কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী চৌধুরী বীরেন্দ্র সিংহ দুর্গাপুরে এসে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের (এএসপি) বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন, দাবি দুর্গাপুরের শ্রমিক নেতৃত্বের। বুধবার দিল্লিতে শ্রমিক নেতৃত্ব, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ইস্পাতমন্ত্রী। বৈঠক শেষে দুর্গাপুরে এসে শ্রমিক নেতৃত্ব ওই দাবি করেন। আরও দাবি, কারখানার কৌশলগত বিলগ্নিকরণ রুখতে বেশ কিছু বিষয় ইস্পাতমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।
দিল্লিতে উদ্যোগ ভবনে ইস্পাত মন্ত্রকের সভাঘরে আয়োজিত বৈঠকে সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, বিএমস-সহ সবকটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন যোগ দেয়। ছিলেন ইস্পাত সচিবও। বৈঠক প্রসঙ্গে সিটু-র জেলা সভাপতি বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কারখানার কর্মী সংখ্যা নির্দিষ্ট সংখ্যার অর্ধেক হওয়ার পরেও উৎপাদন মার খায়নি। লোকসানও কমছে। এ সবই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলা হয়েছে।’’ তা ছাড়া, আগামীতে রেল-সহ নানা জায়গায় বিশেষ ধরনের ইস্পাতের চাহিদা বাড়বে। ফলে কদর বাড়তে পারে এই কারখানার উৎপাদিত পণ্যেরও। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে কারখানার হাল ফেরানো যায় সে বিষয়েও মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে বলে জানান শ্রমিক নেতারা।
বিনয়েন্দ্রকিশোরবাবুর দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী দুর্গাপুরে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’’ শুক্রবার পুরুলিয়ার বলরামপুরে যাওয়ার পথে অণ্ডাল বিমানবন্দরে বাবুলও বলেন, ‘‘এএসপি-র উৎপাদনক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার হয়নি। বিলগ্নিকরণের প্রস্তাব থেকে বার করে কী ভাবে পুনরুজ্জীবিত করা যায় তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘বৈঠকের পরেও ইস্পাতমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে আরও কিছুক্ষণ কথা হয়েছে। বৈঠকে ইতিবাচক ইঙ্গিত মিলেছে।’’
২০১৬ সালে কারখানার বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে ক্যাবিনেট কমিটি অন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স। এর প্রতিবাদে নানা সময়ে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি আন্দোলনে নামে। আর্জি জানানো হয় ইস্পাতমন্ত্রীর কাছেও। আলাদা ভাবে আন্দোলনে নামে আইএনটিটিইউসি, তৃণমূলও।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণের জন্য ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ ডাকার জন্য বিজ্ঞাপন দেয়। এর প্রতিবাদে কারখানা গেটে অবস্থান শুরু করে আইএনটিটিইউসি। তৃণমূলের সাংসদেরা কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। অন্য দিকে সিটু ও আইএনটিইউসি নেতারা এলাকার সাংসদ ও বিধায়কদের চিঠি দিয়ে পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানান। তবে বিজেপি-র সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ও সিপিএমের বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় বাদে কারও কাছে সাড়া মেলেনি বলে দাবি শ্রমিক নেতৃত্বের।
গত ১১ মার্চ এলাকার শ্রমিক নেতৃত্বের সঙ্গে কাঁকসার বাঁশকোপার একটি হোটেলে বাবুলের কথা হয়। তখনই প্রয়োজনে দিল্লিতে শ্রমিক নেতৃত্বকে নিয়ে গিয়ে বৈঠকের কথা জানান বাবুল। বুধবার বৈঠকের পরে কারখানার ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁরা আশাবাদী বলে জানান আইএনটিইউসি জেলা সভাপতি বিকাশ ঘটক, বিএমএস নেতা অরূপ রায়, এআইটিইউসি নেতা বিপ্লব দত্তেরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy