জন্মদ্বিশতবর্ষের সমাপন হয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে, তবু উদ্যাপন চলছেই। তার মধ্যেই আর একটি সুসংবাদ এল। বিদ্যাসাগরের উপর ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত একটি বিদগ্ধ বিশ্লেষণ-গ্রন্থ অনেক দিন অপ্রাপ্য ছিল, নতুন অবয়বে তা পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে। ব্রায়ান হ্যাচার-এর বইটি যে কোনও বিদ্যাসাগর-পাঠক ও গবেষকের কাছে অত্যন্ত জরুরি। তাঁদের জেনে রাখা দরকার, নতুন বইটিতে কেবল নতুন কিছু টীকা, নতুন ভূমিকা নেই, সঙ্গে আছে যুক্তিপ্রবাহেও কিছু পরিশোধন, পরিবর্তন।
বিদ্যাসাগরের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে বড় কতগুলি সঙ্কটের মধ্যে একটি ছিল, তাঁর সংস্কারের শ্রেণিচরিত্র। কত দূর এগোতে পেরেছিল তাঁর শিক্ষা-সংস্কার, এ নিয়ে গবেষকদের মধ্যে তর্ক অনেক। হ্যাচার দেখিয়েছেন, এক দিকে যেমন দেশীয় ভাষাশিক্ষা অনেক দূর এগিয়ে যায় বিদ্যাসাগরের সৌজন্যে, তেমনই সংস্কৃত-নির্ভর ভাষা এবং সাধুভাষার কারণে সেই শিক্ষাচৌহদ্দির একটি সীমাও নির্ধারিত হয়ে যায়।সুতরাং কোনও একমাত্রিক শ্রেণিবিশ্লেষণে তাঁকে ধরা কঠিন। আবার ভদ্রলোক-সাবঅলটার্ন দ্বৈতের মধ্যেও তাঁকে ধরা কঠিন। ব্রাহ্মণ পণ্ডিতরা হিন্দুধর্মের শাস্ত্রীয় অধিকারে মণ্ডিত হলেও সামাজিক অবস্থানের দিক দিয়ে শেষ-উনিশ শতকে যথেষ্ট বিপন্ন হয়ে পড়ছিলেন। বিদ্যাসাগরের বিশ্লেষণ করতে চাইলে এই জটিলতা এড়িয়ে চলারও উপায় নেই। হ্যাচারের ভাষায়, ‘হোমোজেনাইজ়িং স্প্রেড অব আ গ্লোবাল মডার্নিস্ট কালচার’-এর ভাবনা থেকে সরে গিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।
বিদ্যাসাগরের টেক্সট-বিশ্লেষণের মাধ্যমে উনিশ শতকের বাংলা, এবং হিন্দু সমাজের বৃহত্তর পট-পরিবর্তনের এই ইতিহাস গবেষণা দিয়ে বিদ্যাসাগর-চর্চার ধারাটিকে অনেক সমৃদ্ধ করেছিল ব্রায়ান হ্যাচারের প্রথম বইটি। আরও এক বার তা ফিরে পড়ার সুযোগ হল নতুন সংস্করণের সুলভতার কারণে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy