এ কথাটি তিনি বহু মূল্যে শিখেছিলেন। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন-এ এম এ কোর্সে ভর্তি হতে গিয়েছেন, পরনে সিল্কের শাড়ি। ইন্টারভিউয়ের জন্য নাম ডাকা হতেই লাফিয়ে উঠে এগোতে যাবেন, শাড়ির কোঁচায় পা আটকে কোঁচাটি গেল খুলে। সেটা কোনও মতে হাতে ধরে প্রশ্নের উত্তর দিলেন, বা বলা ভাল, জানা প্রশ্নেরও উত্তর দিতে পারলেন না। ফলে, এম এ কোর্সে নাম উঠল না, পড়তে হল বি এ অনার্স। বইয়ের ছত্রে ছত্রে নিজেকে নিয়ে হাসার এমন বহু উদাহরণ, যা এই আত্মজীবনীকে অতি সুখপাঠ্য করে।
সারা জীবন বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থেকেছেন কৃষ্ণা। তাঁর সেই পরিচয় বইয়ে যথেষ্ট আছে। কিন্তু, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ একটা অন্য ছবি— কয়েক দশক আগেও এই শহরের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিমণ্ডলটা কেমন ছিল, তার ছবি। অবশ্য, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, একই সঙ্গে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আর দেবব্রত বিশ্বাস, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গ পাওয়া শিক্ষিত লোকমাত্রেই সম্ভব ছিল না। এই বইয়ে তাঁদের কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ধরা পড়েছে। আবার এমন মানুষের কথাও আছে, যাঁরা সর্বসাধারণের কাছে ততখানি পরিচিত নন, কিন্তু অসামান্য। যাদবপুরের ইংরেজির অধ্যাপক, অকালপ্রয়াত রণজয় কার্লেকর যেমন। তাঁর গ্রেফতার হওয়ার গল্পটা মোক্ষম। কৃষ্ণার স্বামী ডাক্তার প্রভাত বন্দ্যোপাধ্যায়ও তেমনই এক জন।
অ্যালাইভ
কৃষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়
৭৫০.০০
সাইবার গ্রাফিক্স
ভূ-বিজ্ঞানীরা বলেন, ছোটনাগপুর মালভূমির বয়স হিমালয়ের চেয়েও অনেক বেশি, আর পশ্চিমে সেই মালভূমির শেষ বিস্তারস্থল ঝাড়গ্রাম। জঙ্গলে ঘেরা পাথুরে এলাকা ছিল অস্ট্রো-এশিয়াটিক নৃগোষ্ঠীর মানুষের ধাত্রীভূমি। একে একে সেখানে পৌঁছেছেন আর্য, জৈন, বৌদ্ধ, বৈষ্ণব-সহ নানা ধর্মগোষ্ঠীর মানুষ। তাঁরা প্রভাবও বিস্তার করেছেন, কিন্তু কখনওই জনজাতির মানুষের ধর্ম-সংস্কৃতি-লোকাচার মুছে যায়নি। এ ভাবে কালে কালে নানা ধর্ম-সংস্কৃতির ছাপ ক্রমশ সমৃদ্ধ করে তুলেছে এই অঞ্চলকে। গ্রন্থের দুই লেখকই ঝাড়গ্রামের মানুষ। জেলার লোকসংস্কৃতি চর্চায় বহু দিন নিবিষ্ট সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ক্ষেত্রসমীক্ষা করে ঝাড়গ্রাম জেলার জ্ঞাত-অজ্ঞাত সমস্ত প্রত্নসম্পদ তুলে ধরেছেন তাঁরা। চিল্কিগড়ের রাজবাড়ি বা কনকদুর্গার মন্দিরের মতো পরিচিত স্থানের পাশাপাশি জানা যায় ডাইনটিকরির ডাইনিমন্দিরের ইতিহাসও। এ ভাবেই ব্লক ধরে ধরে বেছে নেওয়া হয়েছে কিছু পুরাতাত্ত্বিক স্থান। বর্ণনার সঙ্গে প্রচুর রঙিন ছবি আগ্রহ আরও উস্কে দেয়।
ঝাড়গ্রাম জেলা প্রত্ন-পরিক্রমা
সুব্রতকুমার মুখোপাধ্যায়, সুশীলকুমার বর্মন
৩০০.০০
মনফকিরা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy