ছবি: সংগৃহীত।
গোটা বিশ্বে কুইনাইনের চাহিদা বছরে ৫০০০-৬০০০ টন। ভারতের তা মেটাতে আফ্রিকার কয়েকটি দেশ থেকে কেন্দ্রকে পণ্যটি আমদানি করতে হয়। দেশে কোভিড-পর্বে চাহিদা আরও বেড়েছে ওষুধ তৈরির স্বার্থে। অথচ এ রাজ্যেই কুইনাইনের উৎস সিঙ্কোনা গাছের সম্ভার রয়েছে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়। যা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল কার্যত নজরের বাইরে। সম্প্রতি সুনির্দিষ্ট নীতির ভিত্তিতে দার্জিলিং-কালিম্পঙে সিঙ্কোনা চাষে জোর দেওয়া কথা জানাল রাজ্য। উদ্যানপালন এবং খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ দফতরের তত্ত্বাবধানে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে এই গাছের গুণ বিচার করে, মাটি পরীক্ষা করে সেই কাজ হবে। শুধু সিঙ্কোনাই নয়, অন্য ঔষধি গাছের পরিকল্পিত চাষে বাণিজ্যিক লাভ এবং স্থানীয়দের আর্থ-সামাজিক উত্তরণের আশা করছে দফতর। বুধবার এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করে টিসু কালচার সংস্থা পল্লিশ্রীর সঙ্গে সমঝোতাপত্র সাক্ষর করেছে দফতর।
১৮৬২ সালে দার্জিলিঙে সিঙ্কোনার চাষ শুরু হয়। পরে হয় নীলগিরিতে। কালক্রমে নীলগিরির চাষ বন্ধ হলেও, তা বহাল পাহাড়ে। বাকি চাষ হয় ইন্দোনেশিয়া, পেরু, কঙ্গোর মতো দেশে। কিন্তু এত দিন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না-থাকায় রাজ্যে এই চাষ বাণিজ্যিক চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বাণিজ্যিক লাভ পেতে গেলে একটি সিঙ্কোনা গাছের ছালে ৫ শতাংশের বেশি কুইনাইন থাকতে হয়। এখানকার কিছু গাছে তা নির্ধারিত মানে থাকলেও, বাকিগুলিতে সেই উপস্থিতি ২%-৩%।
দফতরের মন্ত্রী সুব্রত সাহার কথায়, “(এই চাষে) সব ধরনের সাহায্য করবে সরকার।” দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সুব্রত গুপ্ত বলেন, “পরিকল্পনা করে ও প্রস্তুতি নিয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন বাণিজ্যিক ভাবে লাভ হবে, তেমনই স্থানীয় মানুষ এবং এলাকার আর্থ-সামাজিক ছবির উন্নতি হবে।”
নতুন নীতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহযোগী একটি সংস্থাকে দিয়ে এই চাষের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হয়েছে। এখন প্রায় ২ লক্ষ গাছের কুইনাইন উপাদানের সমীক্ষা করছে বিধানচন্দ্র কৃষি, উত্তরবঙ্গ কৃষি এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি, টিসু কালচারের প্রক্রিয়াও চলছে সমান্তরালে। ৪-৮ বছরের যে গাছগুলিতে উপযুক্ত মানে কুইনাইন পাওয়া যাবে, সেগুলি রেখে বাকিগুলির জায়গায় উন্নত মানের সিঙ্কোনা গাছ বসানো হবে।
এ ছাড়াও, ক্যানসারের ওষুধে ব্যবহৃত যৌগের উপযোগী গাছ, চিরতা-সহ একাধিক ঔষধি গাছের চাষের পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাহাড়ের ২৬,০০০ একর জমিতে সমীক্ষা হবে। এর মধ্যে ১০,০০০ একর জমিতে চরিত্র নির্ধারণের সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy